বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

চাঁপাইনবাবগঞ্জে করোনার ভারতীয় ধরন এল কীভাবে?

  •    
  • ৪ জুন, ২০২১ ১৮:৪৯

আক্রান্তরা কীভাবে করোনাভাইরাসের ভারতীয় ধরনে আক্রান্ত হলেন, অনুসন্ধান করেও এটা বের করতে পারেনি স্থানীয় প্রশাসন। আক্রান্তদের কন্ট্রাক্ট ট্রেসিং করা হয়েছে। বাড়ির আশপাশেই তাদের চলাচল ছিল। তাদের কারো বাড়িও সীমান্তের কাছে না।

সীমান্তবর্তী চাঁপাইনবাবগঞ্জে করোনার ভারতীয় ধরন শনাক্ত হওয়ার পর থেকে স্থানীয়দের মধ্যে উদ্বেগ দেখা দেয়। এখন দেশ জুড়েই আলোচনা চাঁপাইনবাবগঞ্জের করোনা নিয়ে। কিন্তু এখনও চিহ্নিতই করা সম্ভব হয়নি কীভাবে এ জেলায় এলো করোনার ভারতীয় ধরন।

স্থানীয় প্রশাসন অনুসন্ধানের চেষ্টা করেছে, যাদের শরীরে করোনার ভারতীয় ধরন ধরা পড়েছে তারা কোনোভাবে ভারতীয় বা ভারত ফেরত কারো সংস্পর্শে এসেছিল কিনা। তদন্ত বলছে, তারা এমন কারো সংস্পর্শেই আসেনি।

তাহলে এই ধরন এলো কী করে?

উত্তর মেলেনি। এখন পর্যন্ত স্থানীয় প্রশাসন বা স্বাস্থ্য বিভাগ কিনারা খুঁজে পাচ্ছে না। শেষ পর্যন্ত এই রহস্য খোঁজার কাজই বাদ দিয়ে দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে, আর কারো শরীরে এই ধরন আছে কিনা সেটিও আর জানার দরকার নেই।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার ডা. ফারিহা রহমান করোনার ভারতীয় ধরনে আক্রান্ত। দেড় মাস বয়সি তার একটি শিশু সন্তান রয়েছে।

ডা. ফারিহার স্বামী নুরে আলম সিদ্দিকী বলেন, ‘গত ৯ মে ফারিহার নমুনা পরীক্ষা করে করোনা ধরা পড়ে। পরে ২৩ মে আবারো পরীক্ষা করার পরও পজেটিভ রেজাল্ট এসেছে। তবে, তার শারিরিক অবস্থা স্বাভাবিক। কোনো সমস্যাই নেই। তবে আবারও একটি পরীক্ষা করানোর পর নিশ্চিত হবো নেগেটিভ হলো কি না।’

তিনি বলেন, ‘আমরা জানতে পেরেছি তার ভারতীয় ধরন শনাক্ত হয়েছে। এরপর স্থানীয় প্রশাসন জানার চেষ্টা করে, ফারিহার শরীরে ভারতীয় ধরনের করোনা কীভাবে আসতে পারে। ভারত ফেরত কারো সাথে তার কোনো সম্পৃক্ততা ছিল কিনা। আসলে এসব কিছুই ছিল না। আমরা জানিয়েছি।’

করোনায় আক্রান্তদের জন্য চাঁপাইনবাবগঞ্জের কয়েকটি আবাসিক হোটেলকে কোয়ারেন্টিন সেন্টারে পরিণত করা হয়েছে

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদরের দুই ভাই সাকিব আহমেদ ও সাফিন আহমেদ ভারতীয় ধরনে আক্রান্ত হয়েছিলেন। তারা এখন সুস্থ। তাদের বাবা ওবায়দুল হক বলেন, ‘তাদের শরীরে ভারতীয় ধরনের বিষয়টি আমরা জানতে পেরেছি তারা সুস্থ হয়ে যাবার পর। এটা খুব ভালো হয়েছে। আগেই এটা জানলে হয়তো তারা মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ত। ভেঙে পড়ত।’

ওবায়দুল হক বলেন, ‘তাদের দুই ভায়ের সাথে ভারত ফেরত বা ভারতীয় কারোরই সংশ্লিষ্টতা ছিল না। তারপরও কীভাবে এমনটা হলো বুঝতে পারছি না। ভারত ফেরত কারো সংস্পর্শে তারা এসেছিল কি না, এটা বিভিন্নভাবে জানার চেষ্টা করেছে প্রশাসনের লোকজন। গোয়েন্দা সংস্থার লোকজনও এটি নিয়ে নিবিড়ভাবে কাজ করছে। আমাদের সাথে তারা কথা বলেছেন। যা যা জানতে চেয়েছেন তা আমরা বলেছি।’

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুসরাত জাহান বলেন, ‘জেলায় যে সাত জনের শরীরে করোনার ভারতীয় ধরন শানাক্ত হয়েছে, তার পাঁচ জনের বাড়িই সদর উপজেলায়। চিহ্নিতদের চিকিৎসা নিশ্চিত করার পাশাপাশি এই ধরনটি তাদের শরীরে এলো কী করে, সেটি নিয়ে কাজ করে উপজেলা প্রশাসন। তাদের বাড়ির সামনে লাল পতাকা টাঙিয়ে দেয়া হয়, যাতে আশপাশের মানুষ এটি নিয়ে সচেতন থাকেন। আমরা ভারতীয় ধরনের সূত্র খোঁজার চেষ্টা করেছি।’

চাঁপাবনবাবগঞ্জের জেলা প্রশাসক মঞ্জুরুল হাফিজ বলেন, ‘আমরা ভারতীয় ধরনের সংক্রমণ নিয়ে অনুসন্ধান করেছি। কিন্তু এটির কোনো রুট খুঁজে পাচ্ছি না, কীভাবে এটি ঢুকল। আক্রান্তদের কন্ট্রাক্ট ট্রেসিং করা হয়েছে। বাড়ির আশপাশেই তাদের চলাচল ছিল। তাদের কারো বাড়িও সীমান্তের কাছে না। আসলে তারা কাদের মাধ্যমে এই ধরন বহন করেছে, সেটি স্পেসিফিক করে বলতে পারছি না।’

জেলা প্রশাসক বলেন, ‘ভারত থেকে যারা আসছে তাদেরকে কোয়ারেন্টিনে রাখা হচ্ছে। সেখানে থেকে ছড়ানোর কোনো সুযোগ নাই। আসলে আমরা এর উৎস খুঁজেছি। সায়েন্টিফিক ব্যাখ্যা আমরা বুঝতে পারছি না। আমরা চেষ্টা করেছি। কিছু খুঁজে পাইনি। সোনামসজিদ স্থল বন্দরে আসা ভারতীর ট্রাক চালকদের মাধ্যমেও এটি ছড়ানোর সুযোগ নেই। কারণ ভারতীয় চালকদের থাকার জায়গা আলাদা করে দিয়েছি। এখানকার শ্রমিকদের সাথেও তাদের মেশার সুযোগ নাই।

যারা শনাক্ত হয়েছে তাদের বাড়ি চিহ্নিত করা হয়েছে। তারা কেউ বের হতে পারছে না।’

রাজশাহী বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. হাবিবুল আহসান তালুকদার বলেন, ‘আমাদের নতুন করে ভারতীয় ধরন শনাক্ত করার দরকার নেই। একবার হলেই এটি আমাদের বিভাগে চলে আসে। এটি চলে এসছে। এটি আমাদের এখানে কীভাবে এলো, সেটির কোনো নিশ্চিত তথ্যও আমাদের কাছে নেই। বৈধভাবে ভারতের সাথে কোনো যোগাযোগ নাই।’

তাহলে এলো কীভাবে এ প্রশ্নের জবাবে স্বস্থ্য পরিচালক বলেন, ‘মানুষের মুভমেন্টেই এটি আসবে। বৈধভাবে নাই, এখন অবৈধভাবে হতে পারে। এটি তারা স্বীকার করেনি। তবে, ভারতীয় ধরনে আক্রান্তদের জন্য বাড়তি কিছু করনীয় নেই। এটির জন্য বাড়তি চিকিৎসাও নাই। সবার জন্য একই চিকিৎসা।’

এ বিভাগের আরো খবর