করোনা ও উপসর্গ নিয়ে চার জেলায় এক দিনে ৬৪ জন মারা গেছেন। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি মারা গেছেন রাজশাহী মেডিক্যাল হাসপাতালে ১৯ জন। আর কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ১৭ জন, ময়মনসিংহ ও খুলনায় ১৪ জন করে মারা গেছেন।
রাজশাহী
রাজশাহী মেডিক্যাল হাসপাতালে করোনা ও উপসর্গ নিয়ে এক দিনে ১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে।
শনিবার সকাল ৮টা থেকে রোববার সকাল ৮টার মধ্যে তাদের মৃত্যু হয়। এর আগে শুক্রবার এখানে ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছিল।
রামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী জানান, মৃতদের মধ্যে করোনা আক্রান্ত হয়ে ৬ জন ও উপসর্গে ১৩ জন মারা গেছেন। এর মধ্যে ২ জনের নমুনা পরীক্ষায় করোনা নেগেটিভ এসেছিল।
গত ২৪ ঘণ্টায় রামেক হাসপাতালে মারা যাওয়া ১৯ জনের মধ্যে রাজশাহীর ৯ জন, নাটোরের ৬ জন, পাবনা ১ জন, নওগাঁ ২ জন ও কুষ্টিয়ার একজন আছেন। মৃতদের মধ্যে ৯ জন নারী এবং ১০ জন পুরুষ।
বয়স বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ১৯ জনের মধ্যে ৯ জনই ষাটোর্ধ্ব, ৭জন পঞ্চাশোর্ধ, ১ জন চল্লিশোর্ধ্ব এবং ২ জনের বয়স ৩০ এর নিচে।
গত ২৪ ঘণ্টায় রামেকের করোনা ইউনিটে নতুন ভর্তি হয়েছেন ৭৪ জন। আর এ সময় হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন ৬১ জন। বর্তমানে রামেক হাসপাতালে ৪৫৪টি করোনা ডেডিকেটেড শয্যার বিপরীতে রোগী ভর্তি আছেন ৫১৮ জন।
কুষ্টিয়া
জেলা সদর হাসপাতালের করোনা ইউনিটে শনিবার সকাল ৮টা থেকে রোববার সকাল ৮টা পর্যন্ত আরও ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে।
হাসপাতালের উপপরিচালক আবদুল মোমেন জানান, মৃতদের মধ্যে ১৩ জন করোনা আক্রান্ত ছিলেন। বাকি ৪ জনের মৃত্যু হয় উপর্সগ নিয়ে।
জেলায় গত ২৪ ঘণ্টায় ৮৯২টি নমুনা পরীক্ষা করে ২৪৫ জনের দেহে করোনা শনাক্ত হয়।
শনাক্তের হার ২৭ দশমিক ৪৪ শতাংশ। এ পর্যন্ত জেলায় আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ালো ১০ হাজার ৩০৫ জনে।
ময়মনসিংহ
ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ২৪ ঘণ্টায় ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ৩ জন করোনা শনাক্ত হয়ে ও বাকিরা উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন।
হাসপাতালের করোনা ইউনিটের আবাসিক অফিসার (ফোকাল পার্সন) মহিউদ্দিন খান মুন রোববার সকাল সাড়ে ৯টায় নিউজবাংলাকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘বর্তমানে করোনা ইউনিটে ৪২৯ জন চিকিৎসা নিচ্ছেন। এর মধ্যে আইসিইউতে ভর্তি আছেন ২২ জন। নতুন করে ভর্তি হয়েছেন ৯৮ জন। এই সময়ের মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ৪৭ জন।
সিভিল সার্জন নজরুল ইসলাম জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ৯৯৩টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এর মধ্যে ২৮২ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। জেলায় আক্রান্তের হার ২৯ দশমিক ৪০ শতাংশ।
খুলনা
জেলায় তিন হাসপাতালে এক দিনে ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে খুলনা করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালে ৮ জন, জেলা জেনারেল হাসপাতালে ৪ জন, গাজী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ২ জন। তবে আবু নাসের হাসপাতালে মৃত্যু নেই।
শনিবার সকাল ৮ টা থেকে রোববার সকাল ৮ টা পর্যন্ত হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তারা মারা যান।
ডেডিকেটেড হাসপাতালের আবাসিক কর্মকর্তা (ফোকাল পারসন) সুহাস রঞ্জন হালদার জানান, এ হাসপাতালে মৃতদের মধ্যে করোনা নিয়ে ৬ ও উপসর্গ নিয়ে ২ জন মারা গেছেন। শনাক্ত হয়ে মৃতদের মধ্যে খুলনার ৫ জন ও যশোরের ১ জন।
এ ছাড়া এ হাসপাতালে ১৯৩ জন রোগী ভর্তি রয়েছেন। যার মধ্যে রেড জোনে ১২১ জন, ইয়ালো জোনে ৩৬ জন, এইচডিইউতে ১৭ ও আইসিইউতে ১৯ জন। নতুন রোগী ভর্তি হয়েছেন ৩৭ জন। সুস্থ হয়েছেন ৩২ জন।
গাজী মেডিক্যালের স্বত্বাধিকারী গাজী মিজানুর রহমান জানান, এই হাসপাতালে খুলনা ও যশোরের ১ জন করে ২ জনের মৃত্যু হয়েছে। হাসপাতালে ১৩৪ জন রোগী ভর্তি রয়েছেন। এর মধ্যে আইসিইউতে ৮ ও এইচডিইউতে ১১ জন আছেন। এক দিনে নতুন রোগী ভর্তি হয়েছেন ৩৩ জন। সুস্থ হয়েছেন ২৭ জন।
জেলা জেনারেল হাসপাতালের মুখপাত্র আবু রাশেদ জানান, এ হাসপাতালে ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। ৪ জনের মধ্যে ৩ জন খুলনার ও ১ জন যশোরের। এ হাসপাতালে রোগী রয়েছেন ৭১ জন। নতুন ভর্তি হয়েছে ২০ জন; সুস্থ হয়েছেন ২১ জন।
আবু নাসের হাসপাতালের মুখপাত্র প্রকাশ দেবনাথ জানান, এ হাসপাতালে কেউ মারা যায়নি। ৪৩ জন রোগী ভর্তি রয়েছেন। নতুন ভর্তি হয়েছেন ২০ জন; সুস্থ হয়েছেন ২১ জন।