আমদানি ও যৌথ উৎপাদনের ভবিষ্যত ও গতি-প্রকৃতি বিবেচনায় দেশের ৮০ শতাংশ নাগরিককে করোনা টিকা দিতে ২০২৪ সাল লেগে যেতে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি।
দেশের মোট জনসংখ্যার ৮০ ভাগকে টিকা দিতে চায় সরকার। সে হিসেবে ১৩ কোটি মানুষকে টিকা দিতে ২৬ কোটি ডোজ টিকার প্রয়োজন হবে। প্রতিমাসে ৫০ লাখ ডোজ টিকা আমদানি বা যৌথ উৎপাদন করা হলে এই পরিমাণ টিকা পেতে চার বছরের বেশি সময় লেগে যাবে বলে আশঙ্কা সংসদীয় কমিটির।
কমিটির বৈঠকে ভ্যাকসিন আমদানির সার্বিক প্রক্রিয়া নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করা হয়।
যদিও বৈঠকে ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউটের অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি ‘কোভিশিল্ড টিকা সেপ্টেম্বরে আসার সম্ভাবনার কথা জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
রোববার জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে ভ্যাকসিন কার্যক্রমে গতি আনার সুপারিশ করা হয়।
কমিটির সভাপতি ফারুক খানের সভাপতিত্বে বৈঠকে সদস্য পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম, নুরুল ইসলাম নাহিদ, গোলাম ফারুক খন্দকার প্রিন্স, আব্দুল মজিদ খান, মো. হাবিবে মিল্লাত ও নিজাম উদ্দিন জলিল (জন) এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
দেশের ৮০ শতাংশ নাগরিককে করোনা টিকা দিতে ২০২৪ সাল লেগে যেতে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। ফাইল ছবি
বৈঠক শেষে কমিটির সভাপতি ফারুক খান সাংবাদিকদের বলেন, ‘ভ্যাকসিনের এখনকার গতি নিয়ে সন্তুষ্টির কিছু নেই। ভ্যাকসিন আনার অগ্রগতি নিয়ে আমরা আগেই অসন্তোষ প্রকাশ করেছি। যেরকম আমরা জেনেছি, প্রতিমাসে গড়ে ৫০ লাখের মতো ভ্যাকসিন আসতে পারে। সেই হিসেবে ১২ থেকে ১৩ কোটি মানুষের জন্য ২৬ কোটি ডোজ লাগবে। তাহলে দেশের বেশিরভাগ মানুষকে ভ্যাকসিনের আওতায় আনতে ২০২৪ সাল লেগে যাবে।’
ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট থেকে কবে নাগাদ ভ্যাকসিন আসতে পারে, সে বিষয়ে সংসদীয় কমিটির বৈঠকে আলোচনা হয়েছে কি না জানতে চাইলে ফারুক খান বলেন, ‘ভারতের সিরামের সঙ্গে আমাদের যে চুক্তি হয়েছে সেই চুক্তির আওতায় আগামী সেপ্টেম্বরে তারা আমাদের ভ্যাকসিন পাঠাতে চেয়েছে।’
গত মে মাসে সংসদীয় কমিটির বৈঠকে ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউটের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়ার কথা হয়েছিল। বিষয়টি রোববারের বৈঠকে আলোচনা হয়েছে কি না জানতে চাইলে ফারুক খান বলেন, ‘মন্ত্রণালয় আমাদের জানিয়েছে, ভারত এবিষয়ে দুঃখ প্রকাশ করেছে।’
গণটিকাদান কার্যক্রম উদ্বোধন
রাজধানীর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে গত ২৭ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণটিকাদান কার্যক্রম উদ্বোধন করেন। ওই দিন প্রথম টিকা নেন হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স রুনু ভেরোনিকা কস্তা।
অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা কোভিশিল্ড দিয়ে দেশে শুরু হয় গণটিকাদান। ভারতের প্রতিষ্ঠান সিরাম ইনস্টিটিউট থেকে এ টিকা কিনেছে বাংলাদেশ।
চুক্তি অনুযায়ী, ভারত থেকে তিন কোটি ৪০ লাখ টিকা পাওয়ার কথা ছিল বাংলাদেশের। কিন্তু সিরাম এখন পর্যন্ত টিকা সরবরাহ করেছে ৭০ লাখ।
ভারতে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে টিকা স্বল্পতার কথা জানিয়ে রপ্তানি বন্ধ রেখেছে সিরাম। এমন বাস্তবতায় চীন, রাশিয়ার টিকা আমদানির উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ।