করোনাভাইরাসে ভারতে ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু ও শনাক্তের নতুন রেকর্ড হয়েছে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, দেশটিতে রোববার সকাল পর্যন্ত এক দিনে ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে দুই লাখ ৬১ হাজার ৫০০ জনের দেহে। একই সময়ে মৃত্যু হয়েছে এক হাজার ৫০১ জনের।
এ নিয়ে মহামারির এক বছরে ভারতে করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা এক লাখ ৭৭ হাজার ছাড়িয়েছে। শনাক্ত হয়েছে প্রায় দেড় কোটি মানুষ।
করোনাভাইরাসে সংক্রমণের দিক থেকে যুক্তরাষ্ট্রের পরের অবস্থানে আছে ভারত। প্রাণহানিতে যুক্তরাষ্ট্র, ব্রাজিল ও মেক্সিকোর পরই অবস্থান দেশটির।
ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় রোববার জানায়, টানা চতুর্থ দিনের মতো দুই লাখের বেশি মানুষের দেহে করোনা শনাক্ত হয়েছে।
এনডিটিভির প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, গত এক সপ্তাহে ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়েছেন ১২ লাখের বেশি ভারতীয়।
রাজ্য হিসেবে সর্বোচ্চ শনাক্ত হয়েছে মহারাষ্ট্র, উত্তর প্রদেশ, দিল্লি, কর্নাটক ও ছত্তিশগড়ে।
এর মধ্যে মহারাষ্ট্রে রেকর্ড ৬৭ হাজারের বেশি মানুষের দেহে মিলেছে করোনার উপস্থিতি। কেরালাতেও ১৩ হাজার ৮০০ জন নতুন করে শনাক্ত হয়েছে, রাজ্যটিতে দিনের হিসেবে যা এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ। এ রাজ্যে এখন পর্যন্ত টিকার আওতায় এসেছে প্রায় ১৪ শতাংশ জনগোষ্ঠী।
ভাইরাসের সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণে আনতে রাত্রিকালীন কারফিউ জারিসহ বিধিনিষেধ কঠোর করেছে বিভিন্ন রাজ্য।
এমন অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে মহামারি পরিস্থিতি পর্যালোচনায় শনিবার উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে অংশ নেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
পরে সরকারের বিবৃতিতে জানানো হয়, চলমান পরিস্থিতিতে ভারতের স্বাস্থ্য ও ফার্মাসিউটিক্যাল খাতকে পূর্ণ শক্তি ব্যবহার করার সময় এসেছে বলে বৈঠকে মন্তব্য করেন মোদি।
মহামারির ব্যাপ্তি ও দ্রুত বিস্তারের কারণে করোনার টিকার পাশাপাশি বিভিন্ন ওষুধ ও চিকিৎসা সরঞ্জামের তীব্র ঘাটতি দেখা দিয়েছে ভারতে। টিকা উৎপাদনকারী সর্ববৃহৎ দেশটি এখন করোনার টিকা আমদানির বিষয়েও ভাবছে। বড় পরিসরে আমদানি শুরু হতে পারে মেডিক্যাল অক্সিজেনও।
প্রতিবেশী বিভিন্ন দেশকে কয়েক কোটি ডোজ টিকা উপহার দিয়ে বিপাকে রয়েছে নরেন্দ্র মোদির সরকার। নিজ দেশেই পর্যাপ্ত টিকা সরবরাহ করতে না পারায় বিভিন্ন রাজ্যে বন্ধ হয়ে গেছে অস্থায়ী অনেক কেন্দ্র।
অবশ্য বৈঠকের পর টুইটারে নরেন্দ্র মোদি লেখেন, ‘গত ব্ছরের মতো এ বছরও আরও দ্রুত এবং জোরদার সমন্বয়ের মাধ্যমে মহামারি মোকাবেলা করব আমরা।’
এর আগে মহামারির মধ্যেও মাসব্যাপী কুম্ভমেলাসহ ভারতে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বিভিন্ন উৎসবে লাখ লাখ মানুষের সমাগম নিয়ে কথা বলেছেন মোদি।
তিনি বলেন, ‘এখন কেবল প্রতীকীভাবেই এসব আয়োজন করা উচিত।’
এদিকে গত সপ্তাহে সশরীরে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করে বিভিন্ন রাজ্যের অনেক স্কুল-কলেজ। এতে উদ্বেগ জানিয়েছেন পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী অমরিন্দর সিং।
দিল্লি, উত্তর প্রদেশসহ কিছু রাজ্যে শিক্ষার্থীদের ক্লাস নেয়া হচ্ছে অনলাইনে।