দেশে কতগুলো আইসিইউ ইউনিট আছে, তার মধ্যে কতগুলোতে রোগী আছে আর কতগুলো ফাঁকা আছে, তার হিসাব নিয়মিতভাবে দেয়া হয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে। কিন্তু কতগুলো ইউনিট আসলে সেবা দেয়ার অবস্থায় নেই সে কথা জানানো হয় না কখনও।
নিউজবাংলা সারা দেশের বিভিন্ন জেলা সদর হাসপাতালে পাঠানো আইসিইউ ইউনিটের বিষয়ে খোঁজ নিয়ে দেখেছে, সেগুলোতে আসলে রোগীর সেবা দেয়ার মতো পরিস্থিতি নেই।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ইউনিট পাঠিয়েই দায়িত্ব শেষ করেছে। সেগুলো পরিচালনার বিষয়ে স্থানীয় পর্যায় থেকে যে চাহিদাপত্র দেয়া হয়েছে, সেগুলো পূরণ করা সম্ভব নয় বলে জানিয়ে দিয়েছে।
পরিস্থিতিটি কাজীর গরুর মতো হয়েছে। আইসিইউ কেতাবে থাকবে, কিন্তু গোয়ালে নয়।
এর আগেও এমন চিত্র দেখা গেছে হাসপাতালগুলোতে। লোকবল ছাড়া মূল্যবান বহু যন্ত্রাংশ পড়ে পড়ে নষ্ট হয়েছে। এগুলো কিনে আনতে জনগণের করের টাকার অপচয় ছাড়া আর কিছুই হয়নি।
জানতে চাইলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (হাসপাতাল ও ক্লিনিক) ফরিদ হোসেন মিয়াও বিষয়টি স্বীকার করেন। নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘সারাদেশে আইসিইউ স্থাপনের জন্য যে জনবল প্রয়োজন তার অনেক অভাব রয়েছে। আমরা অধিদপ্তর থেকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে জনবল নিয়োগ জন্য একটা চিঠি দিয়েছি। এটা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, আইসিইউ স্থাপনের জন্য হাসাপাতালগুলোতে সেন্ট্রাল অক্সিজেন লাইন অবশ্যই থাকতে হবে। অধিকাংশ হাসপাতাল পুরনো হওয়ার কারণে আইসিইউ বসানো যায় না। এটা কীভাবে সমাধান করা যায় সে বিষয় কাজ করা হচ্ছে।’
অবকাঠামোগত সংকট থাকার পরেও কেন আইসিইউ ইউনিট পাঠানো হচ্ছে- এমন প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (হাসপাতাল ও ক্লিনিক) ডা. মো. ফরিদ হোসেন মিয়া নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সারাদেশে আইসিইউ স্থাপনের জন্য যে
জনবল প্রয়োজন তার অনেক অভাব রয়েছে।
‘জনবল সংকট বিভিন্ন হাসপাতালে আইসিইউ স্থাপন করা যাচ্ছে না জানিয়ে চিঠিও আসছে। আমরা অধিদপ্তর থেকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে জনবল নিয়োগ জন্য একটা চিঠি দিয়েছি। এটা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।’
তিনি জানান, আইসিইউ স্থাপনের জন্য হাসাপাতালগুলোতে সেন্ট্রাল অক্সিজেন লাইন অবশ্যই থাকতে হবে। অধিকাংশ হাসপাতাল পুরানো হওয়ার কারণে আইসিইউ বসানো যায় না। এটা কীভাবে সমাধান করা যায় সে বিষয় কাজ করা হচ্ছে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রীর জেলায় সাত বছর ধরে তালাবদ্ধ ইউনিট
স্বাস্থ্যমন্ত্রীর জেলা মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালে আইসিইউ ইউনিটের বসেছে ২০১৪ সালের ২৯ নভেম্বর। কিন্তু টাকা খরচ ছাড়া রোগীর কোনো লাভ হয়নি।
এই ইউনিট স্থাপনের সময় জাহিদ মালেক স্বপন ছিলেন প্রতিমন্ত্রী। পরে পদোন্নতি হয়ে হয়েছেন পূর্ণ মন্ত্রী। কিন্তু তার জেলায় আইসিইউ ইউনিট চালু করার জন্য প্রয়োজনীয় লোকবল নিশ্চিত করা যায়নি।
জটিল রোগীর আইসিইউ সাপোর্ট লাগলে হাসপাতাল থেকে এখনও পাঠানো হয় রাজধানীতে।
গত বছর দেশে করোনা সংক্রমণ ধরা পড়লে মে মাসে আইসিইউ স্বল্পতার বিষয়টি সামনে আসার পর দরজা খোলা হয়। নষ্ট হয়ে যাওয়া কিছু সরঞ্জাম পাল্টে নতুন সরঞ্জামও সংযোজন করা হয়। কিন্তু চিকিৎসা হয়নি একজন রোগীরও। আবার সেই ইউনিটে ঝুলিয়ে দেয়া হয়েছে তালা।
সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক আরশাদ উল্লাহ বলেন, ‘উদ্বোধনের পর জনবলের অভাবের কারণে এখন পর্যন্ত আইসিইউয়ের কার্যক্রম শুরু করা যায়নি। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় চিকিৎসা সরঞ্জাম নষ্ট হয়ে যায়। পরে গত বছরের মে মাসে কর্নেল মালেক মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসা সরঞ্জাম দিয়ে পুনরায় আইসিইউটি ঠিক করা হয়।
‘তা ছাড়া সদর হাসপাতালে তেমন কোনো মুমূর্ষু রোগী আসে না। যেসব রোগী আসে, তাদের সাধারণ বেডে চিকিৎসা দেয়া হয়। আর যদি অবস্থা ক্রিটিক্যাল হয় তাহলে ঢাকায় পাঠানো হয়।’
সিভিল সার্জন আনোয়ারুল আমিন আখন্দ জানান, দুই শয্যার আইসিইউ ইউনিট চালাতে প্রতি শিফটে একজন করে অ্যানেসথেসিয়ার চিকিৎসক, দুইজন সিনিয়র নার্স ও দুইজন সাপোর্টিং নার্স থাকতে হবে। অর্থাৎ প্রতি ২৪ ঘণ্টায় চিকিৎসকসহ কমপক্ষে ১২ জন দক্ষ জনবল থাকতে হবে।
এই লোকবলই যখন নিশ্চিত করা যাচ্ছে না, তখন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ১০ শয্যার আইসিইউ ইউনিট স্থাপনের জন্য চাহিদাপত্র দিয়েছে।
করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আসার পর আইসিইউ নিয়ে অনেক কথাবার্তার মধ্যে বিভিন্ন জেলা শহরে পাঠানো হচ্ছে আইসিইউ শয্যা। কোথাও কোথাও ঘটা করে উদ্বোধন করছে স্থানীয় প্রশাসন। কিন্তু এই পর্যন্তই। এতে রোগীদের আদৌ কোনো লাভ হবে কি না, সে প্রশ্ন থেকেই যায়।
কোথাও নেই আইসিইউ চালানোর মতো প্রশিক্ষিত জনবল। নেই সেন্ট্রাল অক্সিজেন ব্যবস্থা, এমনকি নেই আইসিইউ বসানোর মতো দক্ষ টেকনিশিয়ান।
শয্যা পেয়ে যেসব হাসপাতাল সেগুলো চালানোর জন্য জনবল চেয়ে চিঠি দিয়েছে, সেই হাসপাতালগুলোতে না করে দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এই অবস্থায় সেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ হয়ে যাচ্ছে হতোদ্যম।
ইউনিট স্থাপনের জায়গাই নেই লক্ষ্মীপুর হাসপাতালে
লক্ষ্মীপুর জেলা হাসপাতালে গত ২২ এপ্রিল করোনা ওয়ার্ডে তিন শয্যার আইসিইউ ইউনিটের উদ্বোধন করেন লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসক আনোয়ার হোসেন আকন্দ।
এরপর আরও ১০টি শয্যা পাঠানো হয়। কিন্তু সেগুলো স্থাপনই করা যায়নি। হাসপাতালে স্থান সংকুলান না হওয়াই এর কারণ বলে জানিয়েছেন জেলার সিভিল সার্জন আবদুল গফফার।
স্থাপনের জায়গা না থাকার পরেও শয্যা পাঠানো পরিকল্পনাহীনতার প্রমাণ হিসেবেই দেখছেন চিকিৎসকরা।
আইসিইউ স্থাপনের পর এখন পর্যন্ত আট জন করোনা রোগী এই সেবা নিয়েছেন বলেও জানান সিভিল সার্জন। আইসিইউএর জন্য বিশেষায়িত চিকিৎসক, নার্স ও টেকনিশিয়ান না থাকায় সাময়িকভাবে প্রশিক্ষণহীন ডাক্তাররা এই সেবা দিয়েছেন বলে জানান তিনি।
দুই সপ্তাহ বাক্সবন্দি পটুয়াখালীরগুলো
লক্ষ্মীপুর যেদিন তিনটি আইসিইউ শয্যা স্থাপন করা হয়, একই দিন পটুয়াখালীতে পাঠানো হয় পাঁচটি। কিন্তু যেভাবে প্যাকেট করে পাঠানো হয়েছে, সেভাবেই পড়ে আছে সেগুলো।
পটুয়াখালী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে সেগুলো বসার কথা। এই হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক আবদুল মতিন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এটা ছেলের হাতের মোয়া না, বেড পাইলাম অর্ধেকটা লাইছা দিলাম ঘুমাইয়া দিই। আপনারা দূর থেকে মনে করেন সবকিছু রেডি। আসলে তা না।’
তিনি বলেন, ‘এটা বসাইতে দুই মাস সময় লাগবে। আইসিইউ বসাইলে সেন্টাল অক্সিজেন লাগবে না? সেন্টাল অক্সিজেন বসাতে দুই মাস লাগবে। আইসিইউ বেড বসানো বড় কথা না। সেন্টাল অক্সিজেন না থাকলে আমি বেড দিয়ে কী করব?’
বেড বসানোর মত জনবল বা দক্ষ কারিগর আছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে এই চিকিৎসক বলেন, ‘জনবল গভর্নমেন্ট দেবে।’
আগামী দুই মাসের মধ্যে জনবল পাবেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘তাই তো মনে হইতাছে।’
হাসপাতালে ভর্তি সোহরাব হোসেন নামে এক আইনজীবী বলেন, ‘আইসিইউ এর কথা বাদ দেন। এখানে চিকিৎসক নার্স সংকট প্রকট। হাসপাতালের মধ্যে পরিবেশ খুবই বাজে। এসব দেখবার করার দায়িত্বে যারা তারা দেখেও না দেখার ভান করছেন।’
হাসপাতালে চিকিৎসক সংকট মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। চিকিৎসক ও কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়ে ৩৬৮টি পদের মধ্যে কর্মরত আছেন ২০১ জন। ১৬৭টি পদ খালি দীর্ঘদিন ধরে।
চিকিৎসকের ৫৮টি পদের মধ্যে কর্মরত মাত্র ১১ জন। ১৭৪ জন নার্সর মধ্যে কর্মরত ১৪৪ জন।
হাসপাতালের তত্বাবধায়ক আবদুল মতিন ২৬ এপ্রিল নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আইসিইউতে ভর্তি হওয়ার মতো কোনো রোগী আমরা এখনও পাই নাই। তারপরেও হাসপাতালে সেন্টাল অক্সিজেন সিস্টেম চালুর জন্য জায়গা সিলেকশন হয়ে গেছে। দ্রুতই সেখানে কাজ শুরু হবে।’
তিনি সেদিন বলেন, ‘একে জনবল সংকট, আবার ঢাকা থেকে দক্ষ কারিগর আসার পর করোনা ইউনিট থেকে রোগীদের স্থানান্তর করতে বেশ কিছু সময় দরকার।’
দক্ষ কারিগর বা প্রয়োজনীয় জনবল না থাকার পরেও কেন এসব সরঞ্জাম চাহিদা পাঠানো হলো- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আগে তো মালামাল আনতে হয়। তারপর না হয় মিস্ত্রি। আমরা প্রয়োজনীয় জনবল চেয়েছি। আশা করি আইসিইউ এবং সেন্টাল অক্সিজেন সিস্টেমের মতো জনবলও পেয়ে যাব।’
সিভিল সার্জন জাহাঙ্গীর আলম শিপন জনবল সংকটের কথা স্বীকার করে বলেন, ‘আমরা সাধ্যমতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি রোগীদের সেবা দেয়ার জন্য।’
ভোলাকে বলা হয়েছে বরিশালের সহায়তা নিতে, কিন্তু বরিশালেরই নাই
গত ১৮ এপ্রিল ভোলা জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয় তিনটি আইসিইউ শয্যা, তিনটি ভেন্টিলেটর ও তিনটি হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানুলা।
এই হাসপাতালের কর্মীরা জানতেনই না এই শয্যা ও ভেন্টিলেটর কীভাবে চালু করতে হয়। পরে ফোনে শুনে সেগুলো বসানো হয়েছে। কিন্তু এই পর্যন্তই।
হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক সিরাজ উদ্দিন বলেন, ‘এগুলো চালানোর জন্য সার্বক্ষণিক কমপক্ষে তিন জন ডাক্তার ও তিন জন নার্স দরকার। কিন্তু আমাদের কাছে অভিজ্ঞত নার্স ও ডাক্তার না থাকায় এগুলো চালানো যাচ্ছে না।’
‘এগুলো আসার পর আমরা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে এগুলো স্থাপন ও পরিচালনার জন্য ডাক্তার, নার্স ও টেকনিশিয়ানসহ অন্যান্য জনবলের চাহিদা পাঠিয়েছি। তারা আমাদেরকে বলেছে সারা দেশেই জনবল সংকট। তাই কোনো ডাক্তার নার্স ও টেকনিশিয়ান দেয়া সম্ভব না। এগুলো স্থানীয়ভাবে স্থাপন করতে হবে’-আইসিইউ ইউনিট কীভাবে নতুন সংকট তৈরি করেছে, সেটি জানালেন এই চিকিৎসা কর্মকর্তা।
তিনি বলেন, ‘সর্বশেষ আমরা জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে এক জন এনেসথেসিওলজিস্টের জন্য বললে মন্ত্রণালয় আমাদেরকে এক জন এনেসথেসিওলজিস্ট দেয়ার কথা বলেছে। তারও কোনো খবর নেই।’
লোকবল না পেলে কীভাবে চলবে- এমন প্রশ্ন যখন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ করেছে, তখন তাদেরকে বলা হয় বরিশালের সহযোগিতা নিতে।
সিরাজ উদ্দিন বলেন, ‘আমরা বরিশাল খবর নিয়েছি। সেখানেও আইসিইউ চালানোর লোক নেই। তারা হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানুলা দিয়ে গুরুতর রোগীদের সেবা দেয়। যেটি আমরা আরও আগ থেকেই পাঁচটি হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানুলা দিয়ে রোগীদের সেবা দিচ্ছি।’
আইসিইউ বসেছে, নেই অক্সিজেন, ভেন্টিলেটর
বাগেরহাট শেখ রাজিয়া নাসের ২৫০ শয্যা হাসপাতালে তিন শয্যার একটি আইসিইউ ইউনিট উদ্বোধন করা হয় গত ২৩ এপ্রিল। বাগেরহাট-২ আসনের সংসদ সদস্য শেখ সারহান নাসের তন্ময় এর ব্যক্তিগত উদ্যোগে দেয়া এ শয্যা তিনটি হাসপাতালের করোনা ইউনিটে সংযুক্ত করা হয়।
তবে প্রশিক্ষিত জনবল ও টেকনিশিয়ানের অভাবে গত ১০ দিনেও আইসিইউ শয্যা গুলো চালু করা যায়নি।
হাসপাতালে সেন্ট্রাল অক্সিজেন সিস্টেমসহ অক্সিজেন ট্যাংক স্থাপন করা হলেও অক্সিজেনের অভাবে সেটি ফাঁকা পরে রয়েছে।
তবে বাগেরহাট স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে জরুরি প্রয়োজনে আইসিইউতে রোগীদের সেবার জন্য সকল প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।
বাগেরহাটের সিভিল সার্জন কে এম হুমায়ুন কবির বলেন, এখানে সেন্ট্রাল অক্সিজেন লাইন আছে, হাইফ্লো নেজাল ক্যানুলাসহ চিকিৎসার জন্য যা যা প্রয়োজন সবই আছে।
বর্তমানে আমাদের সব চেয়ে বেশি যে জিনিসটি প্রয়োজন সেটি হচ্ছে প্রশিক্ষিত জনবল এটা প্ররিচালনা করার জন্য। এ জন্য আমরা দুই জন চিকিৎসক ও পাঁচ জন নার্সকে খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছি। আগামী ৫ মে লকডাউন উঠে গেলে তাদেরকে প্রশিক্ষনের জন্য খুলনা পাঠানো হবে।
তবে বর্তমানে আমাদের যে এনেশথেশিয়া ডাক্তার রয়েছে তিনি এটি পরিচালনা করতে সক্ষম। প্রয়োজন হলে আমরা এখনই আইসিইউ বেডে রোগীদের চিৎসিকা দিতে পারব।
আইসিইউতে একজন রোগী চিৎকিসা নেয়ার জন্য যা যা প্রয়োজন তার সবই আছে। তবে আমাদের ভেনটিলেটর নেই, সেটা চেয়েছি।
এর আগে আমরা মন্ত্রণালয় থেকে ১০টি ভেন্টিলেটর পেয়েছি, যেগুলো মূলত আইসিইউতে ব্যবহার উপযোগী না। এটা অ্যাম্বুলেন্সে ব্যবহার উপযোগী ভেনটিলেটর। আশা করছি ভেন্টিলেটর পেয়ে গেলে আইসিইউ ইউনিটে আর কোন সমস্য থাকবে না।
রাজবাড়ীতে সম্বল আত্মবিশ্বাস
রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের দোতলায় ২০ শয্যা করোনা ইউনিটর জন্য তিন শয্যার আইসিইউ ইউনিট বসানো হয়েছে গত ১৯ এপ্রিল। কিন্তু কাউকে সেবা দেয়ার মতো অবকাঠামো নেই।
হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. দীপক কুমার বলেন, আমাদের সেন্ট্রাল অক্সিজেন লাইন এর কাজ চলছে। এটা আগামী মাসের মধ্যেই শেষ হয়ে যাবে। তবে আমাদের আইসিইউ বেড চালানোর মতো সম্পূর্ণ দক্ষ নার্স নেই। এটার জন্য আমরা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কাছে চাহিদা হিসেবে চিঠি দিয়েছি।’
হাসপাতালে চিকিৎসকের পদ রেয়েছে ৪১টি। এর মধ্যে শূন্য ২৬টি। এর মধ্যে নতুন ইউনিট সেখানে তৈরি করেছে বাড়তি চাপ।
তার পরেও সিভিল সার্জন ইব্রাহিম টিটোন দাবি করছেন, তারা রোগীদের সেবা দিতে পারবেন।
তিনি বলেন, ‘আমাদের আলাদা কোন জনবল নার্স বা ডাক্তার নেই, তবে যা আছে এইগুলো দিয়ে আমি আইসিইউ চালাতে পারব, এরা আইসিইউ চালাতে পারবে।’