করোনা মহামারিতে হাসপাতালগুলোতে আইসিইউ ও সাধারণ শয্যা নিয়ে হাহাকারের মধ্যে আশার তথ্য দিলো স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। তাদের হিসাবে এখনও ফাঁকা রয়েছে দুইশর বেশি আইসিইউ বেড; শূন্য আছে অনেক সাধারণ শয্যাও।
বুধবার দেশের করোনাভাইরাস পরিস্থিতির সার্বিক বিষয় নিয়ে অনলাইনে স্বাস্থ্য বুলেটিন এসে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মুখপাত্র ও নন-কমিউনিকেবল ডিজিজের (এনসিডিসি) পরিচালক মোহাম্মদ রোবেদ আমিন এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ‘কোভিড চিকিৎসার জন্য আইসিইউ বেড আছে ১ হাজার পাঁচটি। ২৪৩টি বেড এখনও ফাঁকা। সব মিলিয়ে বেড সংখ্যা ১২ হাজার ১৩৯টি। এর মধ্যে রোগী ভর্তি আছে ৫ হাজার ৭৫৯টিতে। মোট বেড ফাঁকা আছে ৬ হাজার ৩৮০টি।’
রোবেদ জানান, গত বছর এই সময়ে আইসিইউ শয্যা ছিল ৩০০টি। এক বছরে সেটি বেড়েছে ৭০০ এর বেশি। কোন হাসপাতালে শয্যা ফাঁকা আছে তা আগে থেকে জেনে নিয়ে রোগী ভর্তির পরামর্শ তার।
বাংলাদেশে এখন করোনার দ্বিতীয় ঢেউ চলছে। আগের বার থেকে এবার সংক্রমণ ও মৃত্যুর সংখ্যা বেশি দেখা যাচ্ছে। গত পাঁচ দিনের মধ্যে চারদিনই মৃতের সংখ্যা ছিল শতাধিক। সংক্রমণের সংখ্যা থাকছে চার হাজারের ওপরে।
রোবেদ আমিন জানালেন, করোনার নতুন ধরন ও মিউটেশননের কারণে এই ভাইরাস ছড়াচ্ছে এতে সংক্রমণ ও মৃতু দুইটাই বেড়েছে। এখন যে মৃত্যুগুলো হচ্ছে সেগুলোর মধ্যে দুই-তিনদিন আগের শনাক্ত রোগীই বেশি।
বাংলাদেশে এখন পরীক্ষার বিপরীতে সার্বিক শনাক্তের ১৬.৮৫ শতাংশ। এ পর্যন্ত আক্রান্তদের ৮৬ শতাংশই সুস্থ হয়েছেন। বাকি ১৪ শতাংশের অনেকেই হাসপাতালে ও বাসায় চিকিৎসা নিচ্ছেন। সার্বিকভাবে বাংলাদেশে কোভিডে মৃত্যুর হার ১.৪৫ শতাংশ।
তিনি বলেন, ‘করোনা রোগীর ১০০ ভাগের ৮৬ ভাগ স্বাভাবিকভাবে ঘরে চিকিৎসার মাধ্যমে সুস্থ হয়েছে উঠছে। তার আমি বলব, বাসা থেকে চিকিৎসা নেবেন। এ ছাড়া বেশকিছু দিন ধরে সংক্রমণ ও মৃত্যু বেড়েছে। এটা নতুন ভ্যারিয়েন্টের কারণে বেড়েছে। এজন্য সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।
‘করোনা আক্রান্ত হয়ে শ্বাস কষ্ট দেখা দিলে হাসপাতালে নিতে হবে। আক্সিজেন লাগলে অক্সিজেন দিতে হবে। সঠিক সময় চিকিৎসা দিলে করোনা রোগীর জীবন বাঁচানো সম্ভব হবে।’
স্বাস্থ্য এর আগে ১৪ এপ্রিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম এক ভার্চুয়াল প্রেস ব্রিফিংয়ে বুলেটিন ফের চালু হওয়ার বিষয়টি জানিয়েছিলেন।
গত বছরের ১১ আগস্ট সবশেষ স্বাস্থ্য বুলেটিন করেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা। ওই বুলেটিনে করোনা শনাক্তকরণ পরীক্ষা, আক্রান্তের সংখ্যা, মৃত্যুর সংখ্যা, সুস্থ হওয়ার সংখ্যা, হাসপাতালে শয্যা পরিস্থিতিসহ করোনা-সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য দেয়া হতো।