করোনাভাইরাস প্রতিরোধে টিকা সংকট দেখা দেয়ার আগেই টিকা নিশ্চিতে রাশিয়ার পর এবার চীনের সঙ্গেও চুক্তি করতে যাচ্ছে সরকার। তাই হলে দ্রুতই দেশে আসবে দেশটির উদ্ভাবিত সিনোভ্যাক টিকা।
মহাখালীর বক্ষব্যাধি ইনস্টিটিউটে ১৫০ শয্যার করোনা ইউনিট উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এ কথা বলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
তিনি বলেন, ‘করেনা টিকা শেষ হওয়া আগেই টিকা যোগান নিশ্চিত করবে সরকার। এজন্য চীনের সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করবে সরকার। খুব অল্প সময়ের মধ্যে এই চুক্তি করা হবে। এ ছাড়া, সিরামে টিকা দ্রুত পেতে সেই দেশের সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে।’
ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউটের কাছ থেকে করোনা টিকার ৩ কোটি ডোজ কিনতে গত বছরের নভেম্বরে চুক্তি করে বাংলাদেশ। এর আওতায় দুই চালানে ৭০ লাখ ডোজ বাংলাদেশ হাতে পেয়েছে।
ভারত সরকারের দুই দফা উপহারের ৩২ লাখ ডোজ মিলে ১ কোটি ২ লাখ ডোজ টিকা আসে দেশে। এ পর্যন্ত প্রায় ৬০ লাখ মানুষ প্রথম ডোজের টিকা পেয়েছে। দ্বিতীয় ডোজ দেয়ার জন্য রাখা হয়েছে ৪২ লাখ টিকা।
বিশ্বব্যাপী করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় ভারত নিজস্ব চাহিদার কথা বিবেচনা করে সিরাম ইনস্টিটিউট উৎপাদিত অক্সফোর্ডের টিকার রপ্তানি গত ২৪ মার্চ স্থগিত করে। ভারত সরকারের এ সিদ্ধান্তের ফলে আগামী এপ্রিলের শেষ পর্যন্ত টিকা রপ্তানিতে বিলম্ব হতে পারে।
কোভ্যাক্সের আওতায় ১৮০টি দেশও সিরাম উৎপাদিত টিকা পাবে। কিন্তু রপ্তানি স্থগিত হওয়ায় এসব দেশও টিকা পাচ্ছে না। ফলে সিরামের কাছ থেকে টিকার নতুন চালান পাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।
এই সংকট কাটাতে টিকার বিকল্প উৎস খুঁজছে বাংলাদেশ। এর অংশ হিসেবে রাশিয়ার পাশাপাশি চীন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গেও যোগাযোগ করছে সরকার। এর অংশ হিসেবে আগামী মাসের শুরুর দিকে সরকার টু সরকার (জি টু জি) চুক্তির মাধ্যমে রাশিয়ার উদ্ভাবিত স্পুতনিক-ভি টিকার ৪০ লাখ ডোজ আনার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
দেশে চলমান লকডাউনের ফলে করোনার সংক্রমণও কিছুটা কমে এসেছে বলে দাবি স্বাস্থ্যমন্ত্রীর। তিনি বলেন, ‘কয়েকদিন হলো রোগীর সংখ্যা কমে আসছে। এর অনেকগুলো কারণে আছে। জনগণ সচেতন হয়েছে। মাস্ক বেশি পরছে। লকডাউনের কারণে এটা কমে আসছে। দেশে এখন করোনা রোগীর জন্য অধেক বেড ফাঁকা রয়েছে।’
প্রতিবেশী ভারতে করোনার বিস্তার লাফিয়ে বাড়ছে। প্রতিদিনই করোনা শনাক্তে বিশ্ব রেকর্ড হচ্ছে দেশটিতে। বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যাও। করোনার এই ঢেউ যাতে দেশে আঁচড়ে না পড়ে সেজন্য ভারতের সঙ্গে সীমান্ত যোগাযোগ বন্ধের সিদ্ধান্ত সীমান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানালেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
‘ভারতে ভায়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। যে কারণে ভারতে সঙ্গে আমাদের সীমান্ত বন্ধ করা হয়েছে। সেই দেশের ভাইরাস আমাদের দেশে যাতে না আসে সেই কারণে আমরা এই পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি।’
মহাখালীর বক্ষব্যাধি ইনস্টিটিউটে ১৫০ শয্যার করোনা ইউনিট প্রসঙ্গে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের পরিকল্পনা ছিল রাজধানীর বড় বড় হাসপাতগুলোতে করোনা ইনিউট করার। এইর ধারাবাহিকতায় এই করোনা ইউনিটের যাত্রা শুরু হলো।’
ভার্চুয়াল উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবুল বাশার খুরশীদ আলম।