দেশে ছয় জনের দেহে করোনার ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট বা ‘ডাবল মিউট্যান্ট’ ধরন শনাক্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে শনিবার বিকেল সাড়ে তিনটায় সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক নাসিমা সুলতানা।
তিনি বলেন, ‘গ্লোবাল ওয়েবসাইটে বাংলাদেশে ছয়টি ইন্ডিয়ান ভ্যারিয়েন্ট পাওয়া গেছে। চারটি কাছাকাছি মিল রয়েছে, আর দুটি নিশ্চিত পাওয়া গেছে।’
নমুনাগুলো দুটি আলাদা জায়গায় পরীক্ষা করা হয়েছে জানিয়ে নাসিমা সুলতানা বলেন, ‘একটি যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, অন্যটি আইইডিসিআরে। দুই প্রতিষ্ঠানের পরীক্ষাতেই ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট ধরা পড়েছে।’
তবে বিজ্ঞানের ভাষায় ডাবল ভ্যারিয়েন্ট বলতে কিছু নেই বলে জানালেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা। এর ব্যাখ্যায় তিনি বলেন, ‘সাংবাদিকরা ভারতের ভ্যারিয়েন্টকে ডাবল ভ্যারিয়েন্ট বলে উল্লেখ করলেও আমরা ইউকে ভ্যারিয়েন্টের মতোই ভারত ভ্যারিয়েন্টকে দেখছি।’
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে তথ্য পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই নিউজবাংলা যোগাযোগ করে যশোর জেলা স্বাস্থ্য বিভাগে। সেখানকার সিভিল সার্জন শেখ আবু শাহীন জানান, ভারতীয় ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত কোনো করোনারোগী যশোরে আছে বলে তার জানা নেই।
শাহীন বলেন, ‘ভারতীয় ভ্যারিয়েন্টে কোনো করোনা রোগী যশোরে আছে, এ সম্পর্কিত কোনো তথ্য আমার জানা নেই। আমাকে অফিসিয়ালি কিছু জানানো হয়নি। ভারত ফেরত যে ৬০ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে তারা সবাই যশোর জেনারেল হাসপাতালের করোনা ইউনিটে আছেন।’
যশোর সিভিল সার্জন অফিসের কর্মকর্তা ডা. রেনেওয়াজও একই তথ্য দিয়ে বলেন, ‘এ ধরনের কোনো তথ্য আমরা পাইনি।’
যশোর জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. দিলীপ কুমার বলেন, ‘ভারতীয় ভ্যারিয়েন্টের করোনা রোগী সংক্রান্ত কোনো তথ্য আমার কাছে নেই। ভারত থেকে আসা করোনা আক্রান্তরা করোনা ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন আছেন।’
এর আগে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এবিএম খুরশীদ আলম নিউজবাংলাকে জানিয়েছিলেন, ভারতীয় ডাবল মিউট্যান্ট করোনা ধরা পড়েছে চার জনের দেহে।
তিনি বলেন, ‘দেশে চার জনের দেহে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট পাওয়া গেছে। চার জনই ভারত থেকে করোনায় আক্রান্ত হয়ে ফিরেছেন। তারা চিকিৎসার জন্যই ভারত গিয়েছিল। তারা বর্তমানে যশোরেই অবস্থান করছে।’
দুপুরে নিউজবাংলাকে রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন জানান, দেশে ভারতের ডাবল মিউট্যান্ট ধরনের করোনা একজনের শরীরে শনাক্ত হয়েছে।
রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে এক রোগীর নমুনা পরীক্ষায় ভারতীয় ধরনটি শনাক্ত হয় জানিয়ে তিনি বলেন, জার্মান সরকারের অংশীদারত্বের ভিত্তিতে পরিচালিত গ্লোবাল ইনিশিয়েটিভ অন শেয়ারিং অল ইনফ্লুয়েঞ্জা ডাটায় (জিআইএসএইড) বিষয়টি উঠে এসেছে।
জিআইএসএইডে করোনাভাইরাসের সব ধরনের জিনোম সিকুয়েন্সের তথ্য জমা রাখা হয়।
আলমগীর বলেন, ‘এভারকেয়ার হাসপাতালে স্যাম্পল আমি দেখছি, না ধরা পড়লে তাদের সাইটে ইনফরমেশনটি আপ করত না। এ পর্যন্ত কতজনের শরীরে এই ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হয়েছে, তা বলা যাচ্ছে না।’