বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ভারতে অক্সিজেনের হাহাকার, ক্ষুব্ধ আদালত

  • নিউজবাংলা ডেস্ক   
  • ২৪ এপ্রিল, ২০২১ ১৭:২৫

দিল্লির হলি ফ্যামিলি হাসপাতালের চিকিৎসক সুমিত রায় বিবিসিকে বলেন, ‘প্রায় সব হাসপাতালই খাদের কিনারায় চলে গেছে। অক্সিজেন শেষ হয়ে গেলে অনেক রোগীর সামনে আর কোনো পথ খোলা থাকবে না। কয়েক মিনিটের মধ্যেই তারা মারা যাবে।’

অক্সিজেন স্বল্পতায় রোগীরা মারা যাচ্ছে বলে বিশেষ বার্তা দিয়েছে ভারতের হাসপাতালগুলো।

দেশটিতে করোনাভাইরাসে শনাক্ত ও মৃতের সংখ্যার ব্যাপক ঊর্ধ্বগতির মধ্যে এমন বার্তা দেয়া হয়েছে বলে বিবিসির প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।

ভারতে গত তিন দিনে প্রায় ১০ লাখ মানুষের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। শনিবার সকালে প্রকাশিত পরিসংখ্যান অনুযায়ী, দেশটিতে আগের ২৪ ঘণ্টায় করোনা শনাক্ত হয় তিন লাখ ৪৬ হাজার ৭৮৬ জনের দেহে। এ সময়ে ভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে দুই হাজার ৬২৪ জনের।

জয়পুরের গোল্ডেন হাসপাতালে গত রাতে ২০ জনের মৃত্যু হয় বলে জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির এক কর্মকর্তা।

এমন বাস্তবতায় সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ট্রেন ও বিমানে করে করোনায় বিপর্যস্ত এলাকাগুলোতে জরুরি সামগ্রী পাঠানো হবে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) বলছে, করোনাভাইরাস কী করতে পারে, তার ‘বিধ্বংসী স্মারক’ হলো ভারতের পরিস্থিতি।

চলতি বছরের শুরুতে ভারত সরকার মনে করেছিল, তারা করোনাকে পরাস্ত করতে পেরেছে। ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝিতে নতুন করে শনাক্ত ১১ হাজারে নেমে আসে।

সে সময় টিকা রপ্তানি করছিল ভারত। দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, মহামারি মোকাবিলার আখেরি খেলায় রয়েছে ভারত।

তবে এরপর দেশটিতে নতুন করে শুরু হয় সংক্রমণ বৃদ্ধি। একদিকে করোনার নতুন ধরন, অন্যদিকে কুম্ভমেলার মতো অনুষ্ঠানে গণজমায়েতকে এ বৃদ্ধির অন্যতম কারণ মনে করা হচ্ছে।

‘রোগীরা মারা যাবে’

দিল্লির হাসপাতালগুলোর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে। সেখানকার হলি ফ্যামিলি হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রগুলো রোগীতে ঠাসা। হাসপাতালটিতে কোনো শয্যা স্থাপনের জায়গা নেই।

হাসপাতালের চিকিৎসক সুমিত রায় বিবিসিকে বলেন, ‘প্রায় সব হাসপাতালই খাদের কিনারায় চলে গেছে। অক্সিজেন শেষ হয়ে গেলে অনেক রোগীর সামনে আর কোনো পথ খোলা থাকবে না।

‘কয়েক মিনিটের মধ্যেই তারা মারা যাবে। এসব রোগীদের দিকে তাকাতে পারেন: তারা ভেন্টিলেটরে আছে, তাদের হাই-ফ্লো অক্সিজেন দরকার। অক্সিজেন বন্ধ হলে তাদের অধিকাংশ মারা যাবে।’

চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাওয়া দিল্লির মুলচাঁদ হাসপাতাল অক্সিজেনের জন্য জরুরি বার্তা পাঠিয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তাদের রোগীদের অক্সিজেন সরবরাহ ক্ষমতা কমে ৩০ মিনিটে নেমেছে। আশপাশের দিল্লির অন্য হাসপাতালগুলোরও একই অবস্থা।

অক্সিজেনের অভাবে ভারতের অনেক হাসপাতালে মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে করোনা রোগীদের চিকিৎসা। ছবি: এএফপি

মুলচাঁদ হাসপাতালে বর্তমানে করোনায় আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে ১৩৫ জন লাইফ সাপোর্টে আছে।

হাসপাতালের চিকিৎসাবিষয়ক পরিচালক মধু হানডা এনডিটিভিকে বলেন, ‘যত বেশি সম্ভব প্রাণ বাঁচানো নিশ্চিত করতে আমরা রাত্রিকালীন সব স্টাফকে কাজে রেখেছি।

‘আমরা যথাসময়ে (অক্সিজেন) সরবরাহের অপেক্ষা থাকি। কিন্তু আমাদের সৌভাগ্যের আশায় থাকতে হয় এবং এ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে গেছে; এমনটি প্রতিদিনই হচ্ছে।’

তিনি জানান, পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত হাসপাতালটি নতুন রোগী ভর্তি বন্ধ রেখেছে।

জয়পুরের গোল্ডেন হাসপাতালের এক চিকিৎসক বিবিসিকে বলেন, সরকার প্রতিষ্ঠানটির জন্য তিন দশমিক ছয় টন অক্সিজেন বরাদ্দ করেছিল, যা পৌঁছার কথা ছিল শুক্রবার বিকেল ৫টা নাগাদ। কিন্তু বরাদ্দের কিয়দংশ পৌঁছায় ওই দিন মধ্যরাতে।

হাসপাতালগুলোতে অক্সিজেন সংকটের এমন পরিস্থিতিতে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল শুক্রবার টেলিভিশনে দেয়া সরাসরি বক্তব্যে অক্সিজেন সরবরাহ নিশ্চিতে কেন্দ্রের প্রতি আকুতি জানান।

তিনি বলেন, ‘সরকারের উচিত সেনাবাহিনীর মাধ্যমে দেশের সব অক্সিজেন প্ল্যান্ট দ্রুত নিয়ন্ত্রণে নেয়া।’

একই দিন রোগীর পরিবারের সদস্যদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অক্সিজেনের জন্য কাকুতি-মিনতি করতে দেখা গেছে।

‘অক্সিজেন সরবরাহে গাফিলতিতে ফাঁসি’

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজারের প্রতিবেদনে জানানো হয়, করোনা রোগীদের অক্সিজেন সরবরাহে গাফিলতি দেখলে কেন্দ্র, রাজ্য বা স্থানীয় পর্যায়ের কোনো আমলাকেই ছেড়ে কথা বলা হবে না বলে জানিয়েছে দিল্লি হাইকোর্ট। প্রয়োজনে কর্মকর্তাদের ফাঁসিতে ঝোলানো হবে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছে আদালত।

শনিবার একটি মামলার পর্যবেক্ষণে দিল্লি হাইকোর্টের পক্ষ থেকে এসব কথা বলা হয়।

প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী কবে দিল্লিতে ৪৮০ মেট্রিক টন অক্সিজেন পৌঁছাবে, তা কেন্দ্রের কাছে স্পষ্ট করে জানতে চেয়েছে দিল্লির হাইকোর্ট।

এ বিভাগের আরো খবর