অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজ টিকা যারা নিয়েছেন, তাদের করোনায় আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা অনেক কম। এমনকি টিকার দুটি ডোজ নিয়ে করোনায় আক্রান্ত হলেও স্বাস্থ্যঝুঁকি অনেক কমে যায়।
করোনায় আক্রান্ত ও টিকা গ্রহণকারী মানুষের ওপরে গবেষণায় এ তথ্য পাওয়া গেছে।
চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও অ্যানিমেল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় (সিভাসু)-এর উপাচার্য প্রফেসর ড. গৌতম বুদ্ধ দাশের নেতৃত্বে একদল গবেষক দীর্ঘ দুই মাস ধরে এ গবেষণা পরিচালনা করেন। গবেষণা দলের আরেক সদস্য অধ্যাপক ড. শারমিন চৌধুরী।
গবেষণায় তারা চট্টগ্রাম ও চাঁদপুর অঞ্চলে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকা গ্রহণকারী ও টিকা গ্রহণ না করা কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের তুলনামূলক স্বাস্থ্যঝুঁকির মূল্যায়ন করেন।
সিভাসু ও চাঁদপুর কোভিড-১৯ শনাক্তকরণ ল্যাবে গত ২২ এপ্রিল থেকে ২২ জুন পর্যন্ত মোট ১২ হাজার ৯৩৬ ব্যক্তির নমুনা পরীক্ষা করা হয়, যার মধ্যে ২ হাজার ১৩৭ জনের শরীরে নভেল করোনা ভাইরাসের উপস্থিতি শনাক্ত হয়। কোভিড-১৯ পজিটিভ ব্যক্তিদের মধ্যে কনটাক্ট ট্রেসিংয়ের মাধ্যমে মোট ১ হাজার ৯৫ জনের স্বাস্থ্যসংশ্লিষ্ট সমস্ত তথ্য-উপাত্ত পর্যবেক্ষণ করে গবেষণায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
গবেষণার ফলাফলে উঠে এসেছে, করোনা আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে ৯৬৮ জন কোভিড-১৯-এর টিকা গ্রহণ করেননি। অন্যদিকে, এমন ৬৩ জন ব্যক্তি পাওয়া যায়, যারা বিভিন্ন সময়ের মধ্যে নির্ধারিত স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার কোভিশিল্ডের শুধু প্রথম ডোজ টিকা গ্রহণ করেছেন এবং ৬৪ জন প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজ টিকা গ্রহণ করেছেন।
সংগৃহীত নমুনার মধ্যে প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজ টিকা গ্রহণকারীদের কোভিড-১৯-এ আক্রান্তের হার মোট নমুনা পরীক্ষার যথাক্রমে ০.৪৮ এবং ০.৪৯ শতাংশ।
গবেষণার ফলাফলে দেখা যায়, কোভিড-১৯ টিকা না নেয়া রোগীদের মধ্যে ১৩৭ জনের হাসপাতালে ভর্তির প্রয়োজন হয়েছে। যেখানে প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজ টিকা গ্রহণকারীদের মধ্যে যথাক্রমে সাতজন ও তিনজন রোগীকে হাসপাতালে যেতে হয়েছে।
টিকা গ্রহণ না করা হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের মধ্যে সাতজনের আইসিইউ সেবার প্রয়োজন হয়। অপরদিকে, টিকা গ্রহণকারী রোগীদের কোনো ধরনের আইসিইউ সেবার প্রয়োজন হয়নি।
টিকা গ্রহণ না করা রোগীদের মধ্যে শ্বাসকষ্টের সময়কাল সর্বোচ্চ ২০ দিন পর্যন্ত দীর্ঘায়িত হয়েছে।
গবেষণায় পাওয়া যায়, নমুনার মধ্যে যে ১০ জন কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন, তারা কেউই প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজ টিকা গ্রহণ করেননি।
গবেষণায় আরও দেখা যায়, টিকা গ্রহণ না করা যেসব কোভিড রোগী আগে থেকে বিভিন্ন শারীরিক জটিলতায় (কো-মরবিডিটি) ভুগছিলেন, তাদের মধ্যে করোনায় সংক্রমণের হার ছিল ৭৬ দশমিক ৭ শতাংশ, যা টিকা গ্রহণকারীদের মধ্যে প্রায় ১২ শতাংশ পরিলক্ষিত হয়।