সংক্রমণের দ্বিতীয় বছরে করোনাভাইরাস আরও বেশি প্রাণঘাতী হবে বলে সতর্ক করে দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।
সংস্থাটির মহাপরিচালক (ডিজি) টেডরোস আধানম গেব্রিয়েসুস শুক্রবার এমন সতর্কবার্তা দেন।
তিনি বলেন, ‘প্রথম বছরের চেয়ে দ্বিতীয় বছরে অনেক বেশি প্রাণঘাতী মহামারি দেখার অপেক্ষায় আছি আমরা।’
বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে জানানো হয়, ডব্লিউএইচওর ডিজি এমন এক সময়ে বার্তাটি দিলেন যখন জাপান আরও তিনটি অঞ্চলে জরুরি অবস্থা জারি করেছে।
অলিম্পিক শুরু হওয়ার মাত্র ১০ সপ্তাহ আগে এমন ব্যবস্থা নিল পূর্ব এশিয়ার দেশটি। এমন বাস্তবতায় সাড়ে ৩ লাখের বেশি স্বাক্ষর সংগ্রহ করে অলিম্পিক গেমস বাতিলের জন্য একটি পিটিশন দিয়েছে বন্ধের পক্ষের প্রচারকারীরা।
জাপানে মে মাসের শেষ পর্যন্ত জরুরি অবস্থা ছিল টোকিওসহ বেশ কিছু শহরে। সে তালিকায় নতুন করে যুক্ত হলো হিরোশিমা, ওকায়ামা ও উত্তর হোক্কাইদো।
করোনার চতুর্থ ঢেউ মোকাবিলা করতে গিয়ে চাপে পড়েছে জাপানের চিকিৎসা ব্যবস্থা। দেশটিতে এ গ্রীষ্মে অলিম্পিক গেমস আয়োজন বন্ধে জনমত দিন দিন জোরালো হচ্ছে।
টোকিওর সাবেক গভর্নর পদপ্রার্থী কেনজি উৎসুনোমিয়া রাজধানীর সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষগুলোর কাছে অলিম্পিক গেমস বন্ধে পিটিশন দিয়েছেন। তিনি খেলার চেয়ে জীবনকে অগ্রাধিকার দিতে আয়োজকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
জাপানের মতো দুঃসংবাদ আছে তাইওয়ানের জন্যও। দেশটির রাজধানী তাইপেতে বিনোদনের ভেন্যু, লাইব্রেরি ও স্পোর্টস সেন্টারগুলো অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রাখা হয়েছে।
পাইলটদের মধ্যে নতুন করে সংক্রমণ ছড়ানোর পর তাইওয়ান এ ব্যবস্থা নেয়।
করোনা নিয়ন্ত্রণে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় দেশগুলোর একটি তাইওয়ানে। দ্বীপরাষ্ট্রটিতে ১ হাজার ২৯০ জনের দেহে করোনা শনাক্ত হয়েছে। মৃত্যু হয়েছে মাত্র ১২ জনের।
ভারতে প্রয়োগ শুরু হচ্ছে রাশিয়ার টিকার
করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ে বিপর্যস্ত ভারতে প্রয়োগ শুরু হচ্ছে রাশিয়ার টিকা স্পুৎনিক-ভি। এর মধ্য দিয়ে দেশটিতে প্রথমবারের মতো বিদেশি কোনো টিকার প্রয়োগ হচ্ছে।
প্রথম ব্যাচে রাশিয়ার টিকার দেড় লাখ ডোজ ১ মে আসে ভারতে। আগামী কয়েক দিনের মধ্যে দ্বিতীয় চালান আসার কথা রয়েছে।
ভারতের শীর্ষ ওষুধ উৎপাদনকারী কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে স্পুৎনিক-ভি উৎপাদনে চুক্তি হয়েছে রাশিয়ার। ভারতে বছরে এ টিকার ৮৫ কোটি ডোজ উৎপাদনের লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছে।
বিশ্বে অন্য সব দেশে দৈনিক যতসংখ্যক মানুষ করোনায় আক্রান্ত হচ্ছে, শুধু ভারতেই সে পরিমাণ মানুষের দেহে রোজ ভাইরাসটি শনাক্ত হচ্ছে।
সরকারি হিসাব অনুযায়ী, ভারতে শুক্রবার পর্যন্ত করোনায় মৃত্যু হয়েছে ২ লাখ ৬০ হাজারের বেশি মানুষের।
চীনের উহানে ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে করোনা প্রথম ধরা পড়ে। এরপর থেকে শুক্রবার পর্যন্ত ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে বিশ্বজুড়ে ৩৩ লাখ ৪৬ হাজার ৮১৩ জন মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন বলে এএফপির হিসাবে জানানো হয়েছে।