করোনার তৃতীয় ধাক্কার আশঙ্কা উড়িয়ে দিতে পারছেন না স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। সংক্রমণের নতুন ধাক্কায় শিশুদের আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেশি, এমনটাই জানা গেছে।
তাই আগেভাগেই প্রস্তুতি সেরে রাখল ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। ১৮ বছরের কম বয়সীদের কীভাবে করোনা পরীক্ষা করা হবে, তা নিয়ে বিস্তারিত গাইডলাইন প্রকাশ করল মন্ত্রণালয়।
গাইডলাইনে শিশুদের ওপর নানা রকম পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে ডিরেক্টর জেনারেল অফ হেলথ সার্ভিসেস (ডিজিএইচএস) এই নতুন গাইডলাইন প্রকাশ করেছে শিশুদের জন্য।
শিশুদের চিকিৎসায় রেমডেসিভির ও সিটি স্ক্যানে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে কেন্দ্র। একই সঙ্গে পাঁচ বছরের নিচের শিশুদের মাস্ক ব্যবহারে মানা করা হয়েছে।
ডিজিএইচএসের সংক্ষিপ্ত গাইডলাইনে বলা হয়েছে, পাঁচ বছরের নিচে শিশুদের মাস্ক পরানোর প্রয়োজন নেই। ছয় থেকে ১১ বছরের শিশুদের মাস্ক পরানো যেতে পারে। ১৮ বছরের নিচে কিশোর-কিশোরীদের শরীরে অ্যান্টি-ভাইরাল ড্রাগ রেমডেসিভির প্রয়োগ না করার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
দ্বিতীয় ধাক্কায় ভারতে করোনার সংক্রমণ মারাত্মক বৃদ্ধির পর শিশুস্বাস্থ্য নিয়ে চিন্তিত অভিভাবকরা। তাই এই সংশোধিত গাইডলাইন প্রকাশ করা হয়।
স্টেরয়েড প্রয়োগের ক্ষেত্রে একমাত্র হাসপাতালে চিকিৎসাধীন উপসর্গযুক্ত ও আশঙ্কাজনক রোগীর ওপর তা ব্যবহারের পরামর্শ দেয়া হয়েছে। স্টেরয়েড সঠিক সময়ে সঠিক মাত্রায় প্রয়োগের কথা বলা হয়েছে।
হাসপাতাল বা চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া স্টেরয়েড নিতে বারণ করা হয়েছে। উপসর্গহীন ও মৃদু উপসর্গযুক্ত করোনায় সংক্রমিতদের জন্য জ্বর, সর্দি-কাশির যেসব ওষুধ খাওয়া উচিত, সেগুলো খেতে বলা হয়েছে।
রেমডেসিভির, হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইন, মাল্টিভিটামিনের মতো ওষুধগুলো প্রয়োজন ছাড়া না নেয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। প্রয়োজন ছাড়া সিটি স্ক্যান-জাতীয় পরীক্ষাও রোগীদের ক্ষেত্রে না করার কথা বলা হয়েছে গাইডলাইনে।
করোনায় আক্রান্ত শিশুদের ফুসফুস বা হৃদ্যন্ত্রে সংক্রমণের কতটা প্রভাব পড়েছে, তা জানতে ছয় মিনিটের হাঁটা পরীক্ষার কথা বলা হয়েছে।
শিশুদের কার্ডিও-পালমোনারি টলারেন্স যাচাই করতে ১২-ঊর্ধ্ব শিশুদের হাতে পালস অক্সিমিটার লাগিয়ে একটি বদ্ধ ঘরে টানা ছয় মিনিট হাঁটতে বলা হয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের গাইডলাইনে।
অক্সিজেন স্যাচ্যুরেশন ৯৪ শতাংশের নিচে থাকে বা হঠাৎ করে তিন থেকে পাঁচ শতাংশ স্যাচ্যুরেশন কমে যায়, তাহলে শিশুদের দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করার পরামর্শ দেয়া হয় কড়া নজরদারি ও প্রয়োজনে অক্সিজেন দেয়ার জন্য।
তবে যাদের অ্যাজমা রয়েছে, তাদের ক্ষেত্রে এই পরীক্ষা করা হবে না।