বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

হাসপাতালে শয্যা মিলবে কি না, শঙ্কায় সরকার

  •    
  • ২৮ জুন, ২০২১ ১৭:৩২

‘সারা দেশে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের সংক্রমণ যেভাবে বাড়তে শুরু করেছে, এভাবে চলতে থাকলে অচিরেই করোনা হাসপাতালগুলোতে সাধারণ শয্যাও পাওয়া যাবে না।…হাসপাতালগুলোতে দ্রুতই শয্যাসংখ্যা পূরণ হয়ে যাচ্ছে। রাজধানীর বেশ কয়েকটি হাসপাতালের আইসিইউ পূর্ণ হয়ে গেছে।’

করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার পরিপ্রেক্ষিতে রোগীর সংখ্যা যেভাবে বাড়ছে, তাতে হাসপাতালে রোগীকে জায়গা দেয়া যাবে কি না, এ নিয়ে শঙ্কায় খোদ স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সারা দেশে নতুন করে বিধিনিষেধ দেয়ার দিন অধিদপ্তরের মুখপাত্র রোবেদ আমিন জনগণকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বানও জানিয়েছেন।

বাংলাদেশে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের মধ্যে ভাইরাসটির ভারতীয় ধরন ছড়িয়ে পড়ার পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার থেকে সারা দেশে নতুন বিধিনিষেধ দেয়া হয়েছে। তবে ১ জুলাই থেকে আরও কঠোর হতে যাচ্ছে। প্রয়োজন ছাড়া জনগণ যেন বাড়ির বাইরে যেতে না পারে, সে জন্য এবার মোতায়েন হচ্ছে সেনাবাহিনীও।

সরকার এই কঠোর অবস্থানে যাচ্ছে গত এক মাসের পরিস্থিতি দেখে। এই এক মাসে রোগী ও মৃত্যুর সংখ্যা ৫০ শতাংশের বেশি বেড়ে গেছে।

রোববার ২৪ ঘণ্টায় ১১৯ জনের মৃত্যুর তথ্য জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এর আগে এক দিনে এত বেশি রোগীর মৃত্যু হয়নি কখনও। দিনে শনাক্ত এখন ছয় হাজারের ঘরে।

গত বছরের মার্চে দেশে করোনা সংক্রমণ ধরা পড়লে রোগী বেশি ছিল শহর এলাকায়। কিন্তু এখন বিশেষ করে দেশের পশ্চিম সীমান্তে রোগীর সংখ্যা বেশি। আর গ্রাম এলাকাতেও বিপুল পরিমাণ মানুষ ভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছেন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মুখপাত্র নিজেও পরিস্থিতি নিয়ে শঙ্কিত। বলেন, ‘সারা দেশে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস সংক্রমণ যেভাবে বাড়তে শুরু করেছে, এভাবে চলতে থাকলে অচিরেই করোনা হাসপাতালগুলোতে সাধারণ শয্যাও পাওয়া যাবে না।’

তিনি বলেন, ‘গত এক মাসের তুলনায় সংক্রমণের সংখ্যা বহুগুণে বৃদ্ধি পেয়েছে। হাসপাতালগুলোতে আবারও করোনা আক্রান্ত রোগীদের ভিড় আমরা দেখতে পাচ্ছি।

‘হাসপাতালগুলোতে দ্রুতই শয্যাসংখ্যা পূরণ হয়ে যাচ্ছে। রাজধানীর বেশ কয়েকটি হাসপাতালের আইসিইউ পূর্ণ হয়ে গেছে। বেসরকারি হাসপাতালের আইসিইউও পূর্ণ হয়ে যাচ্ছে।’

তিনি জানান, বর্তমানে দেশে যতগুলো আইসিইউ শয্যা আছে, তার মধ্যে ২৮১টি কেবল খালি রয়েছে। গত মাস আগেও ফাঁকা শয্যার সংখ্যা এর দ্বিগুণ ছিল।

সীমান্তবর্তী জেলাগুলোর যেসব জায়গাতেই সংক্রমণ এখন বেশি জানিয়ে তিনি বলেন, সেগুলোতেই মৃত্যু বেশি।

অক্সিজেনের চাহিদা বাড়লে বন্ধ সরবরাহ বন্ধ হবে শিল্পে

করোনা পরিস্থিতির অবনতি হলে অক্সিজেনের চাহিদা পূরণে শিল্পকারখানায় এই গ্যাস সরবরাহকারীদের দিকে তাকিয়ে সরকার। চাহিদা বাড়লে শিল্পের বদলে হাসপাতালে গ্যাসের সরবরাহ নিয়ে আসার জন্য আলোচনাও চলছে।

করোনা রোগী ক্রমেই বেড়ে চলা, পশ্চিম সীমান্তে ভারত লাগোয়া জেলাগুলোতে হাসপাতালে রোগী উপচে পড়ার পরিপ্রেক্ষিতে এই সংকট দেখা দেয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।

তবে এখন পর্যন্ত হাসপাতালে অক্সিজেনের যে চাহিদা, তা সামাল দেয়ার মতো সংগতি আছে সরকারের।

হাসপাতালে দিনে ১২০ থেকে ১৫০ মেট্রিক টন অক্সিজেনের চাহিদা থাকে। অন্যদিকে সক্ষমতা আছে ১৯০ মেট্রিক টনের। ফলে এখনও ৪০ থেকে ৭০ মেট্রিকটন বেশি আছে সক্ষমতার।

তবে করোনার ভারতীয় ধরনে রোগীদের অক্সিজেনের চাহিদা বেশি থাকে। আর বাংলাদেশে এখন এই ধরনটিই ছড়াচ্ছে, যেটি চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে কপালে।

ভারতে করোনার ডেল্টা ধরনে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছে অক্সিজেনের অভাবে। স্বাভাবিক সময়ে অক্সিজেন রপ্তানি করা দেশটি হন্যে হয়ে ছুটেছে জীবন রক্ষাকারী এই গ্যাসটির জন্য। বিমানে করে বিদেশ থেকে আমদানির পাশাপাশি অক্সিজেন উৎপাদনের ছোট ছোট কারখানাও আনা হয়েছে আকাশপথে।

বাংলাদেশের খাদের কিনারে দাঁড়িয়ে থাকার পরিস্থিতিতে সরকার বাড়তি চাহিদা তৈরি হলে কী করা যায়, তা নিয়ে ভাবছে।

এর অংশ হিসেবেই যোগাযোগ করা হয়েছে শিল্পকারখানায় অক্সিজেন সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে।

সোমবার অনলাইন স্বাস্থ্য বুলেটিনে এ তথ্য জানান অধিদপ্তরের রোবেদ আমিন।

তিনি বলেন, ‘প্রতিবেশী ভারতে করোনা সংক্রমণ লাফিয়ে বাড়ার পরিস্থিতির মধ্যে দেশটিতে অক্সিজেনসংকট তীব্র আকার ধারণ করেছিল। অক্সিজেনের অভাবে মারা যাচ্ছে অনেক রোগী। এমন পরিস্থিতি তৈরি যাতে না হয় সরকার আগে থেকেই সতর্ক অবস্থা রয়েছে।’

বর্তমানে সময়ে অক্সিজেনের চাহিদা কেমন, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘চাহিদা ১২০ মেট্রিক টনের মতো। তবে যখন সংক্রমণ বাড়তেই তাহলে অক্সিজেনের চাহিদা বাড়বে। অক্সিজেনের চাহিদা আমরা দেখেছি এপ্রিল মাসে যখন সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ ছিলে। তখন চাহিদা দৈনিক চাহিদা প্রায় ১৯০ মেট্রিক টনের।‘

এই অক্সিজেনের জন্য প্রধানত দুটি কোম্পানির ওপর নির্ভর করে সরকার। এগুলো হলো লিনডে বাংলাদেশ ও ইসলাম অক্সিজেন।

রোবেদ আমিন বলেন, ‘এদের থেকে নিয়েই আমাদের চাহিদা মেটানো সম্ভব হচ্ছে। তবে সংক্রমণ বৃদ্ধির কারণে অন্যান্য কোম্পানি যারা শিল্পকারখানার জন্য অক্সিজেন তৈরি করে, তাদের সঙ্গেও আমরা যোগাযোগ করছি।’

এই কোম্পানিগুলো হলো আবুল খায়ের গ্রুপ, ইস্পা প্রভৃতি।

এর মধ্যে আবুল খায়ের গ্রুপ এখন দিনে ২০ মেট্রিক টন অক্সিজেন দিচ্ছে। তবে তারা দিনে ২০০ মেট্রিক টন পর্যন্ত দিতে পারবে। কোম্পানিটি জানিয়েছে, চাহিদা তৈরি হলে তারা কারখানায় না দিয়ে হাসপাতালে পাঠাতে প্রস্তুত আছে।

এ বিভাগের আরো খবর