বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

১ আইসিইউ বেডের অপেক্ষায় ৭০ রোগী

  •    
  • ১৫ জুন, ২০২১ ১৭:৪৪

রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মঙ্গলবার সকালে করোনা ইউনিটের আইসিইউ পেতে নাম লেখানো রোগীর ক্রমিক ৭০ পর্যন্ত উঠেছে। আইসিইউতে থাকা রোগীদের কারও একটু উন্নতি হলে তাকে সাধারণ ওয়ার্ডে দেয়া হচ্ছে। আবার কেউ মারা গেলে শয্যা খালি হচ্ছে। তারপর ক্রমিক অনুযায়ী ফোন করে আইসিইউতে রোগী ডাকা হচ্ছে। ক্রমিকের ৭০ নম্বর রোগীকে আইসিইউ পেতে কয়েকদিন অপেক্ষা করার বিকল্প থাকছে না।

করোনা রোগীর চাপ সামলাতে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বেসামাল হয়ে পড়েছে। সাধারণ ওয়ার্ডগুলো একের পর এক করোনা ওয়ার্ডে রূপান্তর করছে; সম্প্রসারণ হতে হতে এখন হাসপাতালের এক চতুর্থাংশ করোনা ইউনিটে রূপান্তর হয়েছে। তারপরও বেড সংকুলান করতে পারছে না কর্তৃপক্ষ।

এমন অবস্থায় রাজশাহী মেডিক্যালে একটি আইসিইউ বেডের আশায় দিনের পর দিন অপেক্ষা করছেন রোগীরা। অবস্থা এমন অবস্থায় পৌঁছেছে একটি আইসিইউ খালি পেতে অন্তত ৭০ জন রোগী সিরিয়ালে রয়েছেন।

নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রের (আইসিইউ) ৩০টি বেডের মধ্যে এখন ২০টিতে করোনা রোগী বা উপসর্গ নিয়ে ভর্তি আছেন। এরপরও সেবা নিশ্চিত করতে পারছে না হাতপাতাল কর্তৃপক্ষ। করোনা ওয়ার্ডে রোগী বেড়েই চলেছে। আইসিইউতে বেড পেতে অপেক্ষা করতে হচ্ছে দিনের পর দিন।

রাজশাহী মেডিক্যালে আইসিইউতে থাকা কোনো রোগীর মৃত্যু বা একটু উন্নতি হলে শয্যা ফাঁকা হচ্ছে। তখন জায়গা পাচ্ছেন আরেক রোগী। এর আগে তাকে গুণতে হচ্ছে অপেক্ষার প্রহর।

মঙ্গলবার সকালে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আইসিইউ পেতে নাম লেখানো রোগীর ক্রমিক ৭০ পর্যন্ত উঠেছে। আইসিইউতে থাকা রোগীদের কারও একটু উন্নতি হলে তাকে সাধারণ ওয়ার্ডে দেয়া হচ্ছে। আবার কেউ মারা গেলে শয্যা খালি হচ্ছে। তারপর ক্রমিক অনুযায়ী ফোন করে আইসিইউতে রোগী ডাকা হচ্ছে।

প্রতিদিন ৭ থেকে ১০ জন পর্যন্ত রোগীকে আইসিইউতে নেয়া সম্ভব হচ্ছে। ক্রমিকের ৭০ নম্বর রোগীকে আইসিইউ পেতে কয়েকদিন অপেক্ষা করার বিকল্প থাকছে না।

আইসিইউতে মঙ্গলবার সকালে রোগী ছিল ১৯ জন। এদের মধ্যে ১২ জনই করোনা পজিটিভ। অন্যরা করোনার উপসর্গ নিয়ে ভর্তি ছিলেন। গত ২৪ ঘণ্টায় আইসিইউ থেকে তিনজন রোগীকে সাধারণ ওয়ার্ডে স্থানান্তর করা হয়েছে। আর মারা গেছেন চারজন। এরপরই সাধারণ ওয়ার্ড থেকে সাতজন রোগী আইসিইউতে জায়গা পেয়েছেন।

রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নতুন করে আইসিইউ শয্যা বাড়ানোর মত অবকাঠামো নেই বলে জানিয়েছেন আইসিইউ ইনচার্জ ডা. আবু হেনা মোস্তফা কামাল।

তিনি বলেন, ‘এই মুহূর্তে আমাদের আইসিইউ বাড়ানোর মত আর স্ট্র্যাকচারাল ক্যাপাসিটি নেই। যা ছিল সবই করলাম। এখন আইসিইউ বেড ২০টি। এখানে বেড পাওয়ার জন্য অপেক্ষা করার বিকল্প নেই। কারণ রোগীর চাপ অনেক বেশি; কেউ সুস্থ বা মারা না গেলে অন্য জনকে বেড দেয়ার কোন সুযোগ নেই।’

হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী জানান, করোনা রোগীদের জন্য একের পর এক সাধারণ ওয়ার্ডকে করোনা ওয়ার্ডে রূপান্তর করা হচ্ছে। এখন হাসপাতালের ১১টি ওয়ার্ডে করোনা রোগীদের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।

এ ছাড়া কেবিনে ১৫টি শয্যা আছে। সবমিলে করোনা রোগীর শয্যার সংখ্যা ৩০৯টিতে দাঁড়িয়েছে। মঙ্গলবার সকালে এখানে ৩২৫ জন রোগী ভর্তি ছিলেন।তিনি বলেন, সবশেষ মঙ্গলবার দুপুরে হাসপাতালের ১৫ নম্বর ওয়ার্ডকে করোনা ওয়ার্ডে রূপান্তর করা হয়েছে। সেখানে সেন্ট্রাল অক্সিজেন সরবরাহ লাইন দেয়া হয়েছে। দুপুর থেকে সেখানকার ৩৬টি শয্যা করোনা রোগীদের জন্য ইউনিট যোগ হয়েছে। পাশাপাশি বাড়তি ১৫টি শয্যাও যুক্ত করা হয়েছে এই ওয়ার্ডে।

ব্রিগেডিয়ার শামীম ইয়াজদানী বলেন, যত দ্রুত রোগী বাড়ছে, তত দ্রুত সক্ষমতা বাড়ানো যাচ্ছে না। ফলে চিকিৎসা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। এ ছাড়া করোনা রোগীদের জন্য নতুন নতুন ওয়ার্ড ছেড়ে দেয়ার কারণে অন্য সাধারণ রোগের চিকিৎসা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।

উত্তরাঞ্চলের বৃহৎ এ হাসপাতালে ১ হাজার ২০০টি শয্যা আছে। এখানে রাজশাহী ছাড়াও চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নাটোর, নওগাঁ, জয়পুরহাট, পাবনা, সিরাজগঞ্জ, কুষ্টিয়া, মেহেরপুর ও চুয়াডাঙ্গার রোগীরা চিকিৎসা নিতে আসেন।

পরিচালক বলেন, ‘পরিস্থিতি যত খারাপই হোক, আমরা সর্বোচ্চ সেবা দেয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাব। রোগীর সংখ্যা আরও বেড়ে গেলে তাদেরও সেবা দেয়া হবে।’

এ বিভাগের আরো খবর