করোনাভাইরাস প্রতিরোধী ফাইজার-বায়োএনটেকের টিকার ১ লাখ ৬২০ ডোজ প্রয়োগের আগে ডাইলুয়েন্ট নামের মিশ্রণ মেশাতে হবে। সোমবার রাতেই এই মিশ্রন দেশে আসবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
জাতীয় ভিটামিন-এ প্লাস ক্যাম্পেইন নিয়ে সোমবার কলেজ অফ ফিজিসিয়ানস অ্যান্ড সার্জনস (বিসিপওএস) অডিটোরিয়ামে এক আলোচনা সভা শেষে সাংবাদিক প্রশ্নের তিনি এ তথ্য দেন।
ডাইলুয়েন্ট মিশ্রণ ছাড়া ফাইজারের টিকা প্রয়োগ করা যায় না। এক ভায়াল টিকার সঙ্গে ডাইলুয়েন্ট মেশানোর পর মোট ছয় ডোজ টিকা তৈরি হবে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ফাইজারের টিকা একটি দ্রবণের মিশ্রণের জটিলতায় টিকা নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ডোজ প্রস্তুতে সময় ও পরিমাণে সামান্য হেরফের হলেই নষ্ট হতে পারে এই টিকা।
প্রাথমিক পরিকল্পনা অনুযায়ী ফাইজারের টিকা শুধু রাজধানীতে দেয়া হবে। এরই মধ্যে নিবন্ধন করেও যারা টিকা পাচ্ছেন ফাইজারের টিকা প্রয়োগে তাদের অগ্রাধিকার দেয়া হবে। অগ্রাধিকার তালিকায় রাখা হবে শিক্ষার্থীদেরও।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘স্বাভাবিক নিয়মে যারা নিবন্ধন করেছেন তাদেরকে এই টিকা অগ্রাধিকারভিত্তিতে দেয়া হবে। নিবন্ধনের তালিকা অনুযায়ী এই টিকা দেয়া হবে।’
টিকা প্রদান কবে শুরু হবে এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘সিনোফার্ম থেকে ১৩ জুন আরও ছয় লাখ টাকা দেশে পৌঁছাবে। এর পরেই হয়তো এর কার্যক্রম শুরু হবে।’
কোনো বিশেষ জনগোষ্ঠীকে এই ভ্যাকসিন দেয়া হচ্ছে না জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘রাজধানীর চারটি হাসপাতালসহ বেশ কয়েকটি হাসপাতালগুলো নির্বাচন করা হয়েছে সেখানেই হয়তো দেয়া হবে। সিরিয়াল অনুযায়ী যার নিবন্ধন আছে সেই অনুযায়ী ভ্যাকসিন দেয়া হবে।’
ন্যায্যতার ভিত্তিতে বিশ্বের সব দেশে করোনার টিকা নিশ্চিতের প্ল্যাটফর্ম কোভ্যাক্সের মাধ্যমে ফাইজারের টিকা দেয়া হচ্ছে বাংলাদেশকে।
কোভ্যাক্স প্ল্যাটফর্মটি গড়ে তোলা হয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ভ্যাকসিনস অ্যান্ড ইমিউনাইজেশনস (গ্যাভি) এবং কোয়ালিশন ফর এপিডেমিক প্রিপেয়ার্ডনেস ইনোভেশনসের (সিইপিআই) উদ্যোগে।
এই জোটের মাধ্যমে প্রতিটি দেশের মোট জনসংখ্যার ২০ শতাংশের জন্য বিনা মূল্যে টিকার ব্যবস্থা করার কথা। কোভ্যাক্স থেকে প্রথম পর্যায়ে ১ কোটি ২৭ লাখ ডোজ টিকা পাওয়ার কথা ছিল বাংলাদেশের। কিন্তু বিশ্বজুড়ে টিকার সংকট দেখা দেয়ায় তা সম্ভব হচ্ছে না।
ফাইজারের ডোজগুলো সংরক্ষণ করতে মাইনাস ৬০ ডিগ্রি থেকে মাইনাস ৯০ ডিগ্রি তাপমাত্রার রেফ্রিজারেটর দরকার। ২ থেকে ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় রাখা যাবে পাঁচ দিন। আর রেফ্রিজারেটরের বাইরে ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় রাখা যাবে দুই ঘণ্টা।
উৎপাদক প্রতিষ্ঠান দাবি করছে, কার্যকারিতার দিক থেকে ফাইজারের টিকা করোনা প্রতিরোধে ৯৫ শতাংশ পর্যন্ত কার্যকর। তবে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা কোভিশিল্ড, সিনোফার্মের টিকা বিবিআইবিপি-করভি, রাশিয়ার স্পুৎনিক-ভির মতো ফাইজারের টিকাও নিতে হয় দুই ডোজ করে।