বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

সংকটেও প্রতিবেশীদের টিকা দিতে চায় ভারত

  •    
  • ১৬ মে, ২০২১ ১৩:৪৭

চলমান পরিস্থিতিতে প্রতিবেশী দেশগুলিতে টিকা রপ্তানিতেই প্রাধান্য দিচ্ছে ভারত সরকার। তাদের মতে, ভারতীয় উপমহাদেশে বৃহত্তম শক্তিশালী দেশ হিসেবে নিজেদের কর্তৃত্ব ধরে রাখার ক্ষেত্রে বিপদে-আপদে প্রতিবেশীদের পাশে থাকা জরুরি। তাই পরিমাণে কম হলেও, টিকা রপ্তানি চলবে।

ভারত নিজেই আছে করোনাভাইরাস প্রতিরোধী টিকার মহা সংকটে। প্রয়োজন অনুযায়ী টিকা পাচ্ছে না অনেক রাজ্য। এরপরও কূটনৈতিক অবস্থান ধরে রাখতে বাংলাদেশসহ প্রতিবেশী দেশগুলোতে টিকার পাঠাতে বদ্ধ পরিকর নয়া দিল্লি।

কেন্দ্রীয় সরকারের বরাতে রোববার এমন একটি সংবাদ প্রকাশ করেছে দেশটির প্রভাবশালী বাংলা সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার

দক্ষিণ এশিয়ার প্রতিটি দেশেই চলছে করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি নাকাল ভারত। প্রায় প্রতিদিনই দেশটিতে করোনায় শনাক্ত ও মৃত্যুর রেকর্ড হচ্ছে। হাসপাতালগুলো পড়েছে তীব্র অক্সিজেন সংকটে।

অবস্থা বেগতিক না হলেও করোনার দ্বিতীয় ঢেউ বেশ ভোগাচ্ছে বাংলাদেশকে। মালদ্বীপের অবস্থা ভয়াবহ। দেশটিতে শনাক্ত হার প্রায় ৬০ শতাংশ। মালেতে চলছে কারফিউ। করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে ভেঙে পড়েছে নেপালের স্বাস্থ্যসেবা অবকাঠামো।

এই সবগুলো দেশেই করোনা প্রতিরোধী টিকা সরবরাহ করে আসছিল ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট। অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার উদ্ভাবিত টিকা ‘কোভিশিল্ড’ নামে উৎপাদন করছে পুনেভিত্তিক বিশ্বের সবচেয়ে বড় টিকা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানটি।

বাংলাদেশ করোনা প্রতিরোধী টিকা কার্যক্রমের শুরু থেকেই সিরামের ওপর নির্ভর করে আসছিল। ভারতীয় প্রতিষ্ঠানটি থেকে ৩ কোটি ডোজ টিকা আনতে গত বছরের ৫ নভেম্বর ত্রিপক্ষীয় চুক্তি করে ঢাকা। চুক্তি অনুষ্ঠানে ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার বিক্রম দোরাইস্বামীও।

চুক্তি অনুযায়ী প্রতি মাসে ৫০ লাখ ডোজ করে ছয় ধাপে দেশে ৩ কোটি ডোজ টিকা পৌঁছানোর কথা থাকলেও সিরাম তা পারছে না। দুই ধাপে ৭০ লাখ ডোজ টিকা দিতে পেরেছে প্রতিষ্ঠানটি। বাকি টিকা পাওয়া নিয়ে তৈরি হয়েছে বড় অনিশ্চয়তা।

সিরাম থেকে ৫০ লাখ ডোজের প্রথম চালানটি আসে গত জানুয়ারিতে। ফেব্রুয়ারিতে দ্বিতীয় চালানে টিকা আসে ২০ লাখ ডোজ। তবে কেনা টিকার বাইরে ভারত সরকার তিন ধাপে বাংলাদেশকে উপহার হিসেবে দিয়েছে ৩৩ লাখ ডোজ টিকা। সব মিলিয়ে দেশে টিকার মজুত দাঁড়ায় ১ কোটি ৩ লাখ ডোজ।

এর মধ্যে ৭০ লাখ ডোজ টিকা মজুত নিয়ে চলতি বছরের ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হয় করোনা প্রতিরোধী গণটিকা কার্যক্রম।

গণটিকাদান শুরুর ৭৮ দিনের মাথায় ২৫ এপ্রিল প্রথম ডোজ বন্ধ করে দেয়া হয়। তত দিনে প্রথম ডোজ প্রয়োগ করা হয় ৫৮ লাখ ১৯ হাজার ৬৪৬ জনকে। এদের সবার দ্বিতীয় ডোজ লাগবেই। প্রথম ডোজে যাদের সিরামের টিকা দেয়া হয়েছে, তাদের সবার টিকা নিশ্চিত করতে হলে আরও অন্তত ১৩ লাখ ৩৯ হাজার ২৯২ ডোজ লাগবে।

সরকারের মজুতে সে পরিমাণ টিকা নেই। এমন অবস্থায় দ্বিতীয় ডোজ প্রয়োগের সময় সীমা আট সপ্তাহের জায়গায় ১২ সপ্তাহ করা হবে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

এর মধ্যে ভারতে করোনার সংক্রমণ বেড়েছে। সেখানে করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্তের সংখ্যা প্রায়ই ছাড়াচ্ছে ৪ লাখ। এই পরিস্থিতিতে সিরাম নিজ দেশেই টিকার চাহিদা মেটাতে পারছে না।

সিরাম তার সক্ষমতা অনুযায়ী টিকা উৎপাদন করতে পারছে না কাঁচামালের অভাবে। যুক্তরাষ্ট্র সরকার কাঁচামাল রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দেয়ায় এ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।

টিকা সংকটের বিষয়টি আঁচ করতে পেরে চীন ও রাশিয়ার শরণাপন্ন হয়েছে বাংলাদেশ। চীনের সিনোফার্মের টিকা এবং রাশিয়ার স্পুতনিক ভি টিকা আনার ব্যাপারে চুক্তিও করেছে সরকার।

এর মধ্যে গত ১২ মে সিনোফার্মের উদ্ভাবিত করোনা প্রতিরোধী টিকা বিবিআইবিপি-করভির ৫ লাখ ডোজ উপহার হিসেবে ঢাকায় পাঠিয়েছে। উপমহাদেশের অন্যান্য দেশগুলোকেও টিকা দেয়ার তৎপরতা চালাচ্ছে বেইজিং।

চীনের এই তৎপরতা ভাবাচ্ছে ভারতকে। তাই টিকা ইস্যুতে প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্কে যাতে ভাটা না পড়ে সেদিকে নজর দিচ্ছে দিল্লি।

আনন্দবাজার লিখেছে, এমন পরিস্থিতিতে প্রতিবেশী দেশগুলিতে টিকা রপ্তানিতেই প্রাধান্য দিচ্ছে ভারত সরকার। তাদের মতে, ভারতীয় উপমহাদেশে বৃহত্তম শক্তিশালী দেশ হিসেবে নিজেদের কর্তৃত্ব ধরে রাখার ক্ষেত্রে বিপদে-আপদে প্রতিবেশীদের পাশে থাকা জরুরি। তাই পরিমাণে কম হলেও, টিকা রপ্তানি চলবে।

এ বিভাগের আরো খবর