রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে করোনা ও করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা গেছে আরও আটজন। এর মধ্যে পাঁচজনই চাঁপাইনবাবগঞ্জের।
রামেক হাসপাতালের উপপরিচালক সাইফুল ফেরদৌস শনিবার নিউজবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, শুক্রবার সকাল ৯টা থেকে শনিবার সকাল ৯টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালের করোনা ইউনিটে চারজন করোনা আক্রান্ত হয়ে ও চারজন উপসর্গ নিয়ে মারা গেছে। করোনা পজিটিভ হয়ে রাজশাহীর দুই ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের দুইজন মারা গেছেন। উপসর্গ নিয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জের তিন ও রাজশাহীর একজনের মৃত্যু হয়েছে।
রামেকের করোনা ইউনিটে শুক্রবার ভর্তি হন ২২৪ জন। এদের মধ্যে করোনা পজিটিভ ১৬ জন, যাদের ১০ জন রাজশাহীর, পাঁচজন চাঁপাইনবাবগঞ্জের ও একজন নওগাঁর।
পরিচালক সাইফুল ফেরদৌস জানান, হাসপাতালের আইসিইউতে ১৬ জন করোনা আক্রান্ত রোগী ভর্তি আছেন।
তিনি জানান, হাসপাতালে শুক্রবার সকাল ৯টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ৯৪ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এর মধ্যে করোনা শনাক্ত হয় ৩৮ জন।
গত ২৪ মে থেকে ৫ জুন পর্যন্ত ১৩ দিনে হাসপাতালের করোনা ইউনিট ও আইসিউতে মারা গেছেন ১০১ জন। এর মধ্যে ৬০ জন করোনায় আক্রান্ত ছিলেন। বাকিরা করোনা উপসর্গ নিয়ে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
রামেকের অধ্যক্ষ নওশাদ আলী জানান, শুক্রবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় কলেজের ল্যাবে ৩৬১ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। রাজশাহীর ১৭১ জনের মধ্যে করোনা শনাক্ত হয় ৯৩ জনের। চাঁপাইনবাবগঞ্জের ১৮১ জনের মধ্যে শনাক্ত হয় ১১২ জনের। আর নাটোরের নয়জনের মধ্যে শনাক্ত হয় চারজন।
সীমান্তবর্তী জেলা হওয়ায় রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও নওগাঁয় হঠাৎ করেই কিছুদিন থেকে সংক্রমণ বাড়তে শুরু করে। রাজশাহীর পাশের চাঁপাইনবাবগঞ্জে এই সংক্রমণ হার ৫০ শতাংশ ছাড়িয়ে যায়।
এই অবস্থায় সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে জেলা প্রশাসন গত ২৫ মে থেকে জেলাটিতে লকডাউন ঘোষণা করে। প্রথম সপ্তাহের লকডাউন শেষে সংক্রমণ কিছুটা কমলেও আবার বাড়ানো হয় লকডাউন। নতুন করে এক সপ্তাহ বাড়িয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জে লকডাউন দেয়া হয় ৭ জুন পর্যন্ত।
পাশের জেলা নওগাঁতেও সংক্রমণ বাড়তে শুরু করে এই সময়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে জেলা প্রশাসন নিয়ামতপুর ও নওগাঁ সদর উপজেলায় সাত দিনের লকডাউন দেয় বুধবার রাত থেকে।
সংক্রমণ রাজশাহীতেও বেড়েছে গত কয়েক দিনে। সেখানেও সংক্রমণের হার ৫০ শতাংশের আশপাশে। এই পরিস্থিতিকে উদ্বেগজনক বলছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।