ঈদুল ফিতর উপলক্ষে স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করে মানুষ যেভাবে ভিড় জমিয়ে বাড়ি ফিরছিল তখনই জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা শঙ্কা প্রকাশ করে আসছিলেন, দেশে আবার বাড়তে পারে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ। সেই শঙ্কাই সত্যি হচ্ছে।
ঈদের পর গত এক সপ্তাহ ধারাবাহিকভাবে করোনায় শনাক্তের এবং মৃত্যুর সংথ্যা বেড়েই চলছে।
গত শনিবার করোনা শনাক্ত হয়েছিল ২৬১ জনের দেহে, যা গত ১৩ মাসের মধ্যে সবচেয়ে কম ছিল। এ সময় ২২ জনের মৃত্যু যা ৫৫ দিনের মধ্যে সবচেয়ে কম ছিল।
এরপর আবার বাড়তে থাকে শনাক্তের সংখ্যা। রোববার করোনা শনাক্ত হয়েছিল ৩৬৩ জনের দেহে। এসময় মধ্যে মৃত্যু হয় ২৫ জনের। সোমবার ৬৯৮ জনের দেহে এই সংক্রমণ ধরা পড়ে। এসময় মৃত্যু হয় ৩২ জনের।
মঙ্গলবার সংক্রমণ হাজার ছাড়ায়। ওই দিন আরও ১ হাজার ২৭২ জনের শরীরে। এসময়ের মধ্যে নতুন করে মৃত্যু ৩০ হয়। বুধবার ১ হাজার ৬০৮ জনের শরীরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়ে। এদিন মৃত্যু হয় ৩৭ জনের।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বৃহস্পতিবার সংক্রমণ ধরা পড়ল ১ হাজার ৪৫৭ জনের শরীরে। মৃত্যু হয়েছে ৩৬ জনের।
দেশে এ পর্যন্ত করোনা শনাক্ত হয়েছে ৭ লাখ ৮৫ হাজার ১৫৪ জনের শরীরে। এর মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ১২ হাজার ২৮৪ জনের।
গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের ৪৮২টি ল্যাবে ১৯ হাজার ৪৩৭টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। গত একদিনে পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ৭ দশমিক ৫০ শতাংশ। মোট শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৬০ শতাংশ।
করোনা থেকে গত এক দিনে সুস্থ হয়েছেন আরও ১ হাজার ৩৭৮ জন। এখন পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ৭ লাখ ২৭ হাজার ৫১০ জন। সুস্থতার হার ৯২ দশমিক ৬৫ শতাংশ।
২৪ ঘণ্টায় মৃতদের মধ্যে ৩৬ জনের মধ্যে পুরুষ ২৬ জন, নারী ১০ জন। তাদের মধ্যে বয়সের দিক থেকে বিশোর্ধ্ব দুই, ত্রিশোর্ধ্ব এক, চল্লিশোর্ধ্ব পাঁচ, পঞ্চাশোর্ধ্ব নয় ও ষাটোর্ধ্ব ১৯ জন।
বিভাগ অনুযায়ী ঢাকা বিভাগে ২৪ ঘণ্টায় ১২ জনের মৃত্যু, চট্টগ্রাম বিভাগে মৃত্যু হয়েছে ১৪ জনের। এ ছাড়া, রাজশাহী বিভাগে তিন, খুলনায় দুই, বরিশালে এক, সিলেটে তিন ও ময়মনসিংহে এক জনের মৃত্যু হয়েছে।
দেশে প্রথম করোনা সংক্রমণ ধরা পড়ে গত বছরের ৮ মার্চ। ১০ দিন পর ১৮ মার্চ প্রথম মৃত্যুর সংবাদ দেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এর আগে ২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর চীনের উহান শহরে করোনাভাইরাস সংক্রমণের তথ্য প্রকাশ করা হয়। ২০২০ সালের ৪ জানুয়ারি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা চীনে ভাইরাসটির প্রাদুর্ভাবের কথা ঘোষণা করে।
পরিস্থিতি বিবেচনা করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর গত বছরের ৪ জানুয়ারি থেকেই দেশের বিমানবন্দরসহ সব স্থল ও নৌবন্দরে বিদেশ থেকে আসা যাত্রীদের স্ক্রিনিং শুরু করে। ওই বছরের ৪ মার্চ সমন্বিত করোনা কন্ট্রোল রুম চালু করা হয়।