করোনা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় দ্রুত রোগী শনাক্তে রাজশাহী নগরীতে ভ্রাম্যমাণ টেস্টিং বুথ বসানো হয়েছে।
নগরীর পাঁচটি স্থানে রোববার সকালে করোনা পরীক্ষার এসব বুথ বসানো হয়েছে।
স্থানগুলো হলো হড়গ্রাম বাজার, সিঅ্যান্ডবি মোড়, লক্ষ্মীপুর মোড়, সাহেব বাজার জিরো পয়েন্ট ও তালাইমারী মোড়। এসব বুথে নমুনা সংগ্রহ করে দ্রুত দেয়া হচ্ছে পরীক্ষার ফল।
জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ও সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সহযোগিতায় বিনা মূল্যে র্যাপিড অ্যান্টিজেন কিট দিয়ে এসব বুথে পরীক্ষা করা হচ্ছে। রাস্তায় চলাচল করা সাধারণ মানুষকে ডেকে নিয়ে এসব বুথে পরীক্ষা করা হচ্ছে।
ঈদের পর থেকে রাজশাহীতে করোনা পরিস্থিতির অবনতি হতে থাকে। রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে গত ১৪ দিনে মারা গেছেন ১০৭ জন।
সবশেষ শনিবার রাজশাহীর দুটি ল্যাবে ৫৪২ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ২৯২ জনের করোনা শনাক্ত হয়। এর মধ্যে রাজশাহীর ৩৬৬ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ১৮৪ জনের পজিটিভ এসেছে। আর চাঁপাইনবাবগঞ্জের ১৭৬ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ১০৮ জনের করোনা পজিটিভ এসেছে।
করোনার খারাপ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে গত বৃহস্পতিবার লকডাউনের বিধিনিষেধ আরও কঠোর করেছে প্রশাসন।
রোববার সকাল ১০টার দিকে নগরীর সাহেব বাজার জিরো পয়েন্টে জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের একটি দল বিনা মূল্যে করোনা পরীক্ষার কার্যক্রম শুরু করে।
সেখানে গিয়ে দেখা যায়, আগ্রহ নিয়েই লোকজন পরীক্ষা করছে। অনেকে বলছেন, বিনা মূল্যে ও দ্রুত ফল পাওয়া যাবে বলে করোনা পরীক্ষায় আগ্রহ বেড়েছে।
পরীক্ষার জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা মাজেদুল ইসলাম বলেন, ‘এখান দিয়েই যাচ্ছিলাম। ভাবলাম কী হয় না হয় একটু যাচাই করেই দেখি। নমুনা দিলাম, কিচ্ছুক্ষণের মধ্যেই ফল পেয়ে গেলাম। নেগেটিভ ফল আসায় বেশ স্বস্তি লাগছে।’
লাইনে দাঁড়িয়ে শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘এখানে পাশেই এক দোকানে কাজ করি। দেখলাম ফ্রি টেস্ট হচ্ছে। এটি ভালো উদ্যোগ। তাই আমিও টেস্ট করাব বলে লাইনে দাঁড়িয়েছি।’
রাজশাহী নগরীর সাহেব বাজারে এই বুথে প্রথম এক ঘণ্টায় ২৯টি টেস্ট করা হয়। এদের মধ্যে দুজনের করোনা শনাক্ত হয়।
তাদের তালিকা নিজ নিজ থানায় মনিটরিংয়ের জন্য পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া তাদের নিজ বাসায় থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। প্রতিটি বুথে প্রাথমিকভাবে ২০০ করে মোট এক হাজার লোকের করোনা পরীক্ষা করা হবে বলে জানিয়েছে সিভিল সার্জন কার্যালয়।
মহানগর পুলিশ কমিশনার আবু কালাম সিদ্দিক বলেন, ‘আমরা ফ্রি ক্যাম্পেইন করছি। এতে জানতে পারব নতুন করে রাজশাহীতে শনাক্ত কত। সারা বাংলাদেশ রাজশাহীকে নিয়ে আতঙ্কিত। সবাইকে আহ্বান করছি টেস্ট করার জন্য।
‘আজ টেস্টের বেশির ভাগ নেগেটিভ এসেছে। আমরা আশাবাদী জনগণ স্বাস্থ্যবিধি মানলে আমরা করোনা প্রতিরোধ করতে পারব।’
জেলা সিভিল সার্জন কাইয়ুম তালুকদার বলেন, ‘রাজশাহীতে কী পরিমাণ সংক্রমণ আছে, সেটা দেখতেই এই কার্যক্রম করছি। সাধারণ মানুষের মাঝে সংক্রমণ কতটা ছড়িয়ে গেছে, তার একটা আমরা ধারণা পাব।’
তিনি আরও বলেন, ‘এটির জন্য স্বাস্থ্যমন্ত্রী আমাদের এই নির্দেশ দিয়েছেন। এই ফলাফল নিয়ে আমরা বিকেলে আলোচনা করব। পর্যালোচনা করে আমরা সিদ্ধান্ত নিতে পারব লকডাউন বা বিধিনিষেধের বিষয়ে পরবর্তী নির্দেশনা কী দেয়া হবে।’