বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

শুরুতে হাজারজনের ওপর পরীক্ষা চীনের টিকার

  •    
  • ২ মে, ২০২১ ০৮:১৮

যেকোনো দিন দেশে আসছে চীনের সিনোফার্ম উৎপাদিত ‘বিবিআইবিপি-করভি টিকা। তবে এটি শুরুতে অল্প কিছু ব্যক্তির ওপর প্রয়োগ করে প্রতিক্রিয়া দেখা হবে। 

ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট থেকে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা সরবরাহ অনিশ্চিত হওয়ায় চীন ও রাশিয়ার টিকা জরুরি প্রয়োগের অনুমোদন দিয়েছে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর। তবে জনগণের নিরাপত্তার স্বার্থে ঔষধ প্রশাসনের বিশেষজ্ঞ কমিটি এ অনুমোদন দিয়েছে বিশেষ শর্তে।

কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী, চীনের টিকা দেশে আসার সঙ্গে সঙ্গে গণহারে প্রয়োগ করা হবে না। টিকার কার্যাকারিতা যাচাই করতে প্রথমে এক হাজার মানুষের ওপর প্রয়োগ করা হবে।

পরে টিকার মান যাচাই ও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে কি না, তা পর্যবেক্ষণের জন্য এক সপ্তাহ টিকার কার্যক্রম বন্ধ রাখতে হবে। যদি কোনো ধরনের সমস্যা দেখা না দেয়, তাহলেই কেবল গণটিকাদান কর্মসূচি শুরু হবে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজ মিলে টিকা দেয়া হয়েছে ৮৬ লাখ ২৫ লাখ ৩৫০ ডোজ। সরকারের কাছে টিকার মোট মজুত ১ কোটি ৩ লাখ। সেই হিসাবে আর মাত্র ১৭ লাখ টিকা অবশিষ্ট রয়েছে।

প্রতিদিন গড়ে দেড় লাখের বেশি দ্বিতীয় ডোজ দেয়া হচ্ছে। সে হিসাবে সরকারের টিকার মজুত শেষ হচ্ছে আগামী সপ্তাহের মধ্যে। টিক কার্যক্রম এরপরও অব্যাহত রাখতে এ সপ্তাহের মধ্যে নতুন টিকা দেশে আসতে হবে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, বিশেষ বিমানের ব্যবস্থা হলে বেইজিং বিমানবন্দর থেকে যেকোনো দিন দেশে আসবে চীনের সিনোফার্ম উৎপাদিত ‘বিবিআইবিপি-করভি টিকা। প্রথমে উপহারের ৫ লাখ ২ হাজার ৪০০ ডোজ টিকা দেশে আসছে।

এ ছাড়া রাশিয়ার টিকা ‘স্পুৎনিক-ভি’র ৪০ লাখ ডোজ আসার কথা রয়েছে মে মাসের মধ্যে। ঔষধ প্রশাসন এটিরও অনুমোদন দিয়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক আবুল বাশার খুরশীদ আলম বলেন, ‘চীনের টিকা আমরা যেকোনো দিন পেতে পারি। এ ছাড়া মে মাসের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে আমরা ২০ লাখ ডোজ টিকা আনার চেষ্টা করছি, যাতে যারা এই টিকা নিয়েছেন, তারা যেন (দ্বিতীয় ডোজ) মিস না করেন।’

মহাপরিচালক জানান, যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়াসহ বিভিন্ন দেশের কাছে অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা রয়েছে এবং তাদের অনেকে তা ব্যবহার করেনি। তাদের কাছ থেকে এই টিকা পাওয়া যাবে কি না, এ বিষয়েও ভাবা হচ্ছে। এ ছাড়া চীন ও রাশিয়া থেকেও টিকা পাওয়ার কথা রয়েছে। টিকার সংকট হবে না।

এদিকে জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করেই চীনের টিকা প্রয়োগ করা হবে বলে আশ্বস্ত করেছেন ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মাহবুবুর রহমান।

তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বাংলাদেশে সিনোফার্মের টিকা আমদানি ও ব্যবহারের ক্ষেত্রে এখন কোনো আইনগত বাধা নেই। আমরা দুই সপ্তাহের মধ্যে হয়তো গণহারে টিকা কার্যক্রম শুরু করতে পারি।’

তিনি আরও জানান, সিরামের টিকা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে আনা হলেও চীনের টিকা দুই সরকারের মাধ্যমে আনা হবে।

দেশে টিকা উৎপাদন

স্থানীয়ভাবে করোনা টিকা উৎপাদনের বিষয়ে চিন্তাভাবনা করছে সরকার। দেশে তিনটি ওষুধ কোম্পানির টিকা উৎপাদনের সক্ষমতা আছে। একটি কোম্পানি প্রতি মাসে ৮০ লাখ ডোজ টিকা উৎপাদন করতে পারবে। কিন্তু প্রটোকল এখনও নির্ধারণ হয়নি।

ঔষধ প্রশাসনের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, যৌথ উৎপাদন শুরু হতে বেশ কয়েক মাস সময় লাগবে।

কত দামে চীনের টিকা কিনছে সরকার, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এখন দামের বিষয়টি নির্ধারণ করা হয়নি। সরকারের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় টিকা আনার কারণে দাম একটু কম পড়বে বলে আশা করছেন তিনি।

প্রথমে ট্রায়াল, তারপর গণটিকাদান

ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, ‘এ টিকার প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপের ট্রায়াল সম্পন্ন হয়েছে চীনে। তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়াল বিশ্বের পাঁচটি দেশের ৫৫ হাজার মানুষের ওপর হয়েছে। ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের পাবলিক হেলথ ইমার্জেন্সি কমিটি এ টিকার সব নথিপত্র যাচাই করেছে।

‘সার্বিক দিক বিবেচনা করে আমাদের যে কমিটি আছে, সেই কমিটি এ টিকার জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন দেয়ার জন্য সুপারিশ করেছে। সেই সুপারিশের ভিত্তিতে চীনের সিনোফার্মের এ টিকার জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছি।’

তিনি বলেন, ‘টিকা বাংলাদেশে আসার পর প্রথমে ১ হাজার মানুষের ওপর প্রয়োগ করে তাদের পর্যবেক্ষণ করা হবে। আমরা দেখব, এ টিকার সেফটি এবং এফিকেসি (কার্যকারিতা) কেমন। এরপর গণটিকাদান কার্যক্রমে সিনোফার্মের টিকা ব্যবহার করা হবে।’

‘দ্য নিউইয়র্ক টাইমস কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন ট্র্যাকার’-এর তথ্য অনুসারে, সিনোফার্ম দুই ডোজের টিকা, যা তিন সপ্তাহের ব্যবধানে নিতে হয়। এর কার্যকারিতা ৭৯ দশমিক ৩৪ শতাংশ।

সিনোফার্মের আওতাধীন বেইজিং ইনস্টিটিউট অব বায়োলজিক্যাল প্রোডাক্টস এ টিকা উৎপাদন করেছে।

টিকার বিষয়ে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজের ভাইরোলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. জাহিদুর রহমান বলেন, ‘এটি পুরাতন প্রযুক্তির একটি ইন-অ্যাকটিভেটেড টিকা। ইপিআইর মাধ্যমে প্রতিবছর কোটি কোটি ডোজ ইন-অ্যাকটিভেটেড টিকা আমাদের দেশে ব্যবহার করা হয়।

‘এ টিকা যখন পরিবহনের জন্য প্রস্তুত করা হবে, তখন চীনের পক্ষ থেকে তারিখটি জানানো হবে। পরিবহনকালীন টিকাগুলোর কোল্ড চেইন প্যাকিং বক্সে থাকবে। সেখানে এগুলো ২ থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় সংরক্ষণ করা যাবে।’

এ বিভাগের আরো খবর