করোনাভাইরাস প্রতিরোধে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা উদ্ভাবিত টিকার পাশাপাশি রাশিয়া ও চীনের টিকা জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছে বাংলাদেশ। এর মাধ্যমে প্রথম টিকার কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) অনুমোদন পাওয়া অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা কোভিশিল্ড নামে উৎপাদন করছে বিশ্বের বৃহত্তম টিকা প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান সিরাম ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়া।
গত বছরের ৩০ ডিসেম্বর অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার অনুমোদন দেয় যুক্তরাজ্য। পরে চলতি বছরের ৪ জানুয়ারি অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রেজেনেকার টিকা ভারত থেকে আমদানি ও জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন দেয় বাংলাদেশ সরকার।
বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত এই টিকাই প্রয়োগ করছে। তবে ভারত সরকারের নিষেধাজ্ঞার কারণে সিরাম আর টিকা পাঠাতে পারছে না। ফলে বাংলাদেশে টিকাদান কর্মসূচি নিয়ে তৈরি হওয়া অনিশ্চয়তার মধ্যে রাশিয়া ও চীনের টিকার অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
যুক্তরাজ্য, ভারত, ব্রাজিলসহ কয়েকটি দেশে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল চালিয়ে দেখা গেছে, এ টিকার দুই ডোজ করোনা ঠেকাতে ৯০ শতাংশ পর্যন্ত কার্যকর।
কোভিশিল্ড টিকার প্রথম ডোজ নেয়ার চার থেকে ছয় সপ্তাহের মধ্যে দ্বিতীয় ডোজ নেয়া লাগে।
বিশ্বে করোনার প্রথম টিকা হিসেবে প্রয়োগ শুরু হয় রাশিয়ায় উদ্ভাবিত স্পুৎনিক ফাইভ।
মস্কোর গামেলেয়া রিসার্চ ইনস্টিটিউট অফ এপিডারমোলজি অ্যান্ড মাইক্রোবাইয়োলজিতে তৈরি স্পুৎনিক ফাইভ ৮ সেপ্টেম্বর রাশিয়ার নাগরিকদের দেয়া শুরু হয়।
বিশ্বের ৬০টি দেশে এখন পর্যন্ত জরুরি প্রয়োজনে রাশিয়ার টিকা ব্যবহারের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। করোনার বিরুদ্ধে স্পুৎনিক ফাইভের কার্যকারিতা ৯৭ দশমিক ৬ শতাংশ। টিকার দুই ডোজ নেয়া মানুষের রোগ সংক্রমণ হারের ডাটা বিশ্লেষণ করে কার্যকারিতার এ হার পাওয়া যায়। ২১ দিনের ব্যবধানে স্পুৎনিক ফাইভ টিকার দুই ডোজ দেয়া হয়।
মঙ্গলবার রাশিয়ার স্পুৎনিক ফাইভ জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছে বাংলাদেশ। যদিও এখনও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এর অনুমোদন দেয়নি।
বৃহস্পতিবার চীনের সিনোফার্মের টিকা জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন দেয় বাংলাদেশের ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর।
আগামী মাসের শুরুতে সিনোফার্মের টিকার পাঁচ লাখ ডোজ বাংলাদেশে আসছে।
গত বছরের ৩০ ডিসেম্বর চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানি সিনোফার্মের পক্ষ থেকে বলা হয়, তাদের উদ্ভাবিত করোনার টিকা ৭৯ শতাংশ কার্যকর। টিকাটির তিন ধাপের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শেষে কার্যকারিতার এ তথ্য পাওয়া যায়।
দুই ডোজের সিনোফার্মের প্রথম ডোজ নেয়ার দুই থেকে চার সপ্তাহের মধ্যে দ্বিতীয় ডোজ নিতে হবে।
রাশিয়ার স্পুৎনিক ফাইভ ও চীনের সিনোফার্মের টিকা বাংলাদেশে উৎপাদনেরও অনুমোদন দিয়েছে দেশটির অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক স্বপন আশা করছেন, টিকা এখন রপ্তানিও করতে পারবে বাংলাদেশ।