ব্রাহ্মণবাড়িয়া ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালে এখনও বরাদ্দ হয়নি নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্র বা আইসিইউ বেড। এ কারণে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় করোনায় আক্রান্তসহ অন্যান্য গুরুতর রোগীদের দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে নেয়া হচ্ছে ঢাকায়। এতে অনেকে পথেই মারা যাচ্ছেন।জানা গেছে, এ জেলায় ৩৩ লাখ মানুষের বাস। আর করোনা মহামারি প্রাদুর্ভাবের শেষ ভরসাস্থল ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতাল। তবে সেখানে আইসিইউ না থাকায় সাধারণ অক্সিজেনের মাধ্যমে চলছে চিকিৎসাসেবা।
গুরুতর অসুস্থ ব্যক্তিদের জেলা শহর ও উপজেলার হাসপাতালগুলো থেকে পাঠানো হচ্ছে ঢাকায়। জেলায় এখনও আইসিইউর ব্যবস্থা না থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন রোগীর স্বজনসহ সচেতন নাগরিকরা।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে ঢাকায় যেতে সময় লাগে গড়ে তিন ঘণ্টা। হাসপাতালে পৌঁছানোর পর রোগীদের ভর্তিপ্রক্রিয়া শেষ হতে লাগে আরও ঘণ্টাখানেক। এ সময়ের মধ্যে অনেক রোগীর অবস্থা আরও খারাপ হয়ে পড়ে। অনেকে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের একাধিক চিকিৎসক নিউজবাংলাকে জানিয়েছেন, এ হাসপাতালে আইসিইউ ওয়ার্ড না থাকায় ন্যাজাল ক্যানোলা অক্সিজেনের মাধ্যমে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে করোনায় আক্রান্ত রোগীদের।রেড ক্রিসেন্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া ইউনিটের সাবেক কার্যকরী কমিটির সদস্য মেজবাহ উদ্দিন ইকু বলেন, ‘ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মতো একটি জেলায় আইসিইউ বেড নেই, এটি আশ্চর্যজনক। এই আইসিইউর অভাবটা পূরণ করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি।’ব্রাহ্মণবাড়িয়া সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের আহ্বায়ক আব্দুন নূর বলেন, উপজেলা থেকে একজন গুরুতর রোগীকে প্রথমে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আনা হয়। তারপর আবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতাল থেকে ঢাকায় পাঠানো হয়। এসব করতে করতেই রোগী মৃত্যুর দিকে ঢলে পড়ে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আইসিইউ বেড এখন সময়ের দাবি। আইসিইউর অভাবে ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে। জেলা শহরের আইসিইউ বেড থাকলে দ্রুত চিকিৎসার অভাবে যে রোগীগুলোর মৃত্যু হয়, তা থেকে একটু নিস্তার পাওয়া যাবে।সিভিল সার্জন কার্যালয় জানিয়েছে, ‘আইসিইউ না থাকলেও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় রয়েছে ২৫০টি আইসোলেশন বেড। আর এর মধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদরে রয়েছে ৫০টি বেড। এসব বেডে এখন পর্যন্ত প্রাতিষ্ঠানিক আইসোলেশনে করোনা রোগী ভর্তি রয়েছেন ৮ জন এবং সেলফ আইসোলেশনে করোনা রোগী রয়েছেন ৪৭৮ জন। তা ছাড়া ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় এখন পর্যন্ত ৩৫০২ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। তার মধ্যে ৫২ জনের মৃত্যু হয়েছে।’ এক প্রশ্নের জবাবে সিভিল সার্জন মোহাম্মদ একরামুল্লাহ বলেন, ‘ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আইসিইউর বেডের জন্য মন্ত্রণালয়ে আবেদন করা হয়েছে। তবে কবে নাগাদ আসবে তা বলা যাচ্ছে না।’জেলা প্রশাসক হায়াত উদ দৌলা খাঁন বলেন, ‘স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে আমরা আবেদন করেছি। দ্রুত সময়ের মধ্যে পাঁচটি আইসিইউ বেড পাব বলে আমরা আশা করি।’