করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে ঠাকুরগাঁও জেলায় বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ৭ দিন কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করেছে জেলা প্রশাসন।
বুধবার জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির জরুরি সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়েছে।
জেলা প্রশাসক কে এম কামরুজ্জামান সেলিমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন, সিভিল সার্জন মাহফুজার রহমান সরকার, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) ৫০ ব্যাটালিয়নের উপ-অধিনায়ক মেজর মুজাহিদুল ইসলাম, জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মাহাবুবুর রহমান, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সদর উপজেলা চেয়ারম্যান অরুণাংশু দত্ত বক্তব্য দেন।
জেলা প্রশাসক কে এম কামরুজ্জামান সেলিম বলেন, সপ্তাহ দুয়েক ধরে করোনা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। মানুষকে স্বাস্থ্যসচেতন করতে প্রশাসন, স্বাস্থ্য বিভাগ ও স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবীদের নিয়ে চলমান বিধিনিষেধ কঠোরভাবে বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। আগামী সাত দিন পর্যবেক্ষণ করা হবে। করোনা পরিস্থিতির উন্নতি না হলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে।
জেলা সিভিল সার্জন মাহফুজার রহমান সরকার বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্তের নতুন রেকর্ড হওয়ায় জরুরি সভা আহ্বান করে জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটি। সভায় জেলায় সাধারণ মানুষের চলাচলে সাতদিনের জন্য কঠোর বিধিনিষেধ জারির সিদ্ধান্ত হয়। এই সাতদিনের পর যদি করোনা পরিস্থিতির অবনতি হয়, সে ক্ষেত্রে লকডাউনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, জেলায় সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত স্বাস্থ্যবিধি মেনে দোকানপাট-বিপণিবিতান খোলা রাখা যাবে। হোটেল-রেস্তোরাঁ শুধু পার্সেল আকারে বা অনলাইনে অর্ডার গ্রহণ করে খাবার বিক্রি করতে পারবে। জেলার সব গরুর হাট, পর্যটনকেন্দ্র, রিসোর্ট, কমিউনিটি সেন্টার, বিনোদনকেন্দ্র এক সপ্তাহ বন্ধ থাকবে।
আন্তঃজেলাসহ সব ধরনের গণপরিবহন আসনসংখ্যার অর্ধেক যাত্রী নিয়ে চলাচল করতে পারবে। সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ ঠেকাতে বিজিবিকে সহযোগিতায় জন্য স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে কমিটি গঠন করা হবে।
তিনি আরও বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় ১২১ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৬১ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ৫০ দশমিক ৪১ শতাংশ, যা প্রথম ও দ্বিতীয় ঢেউ মিলিয়ে এক দিনে সর্বোচ্চ শনাক্তের হার। আগের ২৪ ঘণ্টায় ৯৪টি নমুনা পরীক্ষায় ৪৩ জনের করোনা পজিটিভ আসে। শনাক্তের হার ছিল ৪৫ দশমিক ৭৪। জেলায় শুরু থেকে এ পর্যন্ত ১০ হাজার ৯৭৮টি নমুনা পরীক্ষায় ২ হাজার ১১০ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের গড় হার ১৯ দশমিক ২২ শতাংশ। এখন পর্যন্ত জেলায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৫১ জন।