ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) মার্কেটকে ২০ দিনের মধ্যে দেশের বৃহত্তম করোনা হাসপাতাল বানানো হয়েছে জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, এর আগে এমন হাসপাতাল তৈরি হয়নি।
রাজধানীর মহাখালীতে রোববার দুপুর ১২টা ২৫ মিনিটে দেশের বৃহত্তম করোনা হাসপাতাল উদ্বোধন করে তিনি এ কথা জানান।
মন্ত্রী বলেন, এই হাসপাতালে ২১২টি সম্পূর্ণ আইসিইউ বেডসহ এ ধরনের ৫০০টি বেড থাকছে। রাজধানীর সব হাসপাতালে যত আইসিইউ আছে তার চেয়ে বেশি আইসিইউ এই হাসপাতালে যুক্ত করা হয়েছে। এ কাজ ২০ দিনের মধ্যে সম্পন্ন হয়েছে।
তিনি বলেন, হাসপাতালটিতে কিডনি রোগীদের জন্য ডায়ালাইসিসেরও ব্যবস্থা থাকবে।
এ সময় ডিএনসিসির মেয়র আতিকুল ইসলাম, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবুল বাশার খুরশীদ আলম, হাসপাতালটির পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাসির উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, করোনার জন্য যেসব পরীক্ষা করা প্রয়োজন সব পরীক্ষা এখান থেকে করা যাবে।
তিনি বলেন, ‘অন্যান্য দেশের মতো এক বেডে দুইজন রোগী রাখা রাখতে হচ্ছে না। অন্য দেশের তুলনায় আমরা অনেক ভালো আছি।’
মহাখালীর ডিএনসিসি মার্কেটে চালু হওয়া দেশের বৃহত্তম করোনা হাসপাতালে আইসিইউ বেডের চিত্র। ছবি: নিউজবাংলা
সারা দেশে করোনা চিকিৎসায় নতুন করে ১২ হাজার বেড সংযুক্ত করা হয়েছে বলে জানান মন্ত্রী।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে ঢাকার সব হাসপাতালের আইসিইউ বেড পূর্ণ হয়ে গেছে। প্রতিদিনই আইসিইউয়ের চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এরকম একটি কঠিন সময়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় জরুরিভিত্তিতে ডিএনসিসির এই মার্কেটটিকে একটি পূর্ণাঙ্গ হাতপাতাল করা হয়েছে।’
হাতপাতালটিতে মোট বেড সংখ্যা এক হাজার। এর মধ্যে পূর্ণাঙ্গ আইসিইউ বেড আছে ২১২টি, এইচডিইউ বেড আছে ২৫০টি, কোভিড আইসোলেটেড রুম আছে ৪৩৮টি।
ইমাজেন্সি বেড আছে ৫০টি, যার ৩০টি পুরুষ ও ২০টি মহিলা রোগীর জন্য। এর পাশাপাশি এখানে আরটি পিসিআর ল্যাব, প্যাথলজি ল্যাব, রেডিও থেরাপি সেন্টার, এক্সরে সুবিধাসহ অন্যান্য নানাবিধ সুবিধা থাকছে বলে জানান তিনি।
বর্তমানে হাসপাতালটিতে ২৬০টি বেড সচল হচ্ছে। যেখানে আইসিইউ বেড রয়েছে ৬০টি, ইমার্জেন্সি ৫০টি, জেনারেল ওয়ার্ড ১৫০টি।
আগামী সাত দিনের মধ্যে আরও আড়াই শ বেড সচল হবে এবং এ মাসের ২৯ তারিখের মধ্যে হাসপাতালটি পরিপূর্ণভাবে সচল হবে বলেও জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
দেশের প্রতিটি হাসপাতালে কোভিড ডেডিকেটেড বেড সংখ্য বৃদ্ধি ও সেন্ট্রাল অক্সিজেন সুবিধা বৃদ্ধি করার বিষয় তুলে ধরে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বর্তমানে দেশে প্রায় ১০০টি হাসপাতালে সেন্ট্রাল অক্সিজেন ব্যাবস্থা চালু করা হয়েছে। আরো ৩৪টি হাসপাতালে চালুর কাজ চলমান।
‘এতে দেশে ১২ হাজার বেডে সেন্ট্রাল অক্সিজেন ব্যবস্থা স্থাপন করা সম্ভব হয়েছে। এসব সুবিধা কোভিড রোগীদের জীবন রক্ষায় বড় ভূমিকা রাখছে।’
উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ডিএনসিসি মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘হাসপাতালে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে প্রতিদিন। এই সময়ে এই হাসপাতালটি কিছুটা হলেও মানুষের উপকারে আসবে। সরকারি হাসপাতালে স্বল্পমূল্যে জনগণ ভালো সেবা পাবে।’
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খুরশীদ আলম বলেন, ‘আইসিইউতে মানুষের কষ্ট কী, তা আমি দেখেছি। তাই সবার প্রতি অনুরোধ, স্বাস্থ্যবিধি মেনে নিজে সুস্থ থাকুন, অন্যকে সুস্থ রাখুন।
‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে মার্কেটকে এই হাসপাতালে রূপান্তর করা হয়েছে।’