ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারির মধ্যে প্রায় দুই মাস পর বেনাপোল আন্তর্জাতিক চেকপোস্ট দিয়ে শর্ত সাপেক্ষে চিকিৎসার জন্য ভারত ভ্রমণের সুযোগ পাচ্ছেন বাংলাদেশিরা।
এর আগে নিষেধাজ্ঞার মধ্যে কেবল রাষ্ট্রীয় কাজে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের যাতায়াতের সুযোগ ছিল।
বেনাপোল বন্দর দিয়ে সোমবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের বহিরাগমন-২ শাখার ছাড়পত্র নিয়ে মেডিক্যাল ভিসায় ভারতে গেছেন ৯ বাংলাদেশি। আরও প্রায় ২ হাজার মানুষ ভারত যাওয়ার আবেদন করেছেন বলে জানা গেছে।
বাংলাদেশি যারা ভারত থেকে ফিরছেন তাদের বেনাপোলে ১৪ দিনের বাধ্যতামূলক প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে থাকতে হলেও, এ ক্ষেত্রে ছাড় দেয়া হয়েছে ভারত যেতে ইচ্ছুক চিকিৎসাসেবা প্রত্যাশীদের।
অর্থাৎ যারা ভারতে যাচ্ছেন তাদের সেখানে কোয়ারেন্টিনে থাকতে হচ্ছে না, সরাসরি গন্তব্যে যেতে পারছেন তারা।
বেনাপোল চেকপোস্ট ইমিগ্রেশন সূত্রে জানা যায়, ভারতে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় গত ২৬ এপ্রিল থেকে দেশটিতে ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা জারি করে বাংলাদেশ সরকার। এতে বাংলাদেশিদের ভারত ভ্রমণ বন্ধ হয়ে যায়। এ ক্ষেত্রে বিশেষ করে জটিল রোগে আক্রান্তরা বেশি বিপাকে পড়েন।
চিকিৎসা শেষ করাতে না পেরে অনেকে জীবন-মৃত্যুর দ্বারপ্রান্তে পৌঁছান। এ পরিস্থিতে মানবিক বিষয় বিবেচনায় সরকার চিকিৎসাসেবা প্রত্যাশীদের শর্তসাপেক্ষে ভারত ভ্রমণের সুযোগ দেয়। ভারত সরকারও ইতিবাচক সাড়া দিয়ে ভিসা দিচ্ছে।
ভারত ভ্রমণের উদ্দেশ্যে বেনাপোল বন্দরে আসা বাংলাদেশি যাত্রী পারভিন আক্তার জানান, তার ছেলে জটিল রোগে আক্রান্ত। তিন মাস আগে একবার ভারতে গিয়েছিলেন চিকিৎসার জন্য। আবারও ডাক্তার আসতে বলেছিলেন। এখন তিনি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ভারত ভ্রমণের অনুমতি চেয়ে আবেদন করে ছাড়পত্র পেয়েছেন।
আরও কয়েকজন যাত্রী জানান, কোভিডের ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্যে তাদের চিকিৎসা নিতে বাধ্য হয়ে ভারতে যেতে হচ্ছে। দেশে চিকিৎসাসেবা উন্নত হলে ঝুঁকি নিয়ে হয়তো তাদের যাওয়ার প্রয়োজন হতো না। এতে যেমন খরচ কম লাগত, তেমনি সময়ও বাঁচত।
বেনাপোল চেকপোস্ট ইমিগ্রেশন পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আহসান হাবিব জানান, এখন জটিল রোগে আক্রান্তরা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ছাড়পত্র নিয়ে ভারত যাওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন। বাংলাদেশি যারা ভারত থেকে ফিরছেন, তারা ভারতে নিযুক্ত বাংলাদেশ দূতাবাসের বিশেষ ছাড়পত্র নিয়ে ফিরছেন। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমতি থাকলে যে কেউ যেতে পারবেন বলে জানান তিনি।
ভারতে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পেলে গত বছরের ১৩ মার্চ ভারত সরকার বাংলাদেশিদের ভারত ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা জারি করে। পরে করোনা পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসলে প্রায় ৮ মাস পর তিনটি শর্ত দিয়ে পর্যটক ভিসা বন্ধ রেখে বাংলাদেশি যাত্রীদের চিকিৎসা, ব্যবসা আর শিক্ষা গ্রহণে ভারত ভ্রমণের সুযোগ দেয়।
গত ২৩ এপ্রিল থেকে পুনরায় স্থলপথে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারি হয়। এখনও সেই নিষেধাজ্ঞা জারি রয়েছে।