জুন-জুলাইয়ের মধ্যে সিরাম ইনস্টিটিউটের টিকা পেয়ে গেলে দ্বিতীয় ডোজের টিকাদান শুরু হবে। যদি না পাওয়া যায় তাহলে চীনের সঙ্গে যে চুক্তির প্রত্যাশা করা হচ্ছে, তা হলে প্রথম ডোজের টিকাদান শুরু করবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
করোনাভাইরাসের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে বুধবার স্বাস্থ্য বুলেটিনে এ তথ্য জানান স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মুখপাত্র নাজমুল ইসলাম।
তিনি জানান, ‘চীনের সঙ্গে টিকা কেনা নিয়ে আলোচনা চলছে। আশা করা যাচ্ছে এটি খুব শিগগির আলোর মুখ দেখবে। চুক্তি হয়ে গেলে জুন-জুলাইয়ের মধ্যেই টিকাদান কর্মসূচি পুরোদমে শুরু করা যাবে।’
জুন-জুলাইয়ে ভারত নাকি চীনের টিকা দেয়া হবে, এমন প্রশ্নের জবাবে নাজমুল বলেন, ‘সিরামের টিকা যদি পেয়ে যাই, তাহলে যাদের দ্বিতীয় ডোজ বাকি রয়েছে তাদের এই টিকা দেয়া হবে। চীনের চুক্তি বিষয়ে কাজ চলছে, আমার আশা করি দ্রুত সময়ের মধ্যে আলোর মুখ দেখবে।’
তিনি বলেন, ‘টিকা নিয়ে চীনের সঙ্গে ভালোভাবে আলোচনা চলছে, চুক্তি হয়ে গেলে আগামী মাসের মধ্যে আমার টিকা পেয়ে যাব। নিবন্ধনের বিষয়ে একে অন্যকে সহযোগিতা করতে হবে। করোনা মহামারি একজন ব্যক্তির পক্ষে মোকাবিলা করা সম্ভব নয়। তাই সবাইকে মহামারি মোকাবিলায় এগিয়ে আসতে হবে।’
বুলেটিনে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মুখপাত্র বলেন, ‘এই মাহামারি মোকাবিলায় একদিকে যেমন টিকাদান কর্মসূচি চলবে, অন্যদিকে সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। সঠিক নিয়মে মাস্ক পরতে হবে। সাবান-পানি দিয়ে বারবার ২০ সেকেন্ড সময় নিয়ে হাত ধুতে হবে।’
সীমান্তবর্তী আর কোনো এলাকা লকডাউন করা হবে কি না, এমন প্রশ্নের জাবাবে তিনি বলেন, ‘এই মুহূর্তে এটা বলা যাবে না। আমরা পরিস্থিতি পর্যাবেক্ষণ করছি। যেখানে পরিস্থিতি যেমন হবে, সেই পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য জনস্বার্থ রক্ষা করে; জনস্বার্থকে নিরাপদ করার জন্য যেকোনো সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।’
এখন পর্যন্ত দেশে যা টিকাদান হয়েছে, তার প্রায় সবই ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউটের তৈরি। বাংলাদেশ সিরামের কাছ থেকে ৩ কোটি ৪০ লাখ ডোজ টিকা কিনতে ত্রিপক্ষীয় চুক্তি করে। চুক্তি অনুযায়ী, প্রতি মাসে ৫০ লাখ করে ধীরে ধীরে সেই টিকা বাংলাদেশকে দেবে প্রতিষ্ঠানটি।
কিন্তু সিরাম মাত্র ৭০ লাখ ডোজ টিকা দেয় বাংলাদেশকে। এর বাইরে ভারত সরকার উপহার হিসেবে পাঠায় ৩৩ লাখ ডোজ টিকা। যা দিয়ে এত দিন দেশে টিকা কার্যক্রম করেছে বাংলাদেশ। ভারতে মহামারির দ্বিতীয় ঢেউয়ে টিকার চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় সিরাম তাদের টিকা রপ্তানি বন্ধ করে দেয়।
টিকা রপ্তানি বন্ধ করে দিলে দেশে প্রথম ডোজ নেয়া অন্তত ১৫ লাখ মানুষকে দ্বিতীয় ডোজের টিকা দেয়া সম্ভব হয়নি। এরই মধ্যে চীনের সিনোফার্মের তৈরি টিকা কেনার বিষয়ে যোগাযোগ করে সরকার। তবে তার আগে চীন সরকারের পক্ষ থেকে বাংলাদেশকে পাঁচ লাখ ডোজ টিকা উপহার দেয়।
বুধবার সেই টিকা দেশের চার মেডিক্যাল কলেজের শিক্ষার্থীদের দেয়া শুরু হয়েছে। যা পর্যায়ক্রমে দেশের সব মেডিক্যাল কলেজের শিক্ষার্থীদের দেয়া হবে।