করোনা আক্রান্ত হয়ে যারা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন, পাঁচ দিনের মধ্যে তাদের ৪৮ শতাংশের মৃত্যু হচ্ছে বলে জানিয়েছে রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান বা আইইডিসিআর।
প্রতিষ্ঠানটি করোনার বিভিন্ন দিক নিয়ে করা একটি গবেষণার তথ্য শনিবার রাতে তাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করে।
গবেষণাটিতে দেখা গেছে, ২৮ জানুয়ারি থেকে ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত রোগীদের হাসপাতালে ভর্তির হার ছিল ৪৪ শতাংশ। মৃতদের মধ্যে ৫২ শতাংশ উপসর্গ শুরুর ৫ দিনের মধ্যেই হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। মৃত রোগীদের মধ্যে ৪৮ শতাংশ হাসপাতালে ভর্তির পাঁচ দিনের মধ্যে মারা গেছেন।
গবেষণায় উঠে এসেছে, ১৬ শতাংশ মৃত্যুবরণ করেন ভর্তির ৫-১০ দিনের মধ্যে।
গবেষণা তথ্য নেয়ার সময়টিতে নারীদের মৃত্যুহার গত বছরের চেয়ে অনেক বেড়েছে। সঙ্গে মানুষের মধ্যে মানসিক সমস্যাও বেড়েছে বলে গবেষণায় উঠে এসেছে।
গত বছরের জুলাইয়ে মাসে যখন কোভিড-১৯ সংশ্লিষ্ট মৃত্যুহার সর্বোচ্চ ছিল, সে সময় নারী-পুরুষের মৃত্যুর অনুপাত ছিল ১:৩.৫ বা ২২৬/৯৮২ জন। এ বছর এপ্রিলে এসে দেখা যাচ্ছে যে, নারী-পুরুষের মৃত্যুর অনুপাত দাঁড়িয়েছে ১:২.২৩ বা ২৬৩/৬১৪ জন। অর্থাৎ গত বছরের চেয়ে বেশি নারী এবার মৃত্যুবরণ করছেন।
রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা এ এস এম আলমগীর নিউজবাংলাকে বলেন, ৪০-৫০ শতাংশ মানুষ উপসর্গ ছাড়াই করোনা আক্রান্ত হচ্ছেন। তারা কিন্তু কথার মাধ্যমেই করোনা ছড়াচ্ছেন।
‘এ ছাড়া মহামারির বয়সও এক বছর হয়ে গেছে। সে ক্ষেত্রে অবশ্যই নতুন কিছু যুক্ত করে গাইডলাইন পরিবর্তন করা প্রয়োজন।’
তিনি বলেন, ‘শুধু বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা নয়, পৃথিবীর সব দেশেই গাইউলাইন পরিবর্তন করা উচিত। নতুন গবেষণার আলোকে এটা অবশ্যই পরিবর্তন করা দরকার।’
দেশে করোনাভাইরাস মহামারিতে মৃত্যুর কারণ নিয়মিত পর্যালোচনা করে থাকে আইইডিসিআর।
কারণ চিহ্নত করে মৃত্যু কমিয়ে আনতেই এই গবেষণা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে সরকারি সংস্থাটি।
গবেষণায় দেখা গেছে, গত মার্চে করোনায় মারা গেছে ৬৩৬ জন। ১৫ এপ্রিলের মধ্যে মৃত্যুর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়িয়েছে ৯৪১ জনে। মৃত্যুর সংখ্যার দিক থেকে এই ১৫ দিনেই ৩২.২ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
এই হিসেবে আগের বছরের তুলনায় সর্বোচ্চ মৃত্যুর হারের চেয়ে প্রতিদিন প্রায় ৫০ শতাংশ বেশি মৃত্যু হচ্ছে এ বছর।
গবেষণা ২৮ জানুয়ারি থেকে ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত ৪৪ শতাংশ রোগী হাসপাতালে ভর্তির পাশাপাশি অন্যরা প্রাতিষ্ঠানিক ও হোম আইসলেশন থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন।