বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

হাসপাতালে ৩০০ টাকার খাবারের একি হাল!

  •    
  • ৬ জুলাই, ২০২১ ১৫:২৬

করোনা আইসোলেশন ইউনিটে চিকিৎসা নেয়া আবু সালেহ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘গত ১০ দিন ধরে আছি। একদিনও মাল্টা-কমলা পাইনি। হাসপাতালের দেয়া খাবার খেতে পারিনি। তাই আমার পরিবারের লোকজন ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন আমার জন্য খাবার নিয়ে আসেন।’

ঠাকুরগাঁও জেলা সদর হাসপাতালে করোনা রোগীদের খাবারের জন্য প্রতিদিন ৩০০ টাকা করে বরাদ্দ থাকলেও তাদের নিম্নমানের খাবার দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। রোগীরা বলছেন, তিন বেলা যে খাবার তাদের দেয়া হচ্ছে, তার দাম ৭০ থেকে ৮০ টাকা হবে।

তাদের অভিযোগ, খাবারের সঙ্গে বিভিন্ন ফল দেয়ার কথা থাকলেও তা তারা পাচ্ছেন না। নিম্নমানের খাবারের কারণে অনেকেই বাসা থেকে খাবার আনিয়ে খান। বাইরে থেকে খাবার নিয়ে করোনা ইউনিটে আসা-যাওয়া করায় সংক্রমণ ছড়িয়ে পরারও ঝুঁকি রয়েছে।

সদর হাসপাতালে ঘুরে দেখা যায়, এখানে চিকিৎসাধীন ১৭৪ করোনা রোগী। তাদের সকালের নাস্তায় দেয়া হচ্ছে একটি পাঁচ টাকা দামের পাউরুটি, আট টাকা দামের ডিম ও চার-পাঁচ টাকা দামের কলা।

দুপুরের ভাতের সঙ্গে ডাল, একটি ডিম অথবা এক টুকরো মাছ দেয়া হয়। আর রাতে দেয়া হয় ভাত, এক টুকরো মাছ অথবা একটি ডিম। বর্তমান বাজারদরে তিনবেলার এ খাবারের দাম হিসাব করলে দাঁড়ায় ৭০-৮০ টাকা।

করোনা আইসোলেশন ইউনিটে চিকিৎসা নেয়া আবু সালেহ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘গত ১০ দিন ধরে আছি। একদিনও মাল্টা-কমলা পাইনি। হাসপাতালের দেয়া খাবার খেতে পারিনি। তাই আমার পরিবারের লোকজন ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন আমার জন্য খাবার নিয়ে আসেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘সকালে নাস্তা হিসেবে একটা কলা দিয়েছিল। সেটিও খাওয়ার মত ছিল না। আর তরকারি দেখলে খাবার ইচ্ছা নষ্ট হয়ে যায়।’

হেকমত আলী নামের আরেক রোগী বলেন, ‘আমার করোনা ধরা পরার পর থেকে হাসপাতোলে আছি। কিন্তু একদিনও হাসপাতালের দেয়া খাবার খেতে পারিনি। ভাত ঠিকমতো সেদ্ধ হয় না। সকালে দেয়া পাউরটিও খাবার মতো না। বাধ্য হয়েই বাড়ি থেকে খাবার এনে খেতে হচ্ছে।’

কথা হয় হাসপাতালে চিকিসাধীন রোগীর স্বজন আক্তার বানুর সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘করোনা রোগীদের দেয়া খাবার খুবই নিম্নমানের। রোগী হাসপাতালের দেয়া খাবার খেতে পারেন না বলে বাড়ি থেকে খাবার পাঠাতে হয়।’

এ বিষয়ে সদর হাসপাতালে রাধুনী আবু বক্করের জানান, হাসপাতালে খাদ্য সরবরাহকারী যেভাবে খাবার দিচ্ছে, সেভাবেই রোগীদের দেয়া হচ্ছে। অনেক রোগী হাসপাতালের খাবার খেতে আগ্রহ প্রকাশ করেন না। তাই তাদের খাবার দেয়া হয় না।

এ বিষয়ে হাসপাতালের খাদ্য সরবরাহকারী ঠিকাদার নিপুন মোহন্ত নিউজবাংলাকে বলেন, ‘চুক্তি অনুযায়ী সব ধরনের খাবার, ফলমূল ও খাদ্য সামগ্রী সরবরাহ করছি। আমার খাবার দেয়া তালিকায় যা আছে, সেসব খাবার দেই।

‘করোনা রোগীকে তালিকা অনুযায়ী খাদ্য বিতরণ করার দায়িত্ব হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের। এইখানে আমার কিছু করার নেই।’

ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা রাকিবুল ইসলাম চয়ন এ বিষয়ে বলেন, ‘তালিকা অনুযায়ী চিকিৎসাধীন করোনা রোগীদের সব ধরনের খাদ্য পাওয়ার কথা। আমি আপনার কাছে শুনলাম করোনা রোগীরা খাবার পায় না। খোঁজ নিয়ে আমি দ্রুত এর ব্যবস্থা নেব।’

সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক নাজিরুল ইসলাম চপল বলেন, ‘ঠিকাদার যেভাবে খাদ্য সরবরাহ করছেন সেভাবেই করোনা রোগীকে খাবার বিতরণ করা হচ্ছে। অনেক সময় ঠিকাদারের খাদ্য সরবরাহে সমস্যা হলে খাবারের মান খারাপ হতে পারে।

‘আমি বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখবো। আর করোনা রোগীরা যাতে সঠিক মানের খাবার পায় সে ব্যবস্থা করবো।’

এ বিভাগের আরো খবর