উপহার হিসেবে পাওয়া চীনের সিনোফার্ম উদ্ভাবিত বিবিআইবিপি-করভির পাঁচ লাখ ডোজ করোনাভাইরাস প্রতিরোধী টিকা থেকে পুলিশ সদস্যদেরও দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
করোনা মোকাবিলায় সামনের সারির যোদ্ধা হিসেবে পুলিশ সদস্যদেরও চীনের টিকা প্রয়োগের আওতায় আনা হলো।
গত মঙ্গলবার থেকে দেশে শুরু হয় চীনের টিকা প্রয়োগ। আপাতত ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ, সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল, স্যার সলিমুল্লাহ ও মুগদা মেডিক্যাল কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে এই টিকার প্রয়োগ চলছে।
আগামী ১০ দিনের মধ্যে সারা দেশের ৩৭টি সরকারি মেডিক্যাল কলেজে এই টিকা প্রয়োগ শুরু হবে। এর সঙ্গে পুলিশ সদস্যদেরও দেয়া হবে এই টিকা।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা নিউজবাংলাকে বলেন, চীন থেকে উপহার হিসেবে ৫ লাখ টিকা এসেছে। এই টিকা সরকারি-বেসরকারি মেডিক্যাল ও ডেন্টালের শিক্ষার্থী, নার্সিং শিক্ষার্থী এবং মেডিক্যাল টেকনোলজি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা দেয়া হচ্ছে। আগামী ১০ দিনের মধ্যে দেশে ৩৭ মেডিক্যাল কলেজের শিক্ষার্থীদের দেয়া হবে। পাশাপাশি পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের দেয়া হবে।
তিনি জানান, ৫ লাখ টিকা আড়াই লাখ জনকে দেয়া হবে। দেশে আড়াই লাখ মেডিক্যাল শিক্ষার্থী নেই। যে কারণে পুলিশ সদস্যদের এই টিকা দেয়া হবে।
কবে থেকে এই টিকা দেয়া হবে এমন প্রশ্নের জবাবে নাসিমা জানান, এ বিষয়ে এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে দ্রুই প্রয়োগ শুরু হবে।
গত ২৯ এপ্রিল জরুরি ব্যবহারে সিনোফার্মের টিকা প্রয়োগের অনুমোদন দেয় ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর। গত ১২ মে বাংলাদেশে এই টিকার ৫ লাখ ডোজ উপহার হিসেবে পাঠায় চীন সরকার। আরও ৬ লাখ ডোজ টিকা উপহার হিসেবে পাঠানোর কথা দিয়েছে বেইজিং।
এছাড়া সিনোফার্মের দেড় কোটি ডোজ টিকা কিনবে সরকার। এ টিকার প্রতি ডোজ কিনতে খরচ হবে ১০ ডলার করে, যা ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউটে উৎপাদিত কোভিশিল্ড টিকার মূল্যের চেয়ে দ্বিগুণ বেশি। সিরামের কাছ থেকে প্রতি ডোজ ৪ ডলারে কিনছে বাংলাদেশ। সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে চীন থেকে টিকা কিনবে সরকার।
চীনের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান সিনোফার্মের অধীন বেইজিং ইনস্টিটিউট অব বায়োলজিক্যাল প্রোডাক্টস উদ্ভাবিত বিবিআইবিপি-করভি নামের দুই ডোজের টিকা জরুরি ব্যবহারের জন্য অনুমোদন দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও (ডব্লিউএইচও)।
বেইজিং ইনস্টিটিউট অব বায়োলজিক্যাল প্রোডাক্টস জানিয়েছে, তাদের টিকা করোনা প্রতিরোধে ৭৯ দশমিক ৩৪ শতাংশ কার্যকর। চীন, পাকিস্তান ও সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ বেশ কয়েকটি দেশে এই টিকা প্রয়োগের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। তৃতীয় পর্যায়ের পরীক্ষামূলক ব্যবহারের ফলাফলের ভিত্তিতে সংযুক্ত আরব আমিরাত জানিয়েছে, এই টিকা ৮৬ শতাংশ কার্যকর।