ভারতে প্রথম শনাক্ত হওয়া ভিন্ন বৈশিষ্ট্যের করোনাভাইরাসে শিশুদের আক্রান্ত হওয়ার হার ও ঝুঁকি বেশি বলে জানিয়েছেন সিঙ্গাপুরের শিক্ষামন্ত্রী চান চুন সিং।
স্থানীয় সময় রোববার তিনি এ উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, আগের তুলনায় বেশিসংখ্যক শিশু করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছে বলে সিঙ্গাপুরে চলতি সপ্তাহে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সশরীরে পাঠদান কর্মসূচি বন্ধের উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে।
দেশটির সব প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বুধবার থেকে অনলাইনে পাঠদান শুরু করতে যাচ্ছে, যা চলবে কমপক্ষে ২৮ মে পর্যন্ত। একই সঙ্গে দ্রুততম সময়ে শিশুদের করোনা প্রতিরোধী টিকা দিতে উদ্যোগী হচ্ছে সিঙ্গাপুরের সরকার।
চান চুন সিং বলেন, ‘বেশ কয়েকটি ভিন্ন বৈশিষ্ট্যের করোনাভাইরাস শিশুদের বেশি আক্রান্ত করছে। তবে স্বস্তির বিষয় হলো, এসব ভাইরাসের সংস্পর্শে আসা কোনো শিশুই গুরুতর অসুস্থ হয়নি। সবারই মৃদু উপসর্গ আছে।’
সিঙ্গাপুরে রোববার ৩৮ জনের দেহে করোনা শনাক্ত হয়, যা গত সেপ্টেম্বরের পর সর্বোচ্চ। প্রত্যেকেই স্থানীয়ভাবে সংক্রমিত। বিশেষ করে এদের মধ্যে ১৭ জন কীভাবে আক্রান্ত হয়েছেন, তা অস্পষ্ট। আক্রান্তদের মধ্যে একই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের চার শিশুও আছে।
দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী ওং ইয়ে কুং জানান, ভারতে শনাক্ত বি.১.৬১৭ ভ্যারিয়েন্টটি শিশুদের দেহে অধিক সংক্রমণযোগ্য বলে নিশ্চিত করেছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। তবে এখন পর্যন্ত কত শিশু এতে আক্রান্ত হয়েছে, সে বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
গত বছর বৈশ্বিক মহামারি শুরু হওয়ার পর থেকে সিঙ্গাপুরে এ পর্যন্ত ৬১ হাজারের বেশি রোগী শনাক্ত হয়েছে। প্রাণহানি হয়েছে মাত্র ৩১ জনের।
এশিয়ার অন্যতম বাণিজ্যের কেন্দ্রে ৫৭ লাখ মানুষের বাস। মহামারি শুরুর প্রথম কয়েক মাসে সিঙ্গাপুরে করোনাভাইরাসের দৈনিক সংক্রমণ ছিল শূন্যের কাছাকাছি। বিদেশি শ্রমনির্ভর দেশটিতে মূলত সংক্রমণ শুরু হয় প্রবাসী শ্রমিকদের মাধ্যমেই।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অন্যান্য দেশের তুলনায় সিঙ্গাপুরে এখনও সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের মধ্যে আছে। তবে দৈনিক সংক্রমণ সম্প্রতি বৃদ্ধি পাওয়ায় রোববার থেকে স্বাস্থ্যবিধি কঠোর করেছে দেশটির সরকার।
সিঙ্গাপুরের মোট জনসংখ্যার পাঁচ ভাগের এক ভাগই করোনাভাইরাসের দুই ডোজ টিকা নিয়েছেন। ফাইজার-বায়োএনটেক ও মডার্নার টিকা দেয়া হচ্ছে দেশটিতে।
শুরুতে ৪৫ বছরের বেশি বয়সীদের টিকা নেয়ার অনুমোদন দেয়া হয় সিঙ্গাপুরে। চলতি মাস থেকে ৪৫ বছরের কম বয়সীদের টিকা কর্মসূচির আওতায় আনা হচ্ছে।
নিয়ন্ত্রক সংস্থার অনুমোদন পেলেই ১৬ বছরের কম বয়সীদের ফাইজারের টিকা দেবে সিঙ্গাপুর সরকার।
করোনাভাইরাস মহামারি শুরু হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত বিশ্বের সব দেশেই শিশুদের গুরুতর অসুস্থতা ও প্রাণহানির ঘটনা বেশ বিরল।