ধনী ও দরিদ্র দেশগুলোর মধ্যে টিকা প্রয়োগে চরম বৈষম্য বিশ্বব্যাপী করোনা মহামারি পরিস্থিতিকে আরও সংকটময় করে তুলছে। এমন মন্তব্য করেছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মহাপরিচালক (ডিজি) টেডরোস আধানম গেব্রেয়েসুস।
সোমবার জেনেভায় বিশ্বসংস্থাটির সদরদপ্তরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এমনটি জানিয়েছেন গেব্রেয়েসুস।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে এমনটি উঠে এসেছে।
বিশ্বসংস্থার প্রধান বলেন, ‘ছয় মাস আগে করোনা প্রতিরোধী টিকা দেয়া শুরু হওয়ার পর এখন পর্যন্ত ৪৪ শতাংশ ডোজ প্রয়োগ করা হয়েছে ধনী দেশগুলোতে। অন্যদিকে নিম্ন আয়ের দেশগুলোর জনগণ পেয়েছে মাত্র শূন্য দশমিক চার শতাংশ ডোজ।’
তিনি আরও বলেন, ‘সবচেয়ে হতাশাজনক বিষয়টি হলো গত কয়েক মাসে এমন বৈষম্যে কোনো পরিবর্তন আসেনি। এতে করে বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাস মহামারি প্রতিরোধ ব্যবস্থা দ্বি-মুখী হয়ে উঠেছে।’
এর আগে, দরিদ্র দেশগুলোতে বিতরণের জন্য জাতিসংঘ সমর্থিত উদ্যোগ কোভ্যাক্সে জরুরি ভিত্তিতে এক কোটি ডোজ টিকা দিতে বিভিন্ন দেশ ও কোম্পানিগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন ডব্লিউএইচওর প্রধান।
সংস্থাটির ডিজি গেব্রেয়েসুস গত ২৭ মার্চ এমন আহ্বান জানান।
তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘নতুন বছরের প্রথম ১০০ দিনের মধ্যে সব দেশ যাতে টিকাদান শুরু করতে পারে, সে জন্য সমন্বিতভাবে কাজ করতে বছরের শুরুতে আমি বিভিন্ন দেশের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলাম।’
তিনি বলেন, তার সে আহ্বানের বাকি আছে মাত্র ১৫ দিন। অথচ ৩৬টি দেশ এখনও কোনো ডোজ পায়নি।
২৫ গুণ দ্রুতগতিতে ধনী দেশে টিকাদান
বিশ্বের মোট জনসংখ্যার পাঁচ শতাংশকে এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাস প্রতিরোধী টিকা দেয়া হয়েছে। তবে টিকার বিতরণ ব্যবস্থাপনায় দেখা গেছে বড় ধরনের বৈষম্য। বেশির ভাগ টিকাই বাগিয়ে নিয়েছে ধনী দেশগুলো।
১০ এপ্রিল নাগাদ বিশ্বের মোট জনসংখ্যার মাত্র ১১ শতাংশ হয়েও বৈশ্বিকভাবে দেওয়া করোনা টিকার ৪০ শতাংশ নিয়েছে ২৭টি ধনী দেশের নাগরিকরা।
অন্যদিকে বিশ্বের ১১ শতাংশ নিম্ন আয়ের মানুষ পেয়েছে টিকার মাত্র ১.৬ শতাংশ ডোজ।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গের ভ্যাকসিন ট্র্যাকারে প্রকাশিত তথ্য নিয়ে এমন প্রতিবেদন করেছেন টম রান্ডেল।
ওই প্রতিবেদক জানান, স্বল্প আয়ের দেশগুলোর তুলনায় ২৫ গুণ দ্রুততার সঙ্গে টিকাদান কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছে উচ্চ আয়ের দেশগুলোর সরকার।
ব্লুমবার্গের টিকাবিষয়ক তথ্যভান্ডার অনুযায়ী, গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ১৫৪টি দেশে ৭২ কোটি ৬০ লাখ ডোজ টিকা দেয়া হয়েছে।