বিশ্বের প্রতিটি মানুষের জন্য করোনাভাইরাস প্রতিরোধী টিকা নিশ্চিত করতে জাতিসংঘের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ।
জাতিসংঘ সদর দপ্তরে মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেসের সঙ্গে বৈঠকে এ দাবি তুলে ধরেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন।
জাতিসংঘের বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন থেকে শুক্রবার এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়। এতে বলা হয়, কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন সবাই যেন পায়, সে বিষয়ে উদ্যোগ নেয়ার জন্য জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের প্রতি অনুরোধও করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
করোনা প্রতিরোধী টিকা প্রদানে মধ্যবিত্ত ও গরিব দেশগুলোর তুলনায় ধনী দেশগুলো অনেক এগিয়ে। অনেক ধনী দেশের বিরুদ্ধে টিকা কিনে মজুতের অভিযোগও রয়েছে।
অন্যদিকে, বাংলাদেশসহ অনেক দেশ টিকা পেতে ধনীদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছে। কিন্তু কোনো সুরাহা পাচ্ছে না। বিশ্বজুড়ে ন্যায্যতার ভিত্তিতে টিকা নিশ্চিতের ফ্ল্যাটফর্ম কোভ্যাক্স থেকেও আশানুরূপ সাড়া পাচ্ছে না উন্নয়নশীল বা গরিব দেশগুলো।
কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনকে জনসাধারণের সম্পত্তি হিসেবে ঘোষণা করেছে জাতিসংঘ। এ উদ্যোগের জন্য মহাসচিবকে ধন্যবাদ জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
বৈঠকে জাতিসংঘ মহাসচিব সাম্প্রতিক জি-৭ শীর্ষ সম্মেলনে ভ্যাকসিন তৈরির ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সক্ষমতা সম্পর্কে উল্লেখ করেন। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে জাতিসংঘের বিশেষ সম্পর্ক রয়েছে।
জাতিসংঘের কার্যক্রমে বিশেষত শান্তিরক্ষা, জলবায়ু পরিবর্তন ও নারীর ক্ষমতায়নে বাংলাদেশের নেতৃত্বের ভূমিকার প্রশংসা করেন আন্তোনিও গুতেরেস।
দ্বিতীয় মেয়াদে জাতিসংঘের মহাসচিব হিসেবে দায়িত্ব পাওয়া গুতেরেসকে অভিনন্দন জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তার প্রথম মেয়াদে জাতিসংঘের নেতৃত্বের প্রশংসা করেন মোমেন।
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের সঙ্গে বৈঠকে বসেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন
রোহিঙ্গা ইস্যুতে জাতিসংঘের অব্যাহত মনোযোগের জন্য জাতিসংঘের মহাসচিবকে ধন্যবাদ জানান মোমেন। বলেন, মিয়ানমারের রাজনৈতিক পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় মহাসচিবের ব্যক্তিগত হস্তক্ষেপ এখন আগের চেয়ে বেশি প্রয়োজন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, প্রকাশ্যে মানবাধিকার লঙ্ঘনের পরেও অনেক প্রভাবশালী দেশ মিয়ানমারের সঙ্গে তাদের অর্থনৈতিক ও ব্যবসায়িক সম্পর্ক বাড়িয়েছে, যা হতাশাজনক।
রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়ার ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মানবিকতা উল্লেখ করে বাংলাদেশকে ধন্যবাদ জানান জাতিসংঘের মহাসচিব। তিনি বলেন, বিশ্বের বৃহত্তম শরণার্থী গোষ্ঠীকে আশ্রয় দেয়ায় বিশ্ব বাংলাদেশের উদারতা ভুলে যাবে না।
বৈঠকে মহাসচিবকে ভাসানচরের রোহিঙ্গাদের আবাসনের সুবিধাগুলি সম্পর্কেও অবহিত করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। সেখানে জাতিসংঘের কার্যক্রমের গুরুত্বের ওপর জোর দেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, বাংলাদেশ এসডিজি বাস্তবায়নের পথে রয়েছে। এসডিজির উত্তরণের দেশগুলোর জন্য অব্যাহত সহায়তা ব্যবস্থা গ্রহণেরও আহ্বান জানান।
বৈঠকে জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশনের প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন।