জনসন অ্যান্ড জনসনের করোনাভাইরাস প্রতিরোধী টিকা নিয়ে সতর্কতা জারি করেছে যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য ও ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থা এফডিএ।
সংস্থাটি জানিয়েছে, এ টিকা গ্রহণে মস্তিষ্কে বিরল এক ধরনের জটিলতার ঝুঁকি বাড়তে পারে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে জানানো হয়, করোনা প্রতিরোধে এক ডোজের টিকাটি নেয়ার ছয় সপ্তাহ পর স্নায়বিক রোগ গিইয়ান ব্যাহরে সিনড্রোমে (জিবিএস) আক্রান্ত হওয়ার তথ্য পেয়েছে এফডিএ। যদিও এ সংখ্যা খুবই কম।
জনসন অ্যান্ড জনসনকে দেয়া চিঠিতে এফডিএ জানিয়েছে, প্রতিষ্ঠানটির গবেষণালব্ধ টিকা নেয়ার পর বিরল জিবিএসে আক্রান্ত হওয়ার হার খুবই কম।
কিন্তু তাও টিকাটি নেয়া ব্যক্তিদের মধ্যে দুর্বলতা বা হাতে-পায়ে ঝিঁঝিঁ ধরার অনুভূতি হলে তাদের দ্রুত চিকিৎসকদের শরণাপন্ন হওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। সম্ভাব্য উপসর্গের তালিকায় আরও আছে হাঁটতে কিংবা মুখভঙ্গিতে অসুবিধা বোধ করা।
যুক্তরাষ্ট্রে জনসন অ্যান্ড জনসনের টিকা নেয়া মানুষের সংখ্যা এক কোটি ৩০ লাখের কাছাকাছি।
এফডিএ জানিয়েছে, এর মধ্যে টিকা নেয়ার পর ১০০ জন জিবিএসে আক্রান্ত হয়েছেন বলে খবর মিলেছে। এদের মধ্যে ৯৫ জনই গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। একজনের মৃত্যুও হয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থার সঙ্গে আলোচনা চলছে বলে জানিয়েছে জনসন।
জিবিএসে আক্রান্ত হলে দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হয়ে যায়। স্নায়ুতন্ত্রের সুরক্ষা আবরণে আঘাতের ফলে এমনটা ঘটে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এরপরে দেহে নানা রকম ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ ঘটে।
তবে জিবিএসে আক্রান্ত হওয়ার পর বেশিরভাগ মানুষই সেরে ওঠেন।
অতীতেও ১৯৭৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রে সোয়াইন ফ্লু এবং ২০০৯ সালে এইচওয়ানএনওয়ান ফ্লু মহামারির সময়ে গণটিকাদান কার্যক্রমের সঙ্গে জিবিএসের যোগসূত্র পাওয়া গিয়েছিল।
যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্র (সিডিসি) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, জিবিএসে আক্রান্তদের বেশিরভাগই পুরুষ ও পঞ্চাশোর্ধ্ব।
এর আগে ফাইজার-বায়োএনটেক ও মডার্নার করোনাভাইরাস প্রতিরোধী টিকা নেয়ার পর হৃৎপিণ্ডের জটিলতাবিষয়ক সতর্কতা জারি হয় যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপে।
মলিকিউলার রাইবোনিউক্লিক অ্যাসিড বা এমআরএনএ প্রযুক্তিনির্ভর টিকা দুটি নেয়া ইউরোপের ২০ কোটি মানুষের মধ্যে তিন শতাধিক বিরল মায়োকার্ডিটিস বা পেরিকার্ডিটিসে আক্রান্ত হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে ইউরোপের ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থা ইউরোপিয়ান মেডিসিন্স এজেন্সি (ইএমএ)।
এদের মধ্যে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে ইএমএ। তারা সবাই প্রবীণ ও আগে থেকেই বিভিন্ন স্বাস্থ্য জটিলতায় ভুগছিলেন।
তবে টিকার এসব পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ‘অত্যন্ত বিরল’ বলে মত বিভিন্ন দেশের ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থা ও স্বাস্থ্যবিদদের। ফলে ঝুঁকি বিবেচনায় করোনার টিকা না নেয়ার সুযোগ নেই বলে জানিয়েছে সংস্থাগুলো।