করোনাভাইরাস মহামারিতে সবার মধ্যেই রয়েছে উদ্বেগ। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পাশাপাশি নিজের শরীরের দিকে বাড়তি খেয়াল রাখার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকেরা।
কোভিড ১৯ এর যে কোনো ধরনের লক্ষণকে গুরুত্ব দেয়ার পাশাপাশি শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা নিয়মিত পরীক্ষার ওপরেও বিশেষজ্ঞরা জোর দিচ্ছেন। এজন্য অনেকের ঘরেই এখন আছে পালস অক্সিমিটার।
তবে সঠিকভাবে পালস অক্সিমিটার ব্যবহার না করলে আসতে পারে ভুল রিডিং। অনেক সময়ে এই ভুল রিডিং তৈরি করতে পারে ভয়ঙ্কর উদ্বেগ।
থার্মোমিটার যেমন শরীরের তাপমাত্রা দেখায়, ঠিক তেমনই পালস অক্সিমিটার শরীরের অক্সিজেনের মাত্রা মাপে। এই যন্ত্রে আঙুল রাখলে কিছুক্ষণের মধ্যে দুটি রিডিং দেখা যায়। একটি এসপিওটু, মানে শরীরের অক্সিজেন সম্পৃক্ততা। আর দ্বিতীয়টি পাল্স রেট।
যন্ত্রটি ঠিকভাবে কাজ করছে কিনা, সেটি বোঝার জন্য কিছু টিপস দিয়েছে ভারতের আন্দবাজার ও সিএনবিসিটিভি১৮। স্বাভাবিক অবস্থায় একজন মানুষের শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা ৯৫ থেকে ১০০ এর মধ্যে থাকে। তবে পালস অক্সিমিটারের রিডিং এর কম পেলে সঙ্গ সঙ্গে উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই। দেখতে হবে যন্ত্রটি সঠিকভাবে ব্যবহার করা হয়েছে কিনা।
অক্সিজেনের মাত্রা পরীক্ষার আগে অন্তত ৫ মিনিট শান্তভাবে বিশ্রাম নেয়া উচিত। হাতের তর্জনী অথবা মধ্যমায় পালস অক্সিমিটার বসাতে হবে।
অন্তত এক মিনিট ধরে রিডিং নেয়া উচিত, এরপর যে সংখ্যাটি ৫ সেকেন্ড ধরে স্থির অবস্থায় পাওয়া যাবে সেটিই শরীরে অক্সিজেনের প্রকৃত মাত্রা।
পরীক্ষায় অক্সিজেনের মাত্রা ৯৫ এর নিচে দেখলেও অস্থির হওয়ার কিছু নেই। একটু স্থির হয়ে বসে ৩০ সেকেন্ড পর আবার পালস অক্সিমিটারটি ব্যবহার করতে হবে।
দ্বিতীয়বারও অক্সিজেনের মাত্রা কম দেখা গেলে যন্ত্রটি নিজের আঙুল থেকে খুলে অন্য একজনের আঙুলে দিয়ে দেখতে হবে। যদি তার শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা স্বাভাবিক দেখায়, তা হলে বুঝতে হবে যন্ত্রটি ঠিক আছে। সমস্যা নিজের শরীরেই।
এরপর দেখতে হবে যে আঙুলে যন্ত্রটি ব্যবহার করা হয়ছে তাতে কোনো নেল পলিশ, মেহেদি বা ট্যাটু আছে কিনা। অনেক সময় এগুলোর কারণে যন্ত্রে ভুল রিডিং আসতে পারে।
যদি দেখা যায়, জ্বরের কারণে কাঁপুনি হচ্ছে, হাত স্থির রাখা যাচ্ছে না, তা হলেও অনেক সময় যন্ত্র সঠিকভাবে কাজ করে না। একই কারণে হাঁটাচলার সময়েও রিডিং নেয়া ঠিক নয়।
শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা কম হলে একটু হেঁটে নিতে হবে। তারপর যদি দেখা যায়, শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা কমছে, তা হলে বুঝতে হবে, যন্ত্র অকেজো।
ঘুমানোর সময়ে কারও অক্সিজেনের রিডিং নেয়া ঠিক নয়। যাদের ঘুমের সমস্যা রয়েছে বা স্বাভাবিক ভাবেই ঘুমানোর সময় শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা কমে যায়।
অনেক ধরনের রোগের ক্ষেত্রেই শরীরের অক্সিজেনের মাত্রা কম থাকতে পারে, যেমন হাঁপানির রোগী বা যারা টানা ধুমপান করেন।
অক্সিজেনের মাত্রা ৯৪ এর নীচে নেমে গেলে চিন্তার বিষয়। এর মানে হতে নিউমোনিয়া হয়েছে এবং সংক্রমণ ফুসফুসে পৌঁছে গেছে। সে ক্ষেত্রে পেটের উপর ভর দিয়ে কিছুক্ষণ শুয়ে তারপর পালস অক্সিমিটার ফের মাপতে হবে। এতে অক্সিজেনের মাত্রা বাড়তেও পারে।
তবে এবারও অক্সিজেনের মাত্রা ৯৪ এর নিচে পাওয়া গেলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।