কর্মক্ষেত্রে দীর্ঘসময় কাজ করার পরোক্ষ প্রভাবে ২০১৬ সালে প্রাণ হারিয়েছেন সাত লাখ ৪৫ হাজার মানুষ।
আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) সঙ্গে যৌথভাবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) করা গবেষণায় এমন তথ্য উঠে এসেছে।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া ও পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোতে দীর্ঘ কর্মঘণ্টার সমস্যা সবচেয়ে বেশি।
২০১৬ সাল থেকে পরবর্তী চার বছরে সংগৃহীত তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, অতিরিক্ত কাজের চাপে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ ও হৃদরোগসহ নানা গুরুতর স্বাস্থ্য জটিলতায় ভুগছেন কোটি মানুষ।
ডব্লিউএইচও আরও বলছে, ২০২০ সালের তথ্য গবেষণায় অন্তর্ভুক্ত হয়নি। কিন্তু করোনাভাইরাস মহামারির কারণে গত এক বছরে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়েছে।
গবেষণায় দেখা যায়, সপ্তাহে ৩৫ থেকে ৪০ ঘণ্টা যারা কাজ করেন, তাদের তুলনায় ৫৫ ঘণ্টা বা এর বেশি কাজ করা ব্যক্তিদের মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের ঝুঁকি ৩৫ শতাংশ ও হৃদরোগের ঝুঁকি ১৭ শতাংশ বেশি।
গবেষণায় দেখা যায়, অতিরিক্ত কাজের কারণে প্রাণ হারানো ব্যক্তিদের তিন-চতুর্থাংশই মধ্যবয়সী বা এর বেশি বয়সী।
গবেষণায় বলা হচ্ছে, মহামারি ও লকডাউনের প্রভাবে অর্থনীতি ধীরগতির হয়ে যাওয়া এবং বাড়ি থেকে অফিসের কাজ বেড়ে যাওয়ায় কাজ করার সময় বেড়েছে।
ডব্লিউএইচওর কারিগরি কর্মকর্তা ফ্র্যাঙ্ক পেগা বলেন, ‘বিভিন্ন দেশ যখন জাতীয় পর্যায়ে লকডাউন আরোপ করেছে, তখন কর্মঘণ্টা ১০ শতাংশ বেড়েছে বলে প্রমাণ পেয়েছি আমরা; বরং কর্মঘণ্টা কমিয়ে আনাই কর্মী ও নিয়োগদাতা উভয়ের জন্য লাভজনক। কারণ এর ফলে উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি পায়।’
বিশেষ করে অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে দীর্ঘসময় কর্মীদের কাজের চাপে আটকে রাখা নির্বুদ্ধিতার পরিচয় বলেও উল্লেখ করেন পেগা।
গবেষণা প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, পেশাগত কারণে বিভিন্ন রোগে ভোগাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি রয়েছে দীর্ঘসময় কাজ করার ফলে সৃষ্ট শারীরিক ও মানসিক জটিলতা।
তাই কর্মীদের স্বাস্থ্যঝুঁকি মূল্যায়নের সময় নিয়োগদাতাদের কর্মঘণ্টার বিষয়টিতেও খেয়াল রাখার পরামর্শ দিচ্ছে ডব্লিউএইচও।