করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ে পর্যুদস্ত ভারত। প্রতিদিনই হচ্ছে শনাক্তের বিশ্ব রেকর্ড। মৃত্যুর তালিকা হচ্ছে দীর্ঘ। এমন পরিস্থিতিতে দেশটির পাশে থাকার প্রস্তাব দিয়েছে প্রতিবেশী পাকিস্তান। ‘শত্রুতা’ ভুলে ইসলামাবাদ বলছে, ‘মানবতাই প্রথম’।
গত কয়েক দিন ধরে তিন লাখের বেশি মানুষের শরীরে করোনার সংক্রমণ ধরা পড়ছে ভারতে। কঠিন সংকটের মুখে দেশটির চিকিৎসা ব্যবস্থা। হাসপাতালগুলো তীব্র অক্সিজেন-সংকটে পড়েছে। খালি নেই সাধারণ ও আইসিইউ শয্যাগুলো। উপচে পড়ছে করোনার রোগী।
রাজধানী দিল্লির হাসপাতালগুলোর অবস্থা বেশি করুণ। সেখানকার প্রত্যেকটি হাসপাতাল তীব্র অক্সিজেন-সংকটে রয়েছে। মেডিক্যাল অক্সিজেনের অভাবে মৃত্যু হচ্ছে অনেকের। অন্যান্য রাজ্য থেকে অক্সিজেন নিয়ে আসার জন্য সেনাবাহিনীর বিমান ও ট্রেন মোতায়েন করেছে সরকার।
মেডিক্যাল অক্সিজেন সহায়তা পেতে আকুতি জানিয়েছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ‘দয়া করে অক্সিজেন পেতে আমাদের সহায়তা করুন।’
করোনায় নাকাল ভারতের চলমান অবস্থায় সহমর্মী পাকিস্তান। দেশটির পররাষ্ট্র দপ্তরের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, চলমান কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে ভারতের জনগণের পাশে থাকার অংশ হিসেবে ভারতকে ভেন্টিলেটর, বাইপ্যাপ, ডিজিটাল এক্স-রে মেশিন, পিপিপি ও সম্পর্কিত অন্যান্য ত্রাণসামগ্রী সরবরাহের প্রস্তাব দিয়েছে পাকিস্তান।
ত্রাণগুলো দ্রুত সরবরাহের জন্য পাকিস্তান ও ভারতের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে উপায় বের করার তাগিদ দেয়া হয়েছে বিবৃতিতে। আরও বলা হয়, এর মাধ্যমে করোনা মহামারির কারণে যেসব চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি হয়েছে তা নিরসনে পারস্পরিক সহায়তার সম্ভাব্য উপায়গুলো আরও বিকশিত হতে পারে।
চলমান পরিস্থিতিতে ভারতের পাশে দাঁড়ানো আশ্বাস দিয়ে টুইট করেছেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কুরেশি। বলেছেন, সবার আগে মানবতা।
ভারতের জনগণের সঙ্গে সংহতির ডাক দিয়েছেন পাকিস্তান প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। টুইটারে তিনি লিখেছেন, ‘কোভিড-১৯-এর ভয়াবহ ঢেউয়ে লড়াইয়ে থাকা ভারতের জনগণের প্রতি সংহতি জানাতে চাই। আমাদের প্রতিবেশী ও বিশ্বের যারা এই মহামারিতে ভুগছেন তাদের দ্রুত আরোগ্য কামনায় আমাদের দোয়া। আমাদের অবশ্যই মানবতাকে সামনে রেখে বৈশ্বিক এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে।’
ভারতের প্রতি সহমর্মিতা জানিয়ে টুইট করেছেন পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী ফাওয়াদ চৌধুরীও। তিনি লিখেছেন, ‘কঠিন এই সময়ে ভারতের জনগণের প্রতি আমাদের দোয়া রয়েছে। সৃষ্টিকর্তা তাদের প্রতি সহায় হোক, আশা করি কঠিন এই সময় দ্রুত কেটে যাবে।’
ভারতের জনগণের প্রতি সহমর্মিতা জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছেন পাকিস্তানি জনগণও।
করোনায় পাকিস্তানের অবস্থাও ভালো নয়। সংক্রমণ ও মৃত্যুর সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে। এ অবস্থায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে কঠোর হওয়ার কথা বলছে দেশটির সরকার।