ভারতের বাইরে টিকা উৎপাদন করতে চাইছে করোনাভাইরাস প্রতিরোধী অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ডোজ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান সিরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়া।
যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য টাইমসকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এ কথা জানান সিরামের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) আদর পুনাওয়ালা।
রাশিয়া উৎপাদিত টিকা স্পুৎনিক-ভি ও চীনের সিনোফার্মের টিকা বিবিআইবিপি-করভি বাংলাদেশে উৎপাদন করতে চুক্তি হয়েছে। শিগগিরই এ দুটি টিকা বাংলাদেশে উৎপাদন শুরু হতে পারে।
সিরাম কোন কোন দেশে তাদের টিকা উৎপাদন করবে, সে বিষয়ে কিছু জানাননি পুনাওয়ালা।
ভারতের বাইরে কবে নাগাদ টিকা উৎপাদন শুরু হতে পারে, সে বিষয়ে টাইমসকে পুনাওয়ালা বলেন, ‘আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই এ বিষয়ে ঘোষণা আসবে।’
এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়, গত সপ্তাহে আদর পুনাওয়ালা জানিয়েছিলেন, জুলাই নাগাদ সিরামের মাসিক উৎপাদন সক্ষমতা ১০ কোটি ডোজে উন্নীত করা সম্ভব হবে।
এর আগে প্রতিষ্ঠানটি মে মাসের শেষ নাগাদ এ লক্ষ্যমাত্রা পূরণের কথা বলেছিল।
সিরাম সিইওর সাক্ষাৎকারটি এমন সময়ে প্রকাশ হলো যখন ডোজের স্বল্পতা নিয়েই তৃতীয় পর্যায়ের টিকাদান শুরু করেছে ভারত। কয়েকটি রাজ্য জানিয়েছে, টিকাদান শুরুর জন্য তাদের কাছে টিকার পর্যাপ্ত মজুত নেই।
সাক্ষাৎকারে পুনাওয়ালা টাইমসকে জানান, আগামী ছয় মাসের মধ্যে সিরামের বার্ষিক টিকা উৎপাদন সক্ষমতা ২৫০ কোটি থেকে ৩০০ কোটি ডোজে উন্নীত করা যাবে বলে আশা করছেন তিনি।
ভারতে গত কিছুদিন ধরে করোনায় মৃত্যু ও শনাক্ত বাড়ছে। দেশটিতে টানা ৯ দিন দৈনিক তিন লাখের বেশি মানুষের দেহে ভাইরাসটি শনাক্ত হয়েছে।
শনিবার সকালে প্রকাশিত পরিসংখ্যান অনুযায়ী, আগের ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে ভাইরাস শনাক্ত হয় চার লাখের বেশি মানুষের দেহে। এ সময়ে মৃত্যু হয়েছে সাড়ে তিন হাজারের বেশি মানুষের।
দেশটির বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, ৩ থেকে ৫ মে করোনার সংক্রমণ সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছাতে পারে।
ভাইরাসের সংক্রমণ ও মৃত্যুর এই বৃদ্ধিতে নজিরবিহীন সংকটে পড়েছে ভারত। দেশটিকে অক্সিজেন, ওষুধসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় সামগ্রীর জন্য বাইরের দেশের দ্বারস্থ হতে হচ্ছে।
ভারতে টিকার সংকটও বেড়ে গেছে। এ অবস্থায় কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারগুলোকে চাহিদা অনুযায়ী টিকা সরবরাহে হিমশিম খাচ্ছে সিরাম।
ভারত সরকারের বিধিনিষেধের কথা বলে প্রতিষ্ঠানটি প্রতিবেশী বাংলাদেশকে চুক্তির টিকা দিতে অপারগতার কথা জানিয়েছে।
সিরামের কাছ থেকে ৩ কোটি ৪০ লাখ টিকা পাওয়ার জন্য চুক্তি করেছে বাংলাদেশ। সে টিকার ৭০ লাখ ডোজ বাংলাদেশে এসেছে। তবে ভারত সরকারের দুই দফা উপহারের ৩২ লাখ ডোজ মিলে ১ কোটি ২ লাখ ডোজ দেশে এসেছে।