সাধারণ সর্দির জন্য দায়ী রাইনোভাইরাস মানবদেহে এক ধরনের প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তোলে যা শ্বাসনালির কোষে থাকা সার্স-কোভ-২ (করোনাভাইরাস) ঠেকাতে পারে।
সম্প্রতি যুক্তরাজ্যভিত্তিক ভাইরোলজিবিষয়ক গবেষণা সংস্থা এমআরসি-ইউনিভার্সিটি অফ গ্লাসগো সেন্টার ফর ভাইরাস রিসার্চের (সিভিআর) গবেষণা প্রতিবেদনে এমনটাই দাবি করা হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংক্রামক রোগবিষয়ক গবেষণা সাময়িকী জার্নাল অফ ইনফেকশাস ডিজিজেজে প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, দেহে রাইনোভাইরাস ও করোনাভাইরাসের মিথস্ক্রিয়ায় পরের ভাইরাসটির সংক্রমণ কমে যায়।
মানবদেহের শ্বাসযন্ত্রে অন্যান্য ভাইরাসের চেয়ে রাইনোভাইরাস সবচেয়ে বেশি অবস্থান করে। আগের গবেষণায় দেখা যায়, রাইনোভাইরাসের সঙ্গে শ্বাসযন্ত্রের অন্যান্য ভাইরাসের মিথস্ক্রিয়া সংক্রমণের ধরন ও তীব্রতায় প্রভাব ফেলে।
ভাইরাস মানবদেহে খুব অল্পসংখ্যক কোষের ধরনের মধ্যে সংক্রমণ ঘটায়। আর শ্বাসযন্ত্রের ভাইরাস সাধারণত শ্বাসনালির কোষকেই সংক্রমিত করে।
সিভিআরের গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, পরীক্ষাগারে গবেষকেরা প্রথমে মানবদেহের শ্বাসযন্ত্রের কোষে সার্স-কোভ-২-এর সংক্রমণ ঘটান। এরপর তারা ওইসব কোষে সার্স-কোভ-২-এর পুনরুৎপাদন পরীক্ষা করেন। এ পরীক্ষা রাইনোভাইরাসের উপস্থিতি ও অনুপস্থিতি দুই ক্ষেত্রেই করা হয়।
সিভিআরের অধ্যাপক পাবলো মারসিয়া বলেন, ‘আমাদের গবেষণায় দেখা যায়, মানবদেহের শ্বাসযন্ত্রের এপিথেলিয়াল কোষে এক ধরনের সহজাত প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তোলে রাইনোভাইরাস, যা কোভিড-১৯-এর পুনরুৎপাদন আটকে দেয়।
‘এর অর্থ সাধারণ সর্দির জন্য দায়ী রাইনোভাইরাসে সৃষ্ট প্রতিরোধ ক্ষমতা সার্স- কোভ-২-এর বিরুদ্ধে কিছু ক্ষেত্রে অল্প সময়ের জন্য হলেও সুরক্ষা দেয়। এটি সার্স-কোভ-২-এর সংক্রমণ ঠেকানোর পাশাপাশি কোভিড-১৯-এর তীব্রতা কমিয়ে আনে।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের গবেষণার পরবর্তী ধাপ হচ্ছে করোনা ও রাইনোভাইরাসের পারস্পরিক মিথস্ক্রিয়ার সময় মলিকিউলার পর্যায়ে কী ঘটে, তা দেখা এবং রোগ সংক্রমণের ক্ষেত্রে এ মিথস্ক্রিয়ার প্রভাব সম্পর্কে আরও জানা। গবেষণায় প্রাপ্ত জ্ঞান আশা করি কোভিড-১৯ নিয়ন্ত্রণে ব্যবহার করা যাবে।’
মারসিয়া বলেন, ‘এ সময়ের মধ্যে করোনার বিরুদ্ধে নিজেদের সুরক্ষিত রাখতে টিকা নেয়াই সর্বোত্তম পন্থা।’