করোনাভাইরাস প্রতিরোধী ফাইজার-বায়োএনটেকের টিকার ১ লাখ ৬২০ ডোজ প্রয়োগের আগে ডাইলুয়েন্ট নামের মিশ্রণ মেশাতে হবে। এই মিশ্রণ ৭ জুন দেশে আসবে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
সংস্থাটি বলছে, এক ভায়াল টিকার সঙ্গে ডাইলুয়েন্ট মেশানোর পর মোট ছয় ডোজ টিকা তৈরি হবে।
দেশের করোনাভাইরাসের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে বুধবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বুলেটিনে সংস্থাটির মুখপাত্র নাজমুল ইসলাম এ তথ্য জানান।
প্রাথমিক পরিকল্পনা অনুযায়ী ফাইজারের টিকা শুধু রাজধানীতে দেয়া হবে। এই টিকা যারা নিবন্ধন করেছে তাদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে দেয়া হবে। এই তালিকায় শিক্ষার্থী থাকলে তাদেরও অগ্রাধিকার দেয়া হবে।
নাজমুল বলেন, ‘ফাইজার টিকা কার্যক্রম কত তারিখ থেকে শুরু হবে, তা এখনও নির্ধারণ করা হয়নি। টিকাদান কর্মসূচি পরিচালনার জন্য স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রশিক্ষণের কাজ চলমান রয়েছে।
‘কবে থেকে শুরু হবে, সে বিষয়ে বিভিন্ন পর্যায়ে আলোচনা হচ্ছে। সব কাজ শেষ হলে এ বিষয়ে জানিয়ে দিতে পারব।’
কোন হাসপাতালে দেয়া হবে এই টিকা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অনেকগুলো হাসপাতাল বিবেচনায় আছে। চূড়ান্ত বিবেচনায় টিকা যেখানে রয়েছে, সেখান থেকে দূরত্ব ও হাসপাতালের লোকবল বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
তিনি বলেন, সব কার্যক্রম শেষ হলে আগামী সাত থেকে ১০ দিনের মধ্যে এই টিকাদান কর্মসূচি শুরু করা যাবে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, একটি দ্রবণের মিশ্রণের জটিলতায় টিকা নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ডোজ প্রস্তুতে সময় ও পরিমাণে সামান্য হেরফের হলেই নষ্ট হতে পারে টিকা।
ন্যায্যতার ভিত্তিতে বিশ্বের সব দেশে করোনার টিকা নিশ্চিতের প্ল্যাটফর্ম কোভ্যাক্সের মাধ্যমে ফাইজারের টিকা দেয়া হচ্ছে বাংলাদেশকে।
কোভ্যাক্স প্ল্যাটফর্মটি গড়ে তোলা হয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ভ্যাকসিনস অ্যান্ড ইমিউনাইজেশনস (গ্যাভি) এবং কোয়ালিশন ফর এপিডেমিক প্রিপেয়ার্ডনেস ইনোভেশনসের (সিইপিআই) উদ্যোগে।
এই জোটের মাধ্যমে প্রতিটি দেশের মোট জনসংখ্যার ২০ শতাংশের জন্য বিনা মূল্যে টিকার ব্যবস্থা করার কথা। কোভ্যাক্স থেকে প্রথম পর্যায়ে ১ কোটি ২৭ লাখ ডোজ টিকা পাওয়ার কথা ছিল বাংলাদেশের। কিন্তু বিশ্বজুড়ে টিকার সংকট দেখা দেয়ায় তা সম্ভব হচ্ছে না।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, ফাইজারের ডোজগুলো সংরক্ষণ করতে মাইনাস ৬০ ডিগ্রি থেকে মাইনাস ৯০ ডিগ্রি তাপমাত্রার রেফ্রিজারেটর দরকার। ২ থেকে ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় রাখা যাবে পাঁচ দিন। আর রেফ্রিজারেটরের বাইরে ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় রাখা যাবে দুই ঘণ্টা।
উৎপাদক প্রতিষ্ঠান দাবি করছে, কার্যকারিতার দিক থেকে ফাইজারের টিকা করোনা প্রতিরোধে ৯৫ শতাংশ পর্যন্ত কার্যকর। তবে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা কোভিশিল্ড, সিনোফার্মের টিকা বিবিআইবিপি-করভি, রাশিয়ার স্পুৎনিক-ভির মতো ফাইজারের টিকাও নিতে হয় দুই ডোজ করে।