দেশে করোনাভাইরাস প্রতিরোধী অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা গ্রহীতাদের মধ্যে ৯২ থেকে ৯৭ শতাংশের শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে।
এক যৌথ গবেষণায় এই দাবি করেছে রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) ও আন্তর্জাতিক উদরাময় রোগ গবেষণা কেন্দ্র (আইসিডিডিআরবি)।
বুধবার রাতে আইইডিসিআরের ওয়েবসাইটে এই গবেষণার প্রাথমিক ফল প্রকাশ করা হয়।
অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা ‘কোভিশিল্ড’ নামে উৎপাদন করছে ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট। আর এই টিকা দিয়েই দেশে গত ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে চলছে গণটিকা কার্যক্রম।
শুরু থেকেই আইইডিসিআর ও আইসিডিডিআরবি যৌথভাবে টিকা গ্রহণকারীদের রক্তে কোভিড-১৯ অ্যান্টিবডির উপস্থিতি সংক্রান্ত গবেষণা পরিচালনা করছে।
এই গবেষণার আওতায় দেশের বিভিন্ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ৬ হাজার ৩০০ টিকা গ্রহণকারীর মধ্যে টিকা গ্রহণ পরবর্তী দুই বছর পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে রক্তে অ্যান্টিবডির উপস্থিতি পর্যালোচনা করা হবে।
গবেষণার প্রাথমিক ফলাফল পর্যালোচনায় দেখা যায়, কোভিশিল্ড টিকার প্রথম ডোজ গ্রহণের পর ১২০ জনের ক্ষেত্রে এক মাসে ৯২ শতাংশ এবং দুই মাস পর ৯৭ শতাংশ ব্যক্তির শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে। সকল বয়সের টিকা গ্রহীতার শরীরেই অ্যান্টিবডির উপস্থিতি পাওয়া গেছে।
অন্যান্য অসুস্থতা (কো-মরবিডিটি) থাকার বা না থাকার সঙ্গে অ্যান্টিবডির উপস্থিতির তেমন কোনো পার্থক্য পাওয়া যায়নি বলেও দাবি করা হয়েছে এই গবেষণার প্রাথমিক ফলাফল পর্যালোচনায়। এতে বলা হয়েছে, টিকা গ্রহীতাদের মধ্যে যাদের কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হওয়ার ইতিহাস রয়েছে তাদের শরীরে চারগুণ বেশি অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে।
গবেষকরা বলছেন, এতে প্রতীয়মান হয় যে, বাংলাদেশি নাগরিকদের মধ্যে কোডিশিল্ড টিকা গ্রহণের পর শরীরে কোভিড-১৯ অ্যান্টিবডি তৈরি হচ্ছে।
চলমান গবেষণার মাধ্যমে ভবিষ্যতে এই টিকা গ্রহণকারীদের শরীরে অ্যান্টিবডির উপস্থিতি সংক্রান্ত হালনাগাদ তথ্য পাওয়া যাবে।
এর আগে এক গবেষণায় দেখা যায়, দেশে কোভিশিল্ড টিকা গ্রহণকারীদের ৯৮ থেকে ৯৯ শতাংশের দেহে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে।
ব্যক্তিগত উদ্যোগে গবেষণাটি করেছিলেন শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের সহকারী অধ্যাপক আশরাফুল হক।
তার গবেষণায় দেখা যায় টিকা নেয়া ৫০০ জনের মধ্যে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন মাত্র ৭ জন। তবে তাদের কোনো শ্বাসকষ্ট হয়নি। এমনকি হাসপাতালে ভর্তি করা লাগেনি। করোনার তীব্র কোনো মাত্রা তাদের মধ্যে দেখা যায়নি।