ভারতে মার্চে আবিষ্কৃত ভিন্ন বৈশিষ্ট্যের করোনাভাইরাসই দেশটিতে চলমান বিপর্যয়ের কারণ। যেসব রাজ্য মহামারির দ্বিতীয় ধাক্কা সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে, সবগুলোতেই শনাক্ত হয়েছে ‘ডবল মিউট্যান্ট’ বা বি.ওয়ান.সিক্সওয়ানসেভেন করোনাভাইরাসের বিপুল সংক্রমণ।
ভারতের জাতীয় রোগ নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রের এক কর্মকর্তার সূত্র উল্লেখ করে এ খবর জানিয়েছে বিবিসি। প্রতিবেদনে বলা হয়, মার্চে আবিষ্কৃত ভিন্ন বৈশিষ্ট্যের এ করোনার সঙ্গে বিপুল প্রাণহানি ও সংক্রমণের যোগসূত্র পাওয়া গেছে।
তবে আরও গবেষণার মাধ্যমে বিষয়টির গভীরে যাওয়ার চেষ্টা করছেন গবেষকরা।
স্বাস্থ্যবিদদের মতে, ডবল মিউটেশন’-এর হলো একই ভাইরাসে এক সঙ্গে দুই ধরনের বিবর্তন সংঘটিত হওয়া। এর ফলে মানবদেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে আরও সহজে ফাঁকি দিতে পারে ভাইরাসটি।
ভাইরাসের বাইরের এই আমিষের আবরণকে বিজ্ঞানীরা বলছেন ‘স্পাইক প্রোটিন’, যার মাধ্যমে ভাইরাসটি মানবদেহের কোষে প্রবেশ করতে পারে।
এ পর্যন্ত করোনাভাইরাসের প্রায় ১৩ হাজার নমুনার জিনোম সিকোয়েন্স করেছেন ভারতের বিজ্ঞানীরা। এর মধ্যে মহারাষ্ট্র, কর্নাটক, পশ্চিমবঙ্গ, গুজরাট ও ছত্তিশগড়সহ আটটি রাজ্যে মিলেছে সাড়ে তিন হাজারের বেশি বি.ওয়ান.সিক্সওয়ানসেভেন ভাইরাস।
বুধবার ২৪ ঘণ্টায় ভারতে রেকর্ড চার লাখ ১২ হাজারের বেশি মানুষের দেহে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত এবং তিন হাজার ৯৮০ জনের মৃত্যুর তথ্য প্রকাশ করে দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
এর আগে ভারতে মহামারির তৃতীয় ধাক্কা অবধারিত বলে হুঁশিয়ারি দেন সরকারের বিজ্ঞান বিষয়ক উপদেষ্টা ড. কে বিজয়রাঘবন। এর ফলে প্রাণহানি ও সংক্রমণ আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। যদিও থার্ড ওয়েভ কবে নাগাদ আঘাত হানতে পারে, তা এখনও অস্পষ্ট।
করোনায় প্রাণহানিতে যুক্তরাষ্ট্র, ব্রাজিল ও মেক্সিকোর পরের অবস্থান ভারতের। দেশটিতে করোনায় মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে দুই লাখ ৩৩ হাজার।
সংক্রমণ শনাক্তের দিক থেকে যুক্তরাষ্ট্রের পরে বিশ্বের দ্বিতীয় শীর্ষ দেশ ভারত। দেশটিতে এ নিয়ে ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে দুই কোটি ১৪ লাখ মানুষের দেহে।
ভাইরাসের সংক্রমণ দ্রুত বেড়ে যাওয়ায় ঘাটতি দেখা দিয়েছে করোনার টেস্ট কিট, ওষুধ, অক্সিজেনসহ বিভিন্ন চিকিৎসা সরঞ্জামের। রোগীর বিপরীতে স্বাস্থ্য খাতে দেখা দিয়েছে ব্যাপক লোকবল সংকট।