বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ভারত সীমান্তে অবিলম্বে কড়াকড়ি চায় জাতীয় কমিটি

  •    
  • ২৪ এপ্রিল, ২০২১ ২২:৫৫

‘ডাবল ও ট্রিপল মিউট্যান্ট করোনা ভাইরাস বাংলাদেশে এখনো শনাক্ত হয়নি। এগুলো দেশে প্রবেশ করলে মহাবিপর্যয় দেখা দেবে। এই মিউট্যান্ট দুটির প্রবেশ ঠেকাতে হলে ভারতের সাথে বাংলাদেশের জল, স্থল বিমানপথ অনতিবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। এ ব্যাপারে অন্য কোনো বিকল্প উপায় অবলম্বন করা সম্ভব নয়।’

ভারতের সংক্রমণ ব্যাপক হারে বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি সেখানে এই ভাইরাসের নতুন ধরণ ছড়িয়ে পড়ার কারণে সীমান্তে কড়াকড়ির পরামর্শ দিয়েছে করোনা মোকাবিলায় গঠিত জাতীয় কমিটি।

কমিটির সদস্য ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য নজরুল ইসলাম খান নিউজবাংলাকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, ‘নতুন ভেরিয়েন্ট আমাদের দেশে যাতে প্রবেশ করতে না পারে, এ বিষয়ে আমাদের আলোচনা হয়েছে। আমরা ১৪ দিন প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করতে মন্ত্রণালয়কে সুপারিশ করেছি।

‘ভারতসহ অন্য দেশ থেকে যারা আসছে যাত্রীদের ১৪ দিনের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করতে পারে তাহলে অবশ্যই আমাদের দেশে এ ধরনের সংক্রমণ প্রবেশ করবে না।’

দ্বিতীয় ঢেউয়ে বাংলাদেশে করোনা ভাইরাসের যুক্তরাজ্য ও সাউথ আফ্রিকান ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়েছে বেশি। গত বছর দেশে যে ভ্যারিয়েন্ট এসেছিল তার চেয়ে এই দুই ভ্যারিয়েন্ট বেশি সংক্রামক। পাশাপাশি মানুষকে বেশি ভোগাচ্ছে, দ্রুত অক্সিজেন সাপোর্ট এমনকি আইসিইউ লাগছে।

এর মধ্যে ভারতের পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে উঠেছে। টানা তিন দিন সেখানে তিন লাখের বেশি রোগী শনাক্ত হয়েছে। যা এর আগে কখনও বিশ্বে দেখা যায়নি। শনিবার শনাক্তের সংখ্যা সাড়ে তিন লাখ ছুঁই ছুঁই হয়ে গেছে।

আক্রান্তদের মধ্যে মৃতের সংখ্যাও বাড়ছে লাফিয়ে লাফিয়ে। শনিবার ২৪ ঘণ্টায় আড়াই হাজারের বেশি মৃত্যুর কথা জানিয়েছে দেশটির স্বাস্থ্য বিভাগ।

ভারতে করোনার চিকিৎসায় অক্সিজেন সংকট প্রকট হয়েছে। বিপুল পরিমাণ রোগীর মৃত্যু হচ্ছে অক্সিজেন স্বল্পতায়

সে দেশে করোনার দুটি ভ্যারিয়েন্ট বেশি ছড়াচ্ছে, যার একটি আবার দুইবার রূপ পরিবর্তন করেছে বলে বিবিসির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।

ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের স্থল, জল, আকাশপথে যোগাযোগ সবচেয়ে বেশি। ব্যবসা, চিকিৎসা বা ভ্রমণের জন্য প্রতি বছর বাংলাদেশ থেকে সবচেয়ে বেশি লোক যায় দেশটিতে। এ কারণে করোনার ভারত ভ্যারিয়েন্ট নিয়ে শঙ্কা বেশি এখানে।

অধ্যাপক নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা বর্ডারে কড়াকড়ি করতে বলছি। আসা-যাওয়া সীমিত করতে হবে। এর মানে একেবারে প্রয়োজন ছাড়া কেউ ভ্রমণ করবেন না। কোনো রকম পর্যটন, বিনোদন বা সাধারণ কারণে যাতায়াত বন্ধ করা যেতে পারে।’

তিনি বলেন, ‘আফ্রিকার ভেরিয়েন্ট, ইউকে ভেরিয়েন্ট দ্রুত মানুষকে দুর্বল করে ফেলছে, আইসিইউ এবং অক্সিজেনের প্রয়োজন হচ্ছে। অতএব আমি বলব নতুন করে কোনো ভেরিয়েন্ট দেশে প্রবেশ না করে সেজন্য সীমান্তে নজরদারি বাড়াতে হবে।

‘ভারতের সঙ্গে যোগাযোগ যদি আমরা নিয়ন্ত্রণ না করতে পারি, সীমিত করতে না পারি এবং কোয়ারেন্টিন করতে না পারি তাহলে এটা তো ছড়িয়ে পড়বেই।’

দ্বিতীয় ঢেউয়ে বাংলাদেশেও আরও বেশি হারে ছড়িয়ে পড়ছে করোনা, মৃত্যুসংখ্যাও গত বছরের চেয়ে বেশি

ভারতের ভ্যারিয়েন্ট দেশে আসলে পরিস্থিতি ভয়াবহ হবে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য শারফুদ্দিন আহমেদও।

তিনি বলেন, ‘ভারতের ডাবল ভ্যারিয়েন্ট যাতে বাংলাদেশে প্রবেশ না করে সেজন্য এখনই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে।’

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ লেলিন চৌধুরী বলেন, ‘ডাবল ও ট্রিপল মিউট্যান্ট করোনা ভাইরাস বাংলাদেশে এখনো শনাক্ত হয়নি। এগুলো দেশে প্রবেশ করলে মহাবিপর্যয় দেখা দেবে। এই মিউট্যান্ট দুটির প্রবেশ ঠেকাতে হলে ভারতের সাথে বাংলাদেশের জল, স্থল বিমানপথ অনতিবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। এ ব্যাপারে অন্য কোনো বিকল্প উপায় অবলম্বন করা সম্ভব নয়।’

তিনি বলেন, ‘ইউকে, সাউথ আফ্রিকান ও ব্রাজিল ভ্যারিয়েন্ট বিমানবন্দর দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। আমরা সেগুলো ঠেকাতে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণে সমর্থ হইনি। ২০২০ সালে ইটালি থেকে আসা একটি ফ্লাইটের যাত্রীদের কোয়ারান্টাইনে রাখতে আমরা ব্যর্থ হয়েছিলাম। সেসব ব্যর্থতার দায় দেশকে চড়া মূল্যে পরিশোধ করতে হয়েছে এবং এখনো হচ্ছে। এবার ডাবল ও ট্রিপল মিউট্যান্ট করোনা ভাইরাসের প্রবেশ ঠেকাতে ব্যর্থ হলে, আমাদের প্রিয় স্বদেশকে মানবিক বিপর্যয়ের হাত থেকে রক্ষা করা কঠিন থেকে কঠিনতর হয়ে উঠবে।’

‘ভারতের সাথে জল,স্থল ও বিমানপথ বন্ধে আমরা যত দেরি করব, বিপদ তত বাড়বে-বলেন লেনিন চৌধুরী।

এ বিভাগের আরো খবর