ভারতের রাজধানী দিল্লির বাত্রা হাসপাতালে হঠাৎ অক্সিজেন সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় প্রাণ গেছে এক চিকিৎসকসহ কমপক্ষে ১২ জনের।
স্থানীয় সময় শনিবার দুপুর পৌনে ১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। পরে ট্যাংকারে অক্সিজেন ভরে দুপুর দেড়টার দিকে তা হাসপাতালে পাঠানো হয় বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রায় ৮০ মিনিট অক্সিজেন পাননি করোনায় আক্রান্ত মৃত্যুপথযাত্রী ২৩০ জন রোগী।
এক সপ্তাহের ব্যবধানে দ্বিতীয়বার হাসপাতালটিতে অক্সিজেনের ঘাটতির কারণে রোগীর মৃত্যু হলো।
রাজধানীতে অক্সিজেন সংকট নিয়ে প্রতিদিনই শুনানি হচ্ছে দিল্লির উচ্চ আদালতে। শনিবার শুনানির সময়ে সদ্য ঘটে যাওয়া এ মর্মান্তিক ঘটনার বিষয়ে আদালতকে জানান বাত্রা হাসপাতালের কর্মকর্তারা।
বিচারক বলেন, ‘আশা করছি কারও মৃত্যু হয়নি আজ।’
জবাবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলে, ‘মৃত্যু হয়েছে। আজ আমাদের নিজেদেরই এক চিকিৎসক মারা গেছেন।’
এর আগে বাত্রা হাসপাতালের নির্বাহী পরিচালক ড. সুধাংশু বাংকাটা সাহায্য চেয়ে একটি ভিডিওবার্তাও প্রকাশ করেছিলেন।
ভিডিওটিতে তিনি বলেছিলেন, ‘মাত্রই আমাদের মজুতকৃত অক্সিজেন শেষ হয়ে গেল। শেষ কয়েকটি সিলিন্ডার দিয়ে রোগীদের বাঁচানোর চেষ্টা চলছে। ১০ মিনিটের মধ্যে সিলিন্ডারের অক্সিজেনও শেষ হয়ে যাবে।
‘আবারও আমরা একই সংকটে পড়লাম। দিল্লি সরকার আমাদের সাহায্য করার চেষ্টা করছে। তাদের পাঠানো অক্সিজেন ট্যাংকার মাত্র হাসপাতালে পৌঁছানোর পথে রয়েছে।’
এর কয়েক মিনিট পরই দুপুর ১২টার দিকে আদালতকে এ সংকটের কথা জানায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তাদের পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘আজ সকাল ৬টা থেকে সাহায্য চাইছি আমরা। ৩০৭ জন রোগী ভর্তি আছেন আমাদের হাসপাতালে। এদের মধ্যে ২৩০ জনকেই অক্সিজেন দিতে হচ্ছে।’
অক্সিজেন সংকটে দিল্লির আরও কয়েকটি হাসপাতালে ঝুঁকিতে রয়েছেন করোনাসহ অন্যান্য রোগে আক্রান্ত বিপুলসংখ্যক রোগী।
গত ২৪ এপ্রিলও বাত্রা হাসপাতালে অক্সিজেনের মজুত শেষ হয়ে গিয়েছিল। শেষ মুহূর্তে সরকারের পক্ষ থেকে অক্সিজেন সরবরাহ শুরু হয় হাসপাতালটিতে।
ভারতের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা পিটিআইকে ড. বাংকাটা জানিয়েছেন, দিল্লি সরকারের পাঠানো অক্সিজেনে বড়জোর দেড় ঘণ্টা চলবে।
হাসপাতালটিতে অক্সিজেন সরবরাহকারীদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছে কর্তৃপক্ষ।
ভারতে এ পর্যন্ত করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে এক কোটি পৌনে ৯২ লাখ মানুষের দেহে। মৃতের সংখ্যা দুই লাখ ১২ হাজারের কাছাকাছি।
এর মধ্যে কেবল গত ২৪ ঘণ্টায় ভাইরাসটি শনাক্ত হয়েছে চার লাখের বেশি মানুষের দেহে। এ সময়ে প্রাণ গেছে তিন হাজার ৫২২ জনের।
যুক্তরাষ্ট্রের পর করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ শনাক্ত হয়েছে ভারতে। প্রাণহানির তালিকাতে যুক্তরাষ্ট্র, ব্রাজিল ও মেক্সিকোর পরের অবস্থান ভারতে।