বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

করোনার সঙ্গে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের কী সম্পর্ক

  •    
  • ২৬ মে, ২০২১ ১৩:৪০

চিকিৎসকদের ধারণা, করোনাভাইরাসের চিকিৎসায় ভারতে স্টেরয়েড ও বিভিন্ন ইমিউনোসাপ্রিজেন্টসের অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহারের ফলে বাড়ছে ব্ল্যাক ফাঙ্গাস সংক্রমণ।

করোনাভাইরাস মহামারির দ্বিতীয় ধাক্কা সামলে ওঠার আগেই বিরল মিউকরমাইকোসিসের সংক্রমণ বাড়ায় নতুন বিপর্যয়ের মুখে ভারত। ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে (কালো ছত্রাক) আক্রান্তদের চিকিৎসায় এরই মধ্যে ঘাটতি দেখা দিয়েছে ‘অ্যাম্ফোটারিসিন বি’ নামের ওষুধের।

গত এক-দেড় মাসে ভারতে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্তদের প্রায় সবাই করোনাভাইরাস থেকে সেরে ওঠার কিছুদিনের মধ্যে ছত্রাকটিতে আক্রান্ত হন। তাই প্রশ্ন উঠেছে, করোনাভাইরাসের সঙ্গে প্রাণঘাতী ব্ল্যাক ফাঙ্গাস কীভাবে সম্পৃক্ত।

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতামত ও বৈজ্ঞানিক তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে এ প্রশ্নের জবাব খোঁজার চেষ্টা করেছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। মঙ্গলবার প্রকাশ হয়েছে এ বিষয়ক প্রতিবেদনটি।

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, মিউকরমাইকোসিস এমন এক ধরনের ছত্রাকের সংক্রমণ. যার ফলে রোগীর নাক ও আশপাশে কালো দাগ, দৃষ্টিশক্তি ক্ষীণ হয়ে আসা, বুক ব্যথা, শ্বাসকষ্ট আর কাশির সঙ্গে রক্ত বের হওয়াসহ নানা উপসর্গ দেখা দেয়।

ডায়াবেটিসসহ শরীরের প্রাকৃতিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হয়ে আসার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে মিউকরমাইকোসিসের।

কিন্তু করোনাভাইরাসের সঙ্গে মিউকরমাইকোসিসের সরাসরি সম্পর্ক নেই এবং এটি ছোঁয়াচে রোগও নয়।

করোনা রোগীরাই কেন মিউকরমাইকোসিসে আক্রান্ত

স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে তথা করোনাভাইরাস মহামারির আগে বিশ্বে প্রতি ১০ লাখ মানুষের মধ্যে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১ দশমিক ৭।

অথচ ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে গত এক মাসে ১২ হাজার মানুষের দেহে ব্ল্যাক ফাঙ্গাস শনাক্ত হয়েছে। এদের সবাই করোনাভাইরাস থেকে সেরে উঠেছিলেন।

চিকিৎসকদের ধারণা, করোনাভাইরাসের চিকিৎসায় ভারতে স্টেরয়েড ও বিভিন্ন ইমিউনোসাপ্রিজেন্টসের অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহারের ফলে বাড়ছে ব্ল্যাক ফাঙ্গাস সংক্রমণের ঘটনা।

স্টেরয়েড ও ইমিউনোসাপ্রিজেন্টস কী

মানবদেহে প্রাকৃতিকভাবে যেসব হরমোন নিঃসরণ হয়, সেগুলোর কৃত্রিম সংস্করণ হলো স্টেরয়েড।

করোনাভাইরাসের কোনো সুনির্দিষ্ট চিকিৎসা বা ওষুধ এখন পর্যন্ত উদ্ভাবন হয়নি। এতে গুরুতর অসুস্থ হচ্ছে যারা, তাদের ফুসফুসে প্রদাহ কমাতে নানা ধরনের রাসায়নিকের সমন্বয়ে তৈরি স্টেরয়েড ব্যবহার করছেন চিকিৎসকরা।

আর ইমিউনোসাপ্রিজেন্টস হলো এমন ওষুধ, যেগুলো অঙ্গ প্রতিস্থাপন করা রোগীদের দেয়া হয়।

দেহের বাইরে থেকে কোনো নতুন অঙ্গের প্রতিস্থাপন করা হলে যেন ওই রোগীর দেহে তা জটিলতা তৈরি না করে, তা নিশ্চিতে নির্দিষ্ট কিছু ওষুধ প্রয়োগ করা হয়। এর মাধ্যমে রোগীর স্বাভাবিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে আনা হয়। এতে ওই রোগীর দেহে নতুন অঙ্গ সফলভাবে প্রতিস্থাপন করা সম্ভব হয়।

স্টেরয়েড ও ইমিউনোসাপ্রিজেন্টসের সঙ্গে করোনাভাইরাসের যোগসূত্র

করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের সময় দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার সর্বোচ্চ ব্যবহারের ফলে নানা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া, ক্ষতিও কমাতে সহায়ক স্টেরয়েড। কিন্তু একই সঙ্গে এটি দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে ফেলে এবং ডায়াবেটিস আছে বা নেই এমন সব রোগীর রক্তেই শর্করার পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়।

অন্যদিকে করোনাভাইরাস খুব প্রাণঘাতী না হলেও ডায়াবেটিস, ক্যানসার, অঙ্গ প্রতিস্থাপনসহ বিভিন্ন শারীরিক জটিলতা এ ভাইরাসকে প্রাণঘাতী করে তোলে। এর মধ্যে অঙ্গ প্রতিস্থাপনকারী রোগীদের ওপর ইমিউনোসাপ্রিজেন্টস প্রয়োগে তাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তলানিতে এসে ঠেকে। এর ওপর তারা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলে স্টেরয়েড ব্যবহার আর পুরো বিষয় মিলিয়ে অনেকটা আগুনে ঘি ঢালার মতো কাজ করে।

আইসিইউতে হিউমিডিফায়ারের ব্যবহার

ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্তদের প্রায় সবাই করোনায় গুরুতর অসুস্থ হয়ে আইসিইউতে কৃত্রিমভাবে অক্সিজেন নিয়েছেন।

অক্সিজেন সাপোর্ট দিতে বাতাসে আর্দ্রতা রক্ষায় হিউমিডিফায়ার যন্ত্রের ব্যবহার আবশ্যক। আর অতি আর্দ্রতা ছত্রাক জন্মাতে সাহায্য করে। এ ক্ষেত্রে ভারতের উষ্ণ-আর্দ্র আবহাওয়াও কিছুটা দায়ী।

যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্রের (সিডিসি) তথ্য অনুযায়ী, মিউকরমাইকোসিসে মৃত্যুহার ৫৪ শতাংশ।

আক্রান্তরা বেঁচে গেলেও বেশিরভাগই হারান এক বা দুটি চোখ। জীবন বাঁচাতে অনেকের চোয়ালও অস্ত্রোপচার করে ফেলে দিতে হয়।

এ বিভাগের আরো খবর