বাংলাদেশে করোনাভাইরাস প্রতিরোধী টিকা পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু করেছে চীন। এক সপ্তাহের মধ্যে টিকা দেশে পৌঁছাবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আবদুল মোমেন।
রাজধানীর মিন্টু রোডে বুধবার নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ তথ্য জানান।
পররাষ্ট্র মন্ত্রী বলেন, ‘১২ মের মধ্যে চীনা টিকার প্রথম চালান ঢাকা এসে পৌঁছবে। চীন এরই মধ্যে টিকা পাঠানোর কাজ শুরু করেছে।’
তবে ঢাকায় চীনের দূতাবাস জানিয়েছে ঈদের আগেই টিকার প্রথম চালান পাঠাবে বেইজিং।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সবশেষ তথ্য বলছে, ৪ মে পর্যন্ত দেশে করোনাভাইরাসের প্রতিরোধে টিকা দেয়া হয়েছে প্রথম ডোজ ৫৮ লাখ ১৯ হাজার ৭৫৭ জন। আর দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন ৩১ লাখ ৬ হাজার ৭০৯ জন। সব মিলিয়ে ৮৯ লাখ ২৬ হাজার ৪৬৬ ডোজ টিকা দেয়া হয়েছে। অর্থাৎ সব মিলিয়ে সরকারের হাতে এই মুহূর্তে টিকা মজুত আছে প্রায় ১৪ লাখ ডোজ। এই পরিমাণ টিকা দিয়ে টিকা কার্যক্রম চলতে পারে বড়জোর এক সপ্তাহ।
পররাষ্ট্র মন্ত্রী বলেন, ‘আমারা চেষ্টা করছি অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা আনতে। তবে এখনও কোন আপডেট নাই। অনেকে বলেছিল ইউরোপের অনেক দেশের কাছে টিকাটি আছে। তারা ব্যবহার করছেনা। এরকম মনে হয় সাতটা দেশ। আরও হয়তো দুই একটা আছে। আমরা ওইসব দেশে কন্ট্রাক্ট করে যাচ্ছি। তবে তাদের টিকার পরিমাণ খুব কম। কোন দেশের আছে ২০ হাজার। একটি দেশে আছে মনে হয় দুই লাখ। আমারতো দিনেই লাগে দুই লাখ…
‘দ্বিতীয় হলো আমেরিকা। আমেরিকা বলেছে তাদের ৬০ মিলিয়ন ডোজ অ্যাস্ট্রাজেনকো আছে। তারা ব্যবহার করছেনা। আমি সঙ্গে সঙ্গে তাদের রিকুয়েস্ট করেছি। তাদের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে কথা বলেছি। আমাদের রাষ্ট্রদূত তাদের স্টেট ডিপার্টমেন্টের সঙ্গে দেখা করে কথা বলেছে৷ তারা কমিটেড এন্ড ডিসাইডেড যে তারা আমাদের দেবে।’
পররাষ্ট্র মন্ত্রী আরও বলেন, ‘আগামীকাল যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত আসবেন দেখা করতে। হয়তো কাল আমাকে আপডেট জানাবেন। কিন্তু শুনলাম তারা নাকি দুই দেশকে প্রায়োরিটির তালিকায় রাখছে। একটা ভারত, অন্যটা ব্রাজিল। কারণ দেশ দুটিতে প্রচুর মানুষ মারা যাচ্ছে।
‘অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী ভারতীয়রা যুক্তরাষ্ট্র সরকারের ওপর খুব জোর জবরদস্তি করছে সবটিকা ইন্ডিয়াকে দেয়ার জন্য। ইন্ডিয়ান কমিউনিটি যুক্তরাষ্ট্রে অনেক শক্তিশালী। তারা গত নির্বাচনে অনেক টাকা দিয়েছে। তবে আমাদের রাষ্ট্রদূত ওয়াশিংটন জানিয়েছে, তারা টিকার সঙ্গে অক্সিজেন ও পাঠাবে।’
চীনা টিকা সম্পর্কে মন্ত্রী বলেন, ‘ঢাকার চীনা রাষ্ট্রদূত আমাকে জানিয়েছেন। তারা পাঁচ-ছয় দিনের ছুটিতে পড়ে গেছেন। লেবার ডে সহ কিকি। তিনি বলেছেন ১২ মের মধ্যে তাদের টিকা আসবে। গিফট আগে আসবে, ৫ লাখ। আমাদের স্বাস্থ্য মন্ত্রী বলেছেন ১০ তারিখ আসবে। আসলে তিনিই প্রকৃতটা জানেন।
‘আমরা কেবল টিকাটা কিনব, সেই নেগোসিয়েশন করে দেই। কতোটা, কীভাবে তা স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয় ঠিক করে। এমনকি কত দাম, ইনস্টলেশন সবই তারা ঠিক করে। আমাদের প্রধানমন্ত্রী ১০ হাজার কোটি টাকা আলাদা করে রেখেছেন। টাকার সমস্যা নাই।’