ব্ল্যাক ফাঙ্গাস রোগীর চিকিৎসায় ব্যবহৃত ওষুধ খুব সহজে পাওয়া যায় না। এই পরিস্থিতিতে কেউ যাতে দাম বাড়ানোর সুযোগ নিতে না পারে, সে বিষয়ে লক্ষ রাখার কথা জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
করোনাভাইরাসের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে বুধবার স্বাস্থ্য বুলেটিনে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মুখপাত্র নাজমুল ইসলাম এ কথা জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘ব্ল্যাক ফাঙ্গাস নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। পোস্ট কোভিড পরিস্থিতিতে দুই থেকে চার সপ্তাহ সময়ের মধ্যে শারীরিক কোনো পরিবর্তন দেখা দিলেই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। এর চিকিৎসা অতি ব্যয়বহুল এতে কোনো সন্দেহ নেই।
‘গতকালও আমরা মধ্যরাত পর্যন্ত বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছি। একটি গাইডলাইন তৈরি করছি। এই রোগে যেসব ওষুধপত্র রোগীকে দিতে হয় তা কীভাবে জনগণের কাছে কম মূল্যে দেয়া যায় বিষয়টি নিয়ে আমরা কাজ করছি।’
নাজমুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা খুব অল্প সময়ের মধ্যে এসব কাজ শেষ করতে পারব। তবে এই ওষুধগুলো খুব সহজে পাওয়া যায় না। এই পরিস্থিতিতে কেউ যাতে সুযোগ নিতে না পারে সেই বিষয়ে আমরা লক্ষ রাখব।’
তিনি বলেন, ‘ব্ল্যাক ফাঙ্গাস সাধারণত করোনামুক্ত হওয়ার পর আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকে। আমরা যদি সাধারণভাবে মনে রাখবার জন্য বলি, করোনা আক্রান্তের দুই থেকে তিন সপ্তাহের মধ্যে এটা দেখা দিতে পারে। করোনামুক্ত রোগীকে আমরা বলব, যেকোনো পরিবর্তন লক্ষ করলে চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।’
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এই মুখপাত্র বলেন, ‘কোনো অবস্থায় অপচিকিৎসা বা নিজের মতো ওষুধ গ্রহণ করবেন না। অত্যধিক স্টেরয়েড গ্রহণ করার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করবেন।
‘চিকিৎসকের পরামর্শ বাদে এই ধরনের ওষুধ কোনোভাবে খাওয়া যাবে না। নিজেকে নিরাপদ রাখার জন্য যে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার কথা এক বছর থেকে বলা হচ্ছে, এটা অবশ্যই মেনে চলতে হবে।’
ব্ল্যাক ফাঙ্গাস একটি মিউকরমাইকোসিস বা বিশেষ ধরনের অণুবীক্ষণিক ছত্রাকের সংক্রমণজনিত রোগ। এটি সবাইকে আক্রান্ত করে না বলেও জানান তিনি।
করোনাভাইরাস সংক্রমণের মধ্যে নতুন আতঙ্কের নাম এখন ব্ল্যাক ফাঙ্গাস। মহামারিতে নাজেহাল ভারতে ব্যাপক হারে দেখা দিয়েছে এই ছত্রাকের সংক্রমণ। দেশে অন্তত দুজনের দেহে ব্ল্যাক ফাঙ্গাস শনাক্ত হয়েছে।
দেশের একটি বেসরকারি হাসপাতালে একজন মারা যাওয়ার তথ্যও দিয়েছেন চিকিৎসকরা। তবে বিষয়টি নিয়ে আরও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে বলে জানান নাজমুল ইসলাম।
তিনি বলেন, ‘টিকা সংকটের কারণে প্রথম ডোজ নেয়া ১৫ লাখ মানুষকে দ্বিতীয় ডোজ দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। টিকা না পাওয়া পর্যন্ত আমরা অপেক্ষা করব।
‘আমরা ধৈর্য ধরব। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলব। সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করব। ৩০ মিনিট পরপর সাবান-পানি দিয়ে হাত পরিষ্কার করব।’
দেশে টিকা কার্যক্রম শুরু থেকেই ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউটের ওপর নির্ভরশীল। ভারতীয় প্রতিষ্ঠানটি থেকে ৩ কোটি ৪০ লাখ ডোজ টিকা আনতে গত বছরের ৫ নভেম্বর ত্রিপক্ষীয় চুক্তি করে ঢাকা।
চুক্তি হলেও সিরাম থেকে বাংলাদেশ টিকা পেয়েছে মাত্র ৭০ লাখ। এ ছাড়া ভারত সরকার উপহার হিসেবে পাঠিয়েছে ৩৩ লাখ টিকা।