যুক্তরাজ্য থেকে তিনটি অক্সিজেন প্ল্যান্ট নিয়ে ভারতের উদ্দেশে রওনা দিয়েছে বিশ্বের বৃহত্তম কার্গো বিমান।
করোনাভাইরাস মহামারি মোকাবিলায় ভারতকে সহযোগিতার অংশ হিসেবে ১৮ টন ওজনের তিনটি অক্সিজেন জেনারেটর ও এক হাজার ভেন্টিলেটর পাঠানোর কথা জানিয়েছে ব্রিটিশ সরকার।
এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়, শুক্রবার নর্দার্ন আয়ারল্যান্ডের বেলফাস্ট থেকে রওনা দিয়েছে অ্যান্টোনভ ১২৪ বিমানটি। ভারতের রাজধানী দিল্লিতে স্থানীয় সময় রোববার সকাল ৮টায় এটি পৌঁছাবে।
বিমানটি আন্তর্জাতিক দাতব্য সংস্থা রেডক্রসের সহায়তায় বিভিন্ন হাসপাতালে পৌঁছে দেবে অক্সিজেন জেনারেটর ও ভেন্টিলেটরগুলো।
প্রতিটি অক্সিজেন জেনারেশন ইউনিট পণ্যবাহী ৪০ ফুট দীর্ঘ কনটেইনারের সমান। প্রতি মিনিটে একেকটি জেনারেশন ইউনিট ৫০০ লিটার করে অক্সিজেন উৎপাদন করে। এই পরিমাণ অক্সিজেন দিয়ে একই সময়ে কমপক্ষে ৫০ জন মানুষকে কৃত্রিম শ্বাসপ্রশ্বাসে সাহায্য করা সম্ভব।
ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডমিনিক রাব বলেন, ‘যুক্তরাজ্যে এই মুহূর্তে লাগছে না এমন উদ্বৃত্ত অক্সিজেন জেনারেটর ভারতে পাঠানো হয়েছে। বিভিন্ন হাসপাতালে করোনায় জীবনঝুঁকিতে থাকা অনেক মানুষের জীবন বাঁচানো এর মাধ্যমে সম্ভব হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
‘মহামারি মোকাবিলায় যুক্তরাজ্য ও ভারত একসঙ্গে কাজ করছে। প্রত্যেকের নিরাপত্তা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত আমরা কেউই নিরাপদ নই।’
এর আগেও ভারতকে ২০০ ভেন্টিলেটর ও ৪৯৫টি অক্সিজেন কনসেন্ট্রেটর পাঠিয়েছিল যুক্তরাজ্য।
মহামারির দ্বিতীয় ধাক্কায় বিপর্যস্ত ভারতে এ পর্যায়ে প্রতি ঘণ্টায় প্রাণ হারাচ্ছে করোনায় আক্রান্ত দেড় শর বেশি মানুষ। এক বছরে দেশটিতে ছোঁয়াচে এ ভাইরাসে প্রাণ হারিয়েছেন ২ লাখ ৩৮ হাজারের বেশি মানুষ। করোনা শনাক্ত হয়েছে প্রায় সোয়া দুই কোটি মানুষের দেহে।
করোনার সংক্রমণে যুক্তরাষ্ট্রের পর বিশ্বের দ্বিতীয় দেশ ভারত। প্রাণহানিতে যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রাজিলের পর তৃতীয় অবস্থানে দক্ষিণ এশিয়ার দেশটি।
ভাইরাসের সংক্রমণ দ্রুত বেড়ে যাওয়ায় ঘাটতি দেখা দিয়েছে করোনার টেস্ট কিট, ওষুধ, অক্সিজেনসহ বিভিন্ন চিকিৎসা সরঞ্জামের। রোগীর বিপরীতে স্বাস্থ্য খাতে দেখা দিয়েছে ব্যাপক লোকবল সংকট।
হাসপাতালে বেডের অপেক্ষায় থাকতে থাকতে অ্যাম্বুলেন্স ও গাড়ি পার্কিং এলাকায় মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ছেন অনেক মানুষ।
মহামারির দ্বিতীয় ধাক্কায় মৃত্যুর মিছিল কল্পনাতীতভাবে বাড়ছে। এমন অবস্থায় মরদেহের চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে বিভিন্ন শ্মশান ও কবরস্থান কর্তৃপক্ষ।