বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ব্ল্যাক ফাঙ্গাস কি ছোঁয়াচে

  •    
  • ২৫ মে, ২০২১ ১২:১৮

ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের সংস্পর্শ এড়ানো প্রায় অসম্ভব। তবে বেশির ভাগ মানুষ এই ছত্রাকের সংস্পর্শে এলেও তাদের আক্রান্ত করতে পারে না এটি। বিরল এ রোগটিতে আক্রান্ত হওয়ার প্রধান কারণ অত্যধিক দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা।

ভারতে করোনাভাইরাসের পর নতুন আতঙ্ক প্রাণঘাতী মিউকরমাইকোসিস বা ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের (কালো ছত্রাক) সংক্রমণ। দক্ষিণ এশিয়ার অন্য দেশেও রোগটি শনাক্তের খবর আসছে। প্রশ্ন উঠেছে, মৃত্যুহার ৫০ শতাংশের বেশি হওয়া এ রোগটিও করোনাভাইরাসের মতো ছোঁয়াচে কি না।

অনেক আগেই সে উত্তর দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্র (সিডিসি)। তাদের তথ্য বলছে, রোগটি একেবারেই ছোঁয়াচে নয়। অর্থাৎ ব্যক্তি থেকে ব্যক্তিতে কিংবা প্রাণী থেকে ব্যক্তিতে এটি ছড়ায় না।

প্রাণঘাতী এ রোগে মানুষ আক্রান্ত হয় তখনই, যখন বাতাসে ভেসে বেড়ানো কিংবা মাটিতে থাকা ছত্রাকের পরাগ শ্বাসতন্ত্র বা ত্বকের মাধ্যমে মানবদেহে প্রবেশ করে।

ফলে এর সংস্পর্শ এড়ানো প্রায় অসম্ভব। তবে বেশির ভাগ মানুষ এই ছত্রাকের সংস্পর্শে এলেও তাদের আক্রান্ত করতে পারে না এটি। বিরল এ রোগটিতে আক্রান্ত হওয়ার প্রধান কারণ অত্যধিক দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা।

ভারতে হঠাৎ ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের প্রকোপ বাড়ল কেন

সিডিসি বলছে, স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে অর্থাৎ করোনাভাইরাস মহামারির আগে বিশ্বে প্রতি ১০ লাখ মানুষে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১ দশমিক ৭।

অথচ শুধু ভারতে গত এক মাসে কমপক্ষে ৯ হাজার মানুষের দেহে রোগটি শনাক্ত হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। প্রত্যেকেই করোনাভাইরাস থেকে সেরে উঠেছিলেন।

চিকিৎসকদের ধারণা, করোনাভাইরাসের সংক্রমণে গুরুতর অসুস্থ রোগীদের প্রাণ বাঁচাতে স্টেরয়েডের ব্যবহারের ফলে মিউকরমাইকোসিসে আক্রান্ত হচ্ছেন অনেকে।

মানবদেহে প্রাকৃতিকভাবে যেসব হরমোন নিঃসরণ হয়, সেগুলোর কৃত্রিম সংস্করণ হলো স্টেরয়েড।

করোনাভাইরাসের কোনো সুনির্দিষ্ট চিকিৎসা বা ওষুধ এখন পর্যন্ত উদ্ভাবন হয়নি। এতে গুরুতর অসুস্থ হচ্ছে যারা, তাদের ফুসফুসে প্রদাহ কমাতে নানা ধরনের রাসায়নিকের সমন্বয়ে তৈরি স্টেরয়েড ব্যবহার করছেন চিকিৎসকরা।

করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের সময় দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার সর্বোচ্চ ব্যবহারের ফলে নানা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া, ক্ষতিও কমাতে সহায়ক স্টেরয়েড। কিন্তু একই সঙ্গে এটি দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে ফেলে এবং ডায়াবেটিস আছে বা নেই এমন সব রোগীর রক্তেই শর্করার পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়।

ধারণা করা হচ্ছে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অত্যধিক দুর্বল হয়ে যাওয়ার কারণে মিউকরমাইকোসিসের রোগী বাড়ছে। ডায়াবেটিসের কারণে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এমনিতেই কম থাকে, করোনাভাইরাস যা আরও বাড়িয়ে তোলে।

এর ওপর করোনার চিকিৎসায় স্টেরয়েড ব্যবহার করা তা অনেকটা আগুনে ঘি ঢালার মতো কাজ করে।

চিকিৎসকদের মতে, মানবদেহ অসংখ্য ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাকের জীবাণুর চারণক্ষেত্র। কিন্তু দেহের স্বাভাবিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার কারণে সেগুলো কোনো অসুখ তৈরি করতে পারে না।

কিন্তু অন্য কোনো জটিল রোগ বা চিকিৎসার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে গেলে তখন মানবদেহে বাসা বাঁধার সুযোগ পায় ছত্রাক।

‘মিউকর মোল্ড’ জাতীয় একধরনের শ্লেষ্মা থেকে মিউকরমাইকোসিস ছড়ায়। এই শ্লেষ্মার দেখা মেলে মূলত মাটি, গাছ, সার, পচে যাওয়া ফল-সবজিতে, যা সবকিছুতেই ছড়াতে পারে। মাটি ও বাতাসের মাধ্যমে নাক হয়ে সুস্বাস্থ্যের অধিকারী মানুষকেও আক্রান্ত করতে পারে এটি।

তাই প্রাণঘাতী এ রোগ এড়াতে স্যাঁতসেঁতে পরিবেশে না থাকার পরামর্শও দেন চিকিৎসকরা।

এ বিভাগের আরো খবর