করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ মারাত্মক আকার ধারণ করলেও এর প্রভাব তেমন পড়েনি চার বিভাগে। এর মধ্যে সবচেয়ে নিরাপদ ময়মনসিংহ বিভাগ।
দেশে মোট করোনা শনাক্তের মাত্র ২.০৭ শতাংশ নবীন এই বিভাগে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নিয়মানুযায়ী, কোনো দেশ বা অঞ্চলের করোনা সংক্রমণ হার ৫ শতাংশের নিচে হলে সেখানকার করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে বলে ধরা হয়। ময়মনসিংহ বিভাগে শনাক্তের এই হার এখন অবধি ৫ শতাংশের অর্ধেকের কম।
করোনায় নিরাপদের দিক থেকে ময়মনসিংহের ঠিক পরেই রয়েছে বরিশাল বিভাগ। এই বিভাগে শনাক্তের হার ৩ দশমিক ০৩ শতাংশ। এরপর রয়েছে সিলেট বিভাগ, ৩ দশমিক ৪৫ শতাংশ এবং রংপুর বিভাগ, ৩ দশমিক ৬৫ শতাংশ।
শুরু থেকেই করোনার সংক্রমণ পরিস্থিতি সবচেয়ে বেশি ঢাকা বিভাগে। মোট সংক্রমণের অর্ধেকেরই বেশি এই বিভাগে, ৫৮ দশমিক ১৬ শতাংশ। এরপরই রয়েছে চট্টগ্রাম বিভাগ। মোট শনাক্তের ১৮.৩৫ শতাংশ রয়েছে এই বিভাগে।
করোনা পরিস্থিতি অনেকটা নিয়ন্ত্রণেই আছে খুলনা ও রাজশাহী বিভাগে। এর মধ্যে মোট শনাক্তের ৬ দশমিক ০৮ শতাংশ আছে খুলনা বিভাগে। আর রাজশাহী বিভাগে আছে ৫ দশমিক ২৩ শতাংশ।
করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ প্রথম ঢেউয়ের তুলনায় বেশি মারাত্মক রূপ ধারণ করেছে। ছবি: নিউজবাংলা
মোট শনাক্তের ৮৭ দশমিক ৮২ ভাগই চার বিভাগে- ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী ও খুলনা। বাকি ১২ দশমিক ২০ ভাগ ময়মনসিংহ, বরিশাল, সিলেট ও রংপুরে।
এ বিষয়ে বৃহস্পতিবার ভার্চুয়াল এক আলোচনা সভায় স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, ‘দেশে এই চারটি বিভাগে (ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী ও খুলনা) করোনা সংক্রমণের হার সবচেয়ে বেশি। সিটি করপোরেশন যেখানে আছে, সেখানেও সংক্রমণের হার তুলনামুলক বেশি।’
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, দেশে করোনা সংক্রমণের মোট শনাক্তের ৫৮ শতাংশই ঢাকায়। ১১ হাজারের মৃত্যুর মধ্যে ঢাকাতেই মৃত্যু হয়েছে ৭ হাজার। চট্টগ্রামে শনাক্তের হার ২০ শতাংশ। সেখানে মৃত্যু হয়েছে ২ হাজারের ওপরে। রাজশাহীতে সংক্রমণের হার ৫ শতাংশ এবং খুলনায় ৬ শতাংশ।
তিনি বলেন, দেশে মোট ১১ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ১০ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে কয়েকটি জেলায়। এই সংক্রমণ কমানোর জন্য সরকারের কাছে একটি প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।
বিভাগ অনুযায়ী করোনাভাইরাসে শনাক্তের হার। সূত্র: স্বাস্থ্য অধিদপ্তর
করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে বিধিনিষেধের অংশ হিসেবে দেশে ট্রেন, বাস ও নদীপথ বন্ধ থাকবে। বিয়েশাদির অনুষ্ঠান, পিকনিক করা যাবে না। রেস্তোরাঁয় খাওয়া যাবে না। এ ছাড়া, আগের দেয়া ১৮ দফা বহাল থাকবে।
দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে ২৪ ঘণ্টায় আরও ৪১ জনের মৃত্যু হয়েছে, যা ৩৮ দিনের মধ্যে সর্বনিম্ন।
এর চেয়ে কম মৃত্যু হয় ২৮ মার্চ। ওই দিন ৩৫ জনের মৃত্যুর খবর দিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনার সংক্রমণ ধরা পড়েছে আরও ১ হাজার ৮২২ জনের শরীরে। দেশে এ পর্যন্ত করোনা শনাক্ত হয়েছে ৭ লাখ ৬৯ হাজার ১৬০ জনের দেহে। এর মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ১১ হাজার ৭৯৬ জনের।
গত এক দিনে দেশের ৪২৮টি ল্যাবে ২১ হাজার ৫৮৫টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ৮ দশমিক ৪৪ শতাংশ।
২৪ ঘণ্টায় করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন ৩ হাজার ৬৯৮ জন। মোট সুস্থ ৭ লাখ ২ হাজার ১৬৩ জন। সুস্থতার হার ৯০.২৯ শতাংশ।