বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

মোদির আসনে করোনার ব্যাপক সংক্রমণে ক্ষোভ

  •    
  • ৪ মে, ২০২১ ০৯:৫৪

বারানসির এক রেস্তোরাঁর মালিক বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ গা-ঢাকা দিয়েছেন। তারা বারানসির মানুষকে তাদের নিজেদের ভাগ্যের হাতে ছেড়ে দিয়েছেন। বিজেপির স্থানীয় নেতারাও লুকিয়ে আছেন। তাদের ফোন বন্ধ।’

ভারতের উত্তর প্রদেশের বারানসি শহর হিন্দুধর্মাবলম্বীদের অন্যতম পবিত্র স্থান। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রতিবছর লাখ লাখ তীর্থযাত্রী শহরটিতে ভিড় করেন। সে শহরটির ওপর প্রবলভাবে আছড়ে পড়েছে করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ধাক্কা।

শহরবাসী হাসপাতালের শয্যা, ওষুধ ও অক্সিজেন সিলিন্ডার হন্যে হয়ে খুঁজছেন। তীর্থনগরী পরিণত হয়েছে হাহাকারের নগরীতে।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, করোনা চিকিৎসায় দরকারি সামগ্রী না পেয়ে বারানসির মানুষ প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ। শহরের এই দুর্দিনে এলাকার সংসদ সদস্য তথা ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি কোথায়, সে প্রশ্ন করেছেন তারা।

করোনায় সোমবার নাগাদ ভারতজুড়ে শনাক্তের সংখ্যা ছিল প্রায় দুই কোটি। ভাইরাসটিতে এখন পর্যন্ত ২ লাখ ২০ হাজারের বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছে।

দিল্লি, মহারাষ্ট্র, কেরালা, কর্ণাটকের মতো বারানসির করোনা পরিস্থিতিও ভয়াবহ বিপর্যয়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। শহরটির স্বাস্থ্যব্যবস্থা অনেকটাই ভেঙে পড়েছে।

করোনা রোগী ও তাদের স্বজনরা হাসপাতালের শয্যা, অক্সিজেন বা অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করতে পারছেন না। করোনা পরীক্ষা করাতে এক সপ্তাহ সময় লেগে যাচ্ছে। ভিটামিন, জিংক, প্যারাসিটামলের মতো সাধারণ ওষুধও গত ১০ দিন ধরে বেশির ভাগ ফার্মেসিতে নেই।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক চিকিৎসক বলেন, ‘হাসপাতালের শয্যা বা অক্সিজেনের জন্য প্রতিদিনই অনেক মানুষ সহায়তা চাইছেন। প্রাথমিক পর্যায়ের ওষুধও সংকটে থাকায় মানুষজন মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ খাচ্ছেন।

‘তাদের বক্তব্য, ওই সব ওষুধ রোগ সারাতে কম কার্যকর। তবে অন্তত কিছুটা হলেও উপকারে দেবে।’

বারানসিতে করোনা এত ছড়াল কীভাবে

নগরবাসীর অনেকের ভাষ্য, গত মার্চের দিকে প্রথম সমস্যার সৃষ্টি হয়। দিল্লি ও মুম্বাইয়ে করোনার সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে সেখানকার কর্তৃপক্ষ বিধিনিষেধ আরোপ করে। এতে ট্রেন, বাস ও ট্রাক বোঝাই করে পরিযায়ী শ্রমিকরা বারানসির আশপাশের গ্রামাঞ্চলে ফিরতে শুরু করেন।

এ ছাড়া মার্চে হোলি উৎসব উদযাপনে অনেকে বারানসিতে আসেন। পাশাপাশি ১৮ এপ্রিল গ্রাম পর্যায়ের কাউন্সিল নির্বাচনে ভোট দিতেও অনেক মানুষ শহরটিতে ভিড় জমান।

করোনার প্রাদুর্ভাবের সময় ওই নির্বাচন অনুষ্ঠিত না হওয়ার জন্য বিশেষজ্ঞদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, রাজ্যটিতে নির্বাচনি দায়িত্ব পালনকালে সাত শতাধিক শিক্ষকের মৃত্যু হয়। করোনা ছড়াতে ওই নির্বাচনও অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

করোনার ভয়াবহ পরিস্থিতি দেখে ১৯ এপ্রিল বারানসিসহ রাজ্যের আরও পাঁচ শহরে এক সপ্তাহের লকডাউনের নির্দেশ দেয় এলাহাবাদ হাইকোর্ট। তবে ‘জীবন ও জীবিকা রক্ষায়’ ওই নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টে চ্যালেঞ্জ করে উত্তর প্রদেশ সরকার।

‘মোদি গা-ঢাকা দিয়েছেন’

গঙ্গা নদী, প্রাচীন শহর বারানসি ও এর মানুষের সঙ্গে ‘বিশেষ বন্ধনের’ কথা প্রায়ই বলে থাকেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদি। কিন্তু করোনা সংক্রমণ যখন তুঙ্গে ও স্বাস্থ্যব্যবস্থা ভেঙে পড়ার মুখে, তখন নিজের আসন থেকে তিনি দূরে আছেন বলে অভিযোগ বারানসিবাসীর।

গ্রাম পর্যায়ের নির্বাচনের আগের দিন ১৭ এপ্রিল বারানসির করোনা পরিস্থিতি নিয়ে মোদির পর্যালোচনা বৈঠককে ‘প্রহসন’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন শহরটির এক রেস্তোরাঁর মালিক।

তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ গা-ঢাকা দিয়েছেন। তারা বারানসির মানুষকে তাদের নিজেদের ভাগ্যের হাতে ছেড়ে দিয়েছেন। বিজেপির স্থানীয় নেতারাও লুকিয়ে আছেন। তাদের ফোন বন্ধ।

‘এ সময় হাসপাতালের শয্যা বা অক্সিজেন সিলিন্ডার দিয়ে তাদের মানুষের পাশে থাকার কথা ছিল। কিন্তু এখানে চরম অরাজকতা চলছে। মানুষজন তাদের কর্মকাণ্ডে খুবই ক্ষুব্ধ।’

এ বিভাগের আরো খবর